
স্টাফ রিপোর্টার,সংবাদমেইল২৪.কম | বৃহস্পতিবার, ১২ জানুয়ারি ২০১৭ | প্রিন্ট
ঢাকা: আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, “আমি দৃঢ়ভাবে বলতে পারি, দেশের এবং দেশের মানুষের উন্নয়ন এবং কল্যাণের জন্য আমরা আমাদের চেষ্টার ত্রুটি করিনি।”
টানা দ্বিতীয় মেয়াদে তিন বছর পার করলো আওয়ামী লীগ সরকার। এ উপলক্ষে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষনে দেশের নানা উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের চিত্র তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, “বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সরকার টানা ৮ বছর রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পালন করে ৯ম বছরে পদার্পন করতে যাচ্ছে। আপনারা এই দীর্ঘ সময় ধরে আমাকে এবং আমার সরকারকে আপনাদের সেবায় নিয়োজত থাকার সুযোগ দিয়েছেন। এ জন্য আমি আপনাদের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।”
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আপনাদের প্রত্যাশা কতটুকু পূরণ করতে পেরেছি- সে বিচারের ভার আপনাদের উপরই রইল। তবে আমি এটুকু দৃঢ়ভাবে বলতে পারি, দেশের এবং দেশের মানুষের উন্নয়ন এবং কল্যাণের জন্য আমরা আমাদের চেষ্টার ত্রুটি করিনি।”
বিপুল জনসংখ্যার এদেশে সম্পদের পরিমাণ সীমিত উল্লেখ করে তিনি বলেন, “দীর্ঘকাল দেশে কোন আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন হয়নি। বহু সমস্যা পুঞ্জিভূত হয়ে পাহাড়-সমান হয়ে দাঁড়িয়েছিল। মোকাবিলা করতে হয়েছে অভ্যন্তরীণ বিরুদ্ধ পরিবেশ। বৈশ্বিক বৈরি অর্থনৈতিক অবস্থাও উন্নয়নের পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে বার বার।”
“কিন্তু সব বাধা-বিপত্তি অতিক্রম করে বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের মহাসড়কে। বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের সর্বজনীন মডেল। দ্রুত সময়ের মধ্যে দারিদ্র্য হ্রাসে বাংলাদেশের সাফল্যকে বিশ্বব্যাংক মডেল হিসেবে বিশ্বব্যাপী উপস্থাপন করছে।”
আট বছর আগের বাংলাদেশ আর আজকের বাংলাদেশ এক নয় বলেও দাবি করেন শেখ হাসিনা।
বক্তব্যের শুরুতে শেখ হাসিনা বলেন, “আমি গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। যিনি ২৪ বছরের দীর্ঘ রাজনৈতিক সংগ্রাম, জেল-জুলুম এবং নির্যাতন-নিপীড়ন সহ্য করে আমাদের উপহার দিয়ে গেছেন স্বাধীন-স্বার্বভৌম বাংলাদেশ।”
জেলখানায় নিহত জাতীয় চারনেতা, মহান মুক্তিযুদ্ধের ত্রিশ লাখ শহীদ, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা, স্বজন হারানো পরিবার ও একাত্তরে নির্যাতিত ২-লাখ মা-বোনের প্রতিও সমবেদনা জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন “মুক্তিযোদ্ধাদের জানাই সালাম।”
শেখ হাসিনা ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের ঘৃণ্য হত্যাকাণ্ডের শিকার মা বেগম ফজিলাতুন্নেসা মুজিব, তিন ভাই ক্যাপ্টেন শেখ কামাল, লেফটেন্যান্ট শেখ জামাল ও দশ বছরের শেখ রাসেল- কামাল ও জামালের নবপরিণীতা স্ত্রী সুলতানা ও রোজী, বঙ্গবন্ধুর একমাত্র সহোদর শেখ নাসের, বঙ্গবন্ধুর সামরিক সচিব ব্রিগেডিয়ার জামিলসহ সেই রাতের সকল শহীদ, গভীর বেদনার সঙ্গে স্মরণ করেন।
এছাড়া, ২০০৪ সালের ২১শে আগস্টের গ্রেনেড হামলায় নিহত আওয়ামী লীগ নেত্রী আইভী রহমানসহ শহীদ ২২ নেতা-কর্মী, সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এ.এম.এস কিবরিয়া, আওয়ামী লীগ নেতা আহসানউল্লাহ মাস্টার, মঞ্জুরুল ইমাম, মমতাজউদ্দিনসহ ২১ হাজার নেতাকর্মীকেও স্মরণ সম্প্রতি নিহত গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জের সংসদ সদস্য মনজুরুল ইসলাম লিটনকেও স্মরণ করেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রীর ভাষণের বড় একটি অংশজুড়ে ছিল গত আট বছরে তার নেতৃত্বাধীন সরকারের নেওয়া বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ড ও সাফল্যের তথ্য। এই পথ পাড়ি দিতে বার বার বাধার মুখে পড়ার কথাও জাতিকে মনে করিয়ে দিয়েছেন তিনি।
তিনি বলেন, “অর্থনীতি ও সামাজিক সূচকের অধিকাংশ ক্ষেত্রে আমরা দক্ষিণ এশিয়ার এবং নিম্নআয়ের দেশগুলিকে ছাড়িয়ে গেছি।”
দেশের ৮০ শতাংশ মানুষ বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় এসেছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা বলেন, “২০২১ সালের মধ্যে আমরা ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিতে চাই। সেই লক্ষ্যে ২৪ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে হবে। কয়েকটি বৃহৎ বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ কাজ শুরু করেছি।”
সংবাদমেইল২৪.কম/এনবি/এসএ/এনএস
Posted ১০:০৫ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ১২ জানুয়ারি ২০১৭
সংবাদমেইল | Nazmul Islam
.
.