শুক্রবার ১৯ এপ্রিল, ২০২৪ | ৬ বৈশাখ, ১৪৩১

সহকারী কেন্দ্র সচিব কর্তৃক পরীক্ষার্থীদের মানসিক হয়রানীর অভিযোগ

স্টাফ রিপোর্টার,সংবাদমেইল২৪.কম: | সোমবার, ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ | প্রিন্ট  

সহকারী কেন্দ্র সচিব কর্তৃক পরীক্ষার্থীদের মানসিক হয়রানীর অভিযোগ

চলমান মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) পরীক্ষায় কুলাউড়া কেন্দ্র-১ এর সহকারী সচিব ও কুলাউড়া বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল মতিন কর্তৃক পরীক্ষা কেন্দ্রে পরীক্ষার্থীদের বিভিন্ন ভাবে মানসিক হয়রানী ও ভয়ভীতি প্রদানের অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এসএসসি পরীক্ষার কুলাউড়া কেন্দ্র-১(নবীন চন্দ্র মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় ও কুলাউড়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়) এর সচিব মো. আমির হোসেন বরাবরে এবিষয়ে গত ১০ ফেব্রুয়ারী একটি লিখিত অভিযোগ দেন একজন শিক্ষার্থীর অভিভাবক দিপালী বেগম। এবং গত ৯ ফেব্রুয়ারী কুলাউড়া পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর ও অভিভাবক শামীম আহমদ চৌধুরী এবং আরেক অভিভাবক সাথী রাণী দেব কেন্দ্র-১ এর সচিব মো. আমির হোসেন বরাবরে লিখিত অভিযোগ করেন।


মানসিক হয়রানীর কারণে পরীক্ষা কেন্দ্রে গিয়ে এসব পরীক্ষার্থীরা অনীহা প্রকাশ করছেন বলে জানান শিক্ষার্থীর অভিভাবকরা।

জানা যায়, সিলেট শিক্ষা বোর্ডের অধীনে মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া উপজেলার কেন্দ্র-১ (নবীন চন্দ্র সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় ও কুলাউড়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়) থেকে মোট দুই হাজার এক জন শিক্ষার্থী এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করছেন। এর মধ্যে কুলাউড়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে ৮ শত ৬৫ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষা দিচ্ছে এবং নবীন চন্দ্র মডেল সরকারী উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে ১ হাজার ১৩৬ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষা দিচ্ছে।


অভিযোগ থেকে জানা গেছে, কুলাউড়া পরীক্ষা কেন্দ্র-১ এর উপকেন্দ্র কুলাউড়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে অংশ গ্রহণকারী পরীক্ষার্থীরা তাদের নিয়মিত পরীক্ষায় অংশগ্রহন করছে। এই কেন্দ্রের সহকারী কেন্দ্র সচিব ও একই প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক মো. আব্দুল মতিন এই পরীক্ষার্থীদের নানা ভাবে মানসিক হয়রানী ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করছেন।

সাবেক কাউন্সিলর শামীম আহমদ চৌধুরী তাঁর অভিযোগে উল্লেখ করেন, ‘আমার মেয়ে ওই কেন্দ্রের ১৮ নং কক্ষের একজন পরীক্ষার্থী। প্রধান শিক্ষক আব্দুল মতিন পরীক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, তোমাদের এন.সি স্কুলের শিক্ষক আমার স্কুলের পরীক্ষার্থীকে বহিষ্কার করেছেন, আমিও তোমাদের বহিষ্কার করে ছাড়বো। এমনকি দায়িত্বরত শিক্ষককে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করে কথাবার্তা বলেন। এমতাবস্থায় পরীক্ষার্থীরা পরীক্ষা দিতে ভয় পাচ্ছে এবং অনীহা প্রকাশ করছে। এছাড়াও অভিভাবক সাথী রাণী দেব বলেন, আমার মেয়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নামোল্লেখ করে উদ্দেশ্য প্রণোদিত ভাবে নানারকম কটাক্ষ ও নাজেহাল করছেন। এতে সে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। সে পরীক্ষা দিতে অনীহা প্রকাশ করছে।


