স্টাফ রিপোর্টার,সংবাদমেইল২৪.কম | মঙ্গলবার, ০৫ নভেম্বর ২০১৯ | প্রিন্ট
কুলাউড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনকে ঘিরে উজ্জীবিত কুলাউড়া আ.লীগের নেতা কর্মীরা।
সম্মেলনকে সামনে রেখে উপজেলার তৃণমূল পর্যায়ে চাঙ্গা হয়ে উঠেছেন দলীয় নেতাকর্মীরা। নতুন কমিটিতে সভাপতি-সম্পাদক পদে নতুন মুখ আসছেন নাকি সাবেক কমিটির সভাপতি-সম্পাদক পদে বহাল থাকবে তা নিয়ে আলোচনা,সমালোচনা গুঞ্জনের শেষ নেই।
আগামী ১০ নভেম্বর কুলাউড়া উপজেলা আ’লীগের ত্রিবার্ষিক কাউন্সিলে সম্মেলনের উদ্বোধক হিসেবে উপস্থিত থাকবেন মৌলভীবাজার জেলা আ’লীগের সভাপতি সংসদ সদস্য নেছার আহমদ।
অনুষ্টানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন কেন্দ্রিয় আ’লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক (সিলেট বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত) আহমদ হোসেন। এছাড়াও কেন্দ্রিয়, সিলেট বিভাগ ও জেলা আ’লীগের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত থাকবেন।
১৩ টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভা নিয়ে গঠিত কুলাউড়া উপজেলা আ’লীগের সর্বশেষ কাউন্সিল ২০০৪ সালে আওয়ামী লীগের সর্বশেষ কুলাউড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের কমিটি গঠন করা হয়। এরপর কমিটির অনেক দায়িত্বশীল পদের লোকজন মারা গেছেন। আবার অনেকে প্রবাসে গেড়েছেন স্থায়ী নিবাস। ফলে বিগত কমিটির সিংহভাগ নেতাদের কোন অস্থিত্ব নেই। এরমধ্যে দলের বয়ে গেছে অনেক ঝড়ঝাপটা। একটা সময় দলীয় কোন্দলে বিপর্যস্থ ছিলো দলের অবস্থা। সমস্ত প্রতিকূলতা কাটিয়ে আওয়ামী লীগ যেন নতুন করে জেগেছে। প্রায় ১৫ বছর পর কাউন্সিল হওয়ায় তৃণমূলের নেতাকর্মীরা উৎফুল তাদের কাঙ্খিত সেই কাউন্সিলকে ঘিরে। সভাপতি-সম্পাদক পদের সম্ভাব্য প্রার্থীরা ওয়ার্ড থেকে উপজেলা পর্যন্ত দলীয় কাউন্সিলরদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে যাচ্ছেন। সম্মেলনের ০৫ দিন বাকি থাকলেও ইতিমধ্যে প্রার্থীরা স্ব স্ব পদে নিজদের প্রার্থী হিসেবে জোর তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন। সবচেয়ে বেশি প্রচারনা চলছে সম্ভাব্য প্রার্থী ও সমর্থকদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের মাধ্যমে।
কুলাউড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে ওই দিন স্থানীয় পৌর শহরের ঐতিহাসিক ডাক বাংলো মাঠে। ধীরে ধীরে মঞ্চ প্রস্তুতের কাজ চলছে। কাউন্সিলকে ঘিরে তাই পদ প্রত্যাশীরা দৌড়ঝাঁপ শুরু করে দিয়েছেন।
সভাপতি পদে সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে যাদের নাম আলোচনা রয়েছে তারা হলেন বর্তমান সভাপতি মোঃ আব্দুল মতিন,বর্তমান সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম রেনু,সহ-সভাপতি অরবিন্দু ঘোষ বিন্দু,যুক্তরাজ্য প্রবাসী আব্দুল মালিক,সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থী হিসেবে আলোচনায় রয়েছেন উপজেলা আ’লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কুলাউড়া ডিগ্রী কলেজের সাবেক ভিপি আব্দুল মুক্তাদির তোফায়েল, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক ফজলু,যুব বিষয়ক সম্পাদক সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আসম কামরুল ইসলাম,বন ও পরিবেশ সম্পাদক সফিউল আলম শফি,উপজেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি বদরুল ইসলাম বদর,জেলা শ্রমিক লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ সিপার উদ্দিন আহমদ। এছাড়াও বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান সফি আহমদ সলমান বিগত উপজেলা নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করায় কাউন্সিলে তার প্রার্থীতা নিয়ে ধোঁয়াশায় রয়েছেন তার অনুসারীরা। তবে নেতা কর্মীদের ফেসবুকে ও লোক মুখে আলোচনায় তিনি কখনো সভাপতি আবার কখনো সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী হিসেবে প্রচার করছেন।
এসবের মধ্যে মূখ্য আলোচনা হচ্ছে ‘কারা’ গুরুত্বপূর্ণ পদে স্থান পাচ্ছেন। দলের জন্য ত্যাগী, রাজনৈতিক যোগ্যতা, অতীত কর্মকান্ড, নির্যাতিত, হামলা-মামলাসহ নানাভাবে যোগ্যতা বিবেচনা করেই বিভিন্ন উপজেলা আওয়ামী লীগের কমিটিতে সভাপতি-সম্পাদকসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে আসতে পারেন যোগ্য নেতারা। এসব নিয়েই কেন্দ্র থেকে শুরু করে তৃণমূলের শীর্ষ নেতাদের মাঝেও চলছে নানা কৌশলী লবিং তদবির। তাছাড়া আওয়ামী লীগসহ অঙ্গসংগঠনের শীর্ষ নেতাদের কাছেও পদপ্রত্যাশী নেতারা ধর্ণা দিচ্ছেন বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে।
এদিকে, দীর্ঘ ১৫ বছর পর সম্মেলন হচ্ছে তাই তৃণমূল নেতাকর্মীদেরও আগ্রহের কমতি নেই। তবে দলের আদর্শচ্যুত কাউকে দলে না ভিড়িয়ে কাউন্সিলে দলীয় আদর্শে বিশ্বাসী ত্যাগী আর নিবেদিতদের স্থান দিতে আহবান জানিয়েছেন তৃণমূল কর্মীরা। তবে নতুন কমিটিতে যদি বিতর্কিত কোনো ব্যাক্তি গুরুত্বপূর্ন পদে স্থান পায় তাহলে তৃণমূল আ’লীগ তাকে বয়কট করবে বলে তারা জানান।
এছাড়া সর্বশেষ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যারা ধানের শীষের পক্ষে কাজ করেছেন, তাদের চিহ্নিত করে দলের সাথে বিশ্বাসঘাতকদের বাদ দিয়ে নিবেদিত প্রাণ কর্মীরা যাতে স্থান পায় কমিটিতে। তবে যে যাই বলুক না কেন- দলের জন্য সবচেয়ে নিবেদিত প্রাণ ও দু:সময়ের কান্ডারি কুলাউড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম রেনুর অবদানের কথা নেতাকর্মীরা স্বীকার করছেন নির্দ্বিধায়। তিনি বিগত ১৯৭৩ সাল থেকে ২৮ বছর সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দলকে নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন। দলের সভাপতি কিংবা সাধারণ সম্পাদক পদে তাকে মেনে নিতে কারো কোন দ্বিমত লক্ষ্য করা যায়নি।
Posted ৫:১৯ অপরাহ্ণ | মঙ্গলবার, ০৫ নভেম্বর ২০১৯
সংবাদমেইল | Nazmul Islam
.
.