এদিকে আরেক অভিভাবক দিপালী বেগম অভিযোগে উল্লেখ করেন, প্রতিদিন পরীক্ষা শেষে বাড়ি ফিরে আমার মেয়ে কান্নাকাটি করছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে বলে, আমার মেয়েকে উদ্দেশ্য করে শিক্ষক আব্দুল মতিন বলেন, তাকে বহিষ্কার করবেন, তার ঘাড় ধরে বের করে দিবেন, তারা কি করে ভালো পরীক্ষা দিবেন তিনি দেখে ছাড়বেন এমন নানা রকম ব্যাঙ্গাত্মক কথাবার্তা বলেন। শিক্ষক আব্দুল মতিন আমার মেয়েকে উদ্দেশ্য করে আরও বলেন, এই মেয়ে তোমার এতো লিখতে হবে না, তুমি তো এমনিতেই এ প্লাস পেয়ে যাবে। এরকম কথাবার্তা বলার কারনে আমার মেয়ের হাত-পা কাঁপতে থাকে। সে ভয়ে লিখতে পারে না। সে বাকি পরীক্ষা গুলো দিতে ভয় পাচ্ছে।’

পরীক্ষার্থীদের অভিাভাবক শামীম আহমদ চৌধুরী, দিপালী বেগম ও সাথী রাণী দেব মোবাইল ফোনে বলেন, আমরা আমাদের সন্তানদের পরীক্ষার ব্যাপারে শঙ্কিত রয়েছি। ইংরেজী ১ম পত্রের পরীক্ষায় কুলাউড়া বালিকা বিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে অসুদাপায় অবলম্বনের দায়ে নবীন চন্দ্র মডেল সরকারী উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে বহিষ্কার করা হয়। এরই জের ধরে এনসি স্কুলের পরীক্ষার্থীদের বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে নানাভাবে হয়রানী করছেন শিক্ষকরা।

এবিষয়ে জানতে চাইলে কেন্দ্র সচিব মো. আমির হোসেন অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, কয়েকটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। আরও অনেকগুলো মৌখিক অভিযোগ পেয়েছি। আমি বিষয়টি নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সাথে আলাচনা করবো।

কুলাউড়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আনোয়ার বলেন, অভিযোগের ব্যাপারে কোন সত্যতা পাইনি আমি। ৯ ফেব্রুয়ারি গণিত পরীক্ষার দিন প্রধান শিক্ষক মো. আব্দুল মতিন পরীক্ষা হলে যাননি। তাছাড়া তিনি কখনো পরীক্ষা হলে যাননা। আমিও ওই দিন হল পরিদর্শন করেছি।

কেন্দ্রের সহকারি সচিব হিসেবে পরিক্ষার হল পরিদর্শন উনার দায়িত্বের মধ্যে পড়ে কিনা এবিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন ‘ হ্যা এটা অবশ্যই উনার দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। এজন্য তিনি হলের বারান্দায় গিয়ে পরীক্ষার বিষয়ে খোঁজখবর নেন।’

তিনি আরো বলেন নবীন চন্দ্র সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় ও কুলাউড়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের এই দুই প্রতিষ্ঠানের মধ্যে দির্ঘদিন ধরে অভ্যন্তরীণ সমস্যা রয়েছে। বিষয়টি বেশ কয়েকবার সমাধান করা হলেও কিছুদিন পর আবার সমস্যার সৃষ্টি হয়।

কেন্দ্র সহকারী সচিব ও কুলাউড়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আব্দুল মতিন তাঁর বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগুলো অস্বীকার করেছেন।

কুলাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবুল লাইছ বলেন, এ বিষয়ে আমার কাছে কোন অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ আসলে প্রয়োজনী ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

সংবাদমেইল২৪.কম/এস এস/এনআই

Facebook Comments Box

Comments

comments

advertisement

Posted ৫:৩৪ অপরাহ্ণ | সোমবার, ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

সংবাদমেইল |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

এ বিভাগের আরও খবর

সম্পাদক ও প্রকাশক : মো. মানজুরুল হক

নির্বাহী সম্পাদক: মো. নাজমুল ইসলাম

বার্তা সম্পাদক : শরিফ আহমেদ

কার্যালয়
উপজেলা রোড, কুলাউড়া, মেলভীবাজার।
মোবাইল: ০১৭১৩৮০৫৭১৯
ই-মেইল: sangbadmail2021@gmail.com

sangbadmail@2016 কপিরাইটের সকল স্বত্ব সংরক্ষিত