ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থাগুলি চেষ্টা করছে ভ্যাকসিনের বদলে খাওয়ার উপযোগী করোনা প্রতিরোধকারী ওষুধ বাজারে আনতে। এজন্য কোমর বেঁধে গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছে ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানিগুলো।
সব কিছু ঠিক থাকলে খুব শিগগিরই বাজারে আসবে কোভিড-১৯ পিল। যদি সেটা হয়, তাহলে সাধারণ ভাইরাল জ্বরের মতো অসুখের ক্ষেত্রে যেমন ওষুধ কিনে খাওয়া যায়, তেমন ভাবেই করোনার ওষুধও বাজারে কিনতে পাওয়া যাবে। সেই চেষ্টাই চালাচ্ছেন যুক্তরাষ্ট্রের গবেষকরা। ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল।
ভ্যাকসিন নিয়ে ব্যাপক সাফল্য পাওয়া যুক্তরাষ্ট্রের ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানি ফাইজার এ গবেষণায়ও পিছিয়ে নেই। তারা দুই ধরনের অ্যান্টিভাইরাল ওষুধ নিয়ে গবেষণা চালাচ্ছে। এর মধ্যে একটি ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে শরীরে নেওয়ার। অন্যটি খাওয়ার। এই দু’টি ওষুধই সার্সের প্রতিরোধে ব্য়বহার করা হয় ২০০২ সালে। সেই ওষুধকেই এবার করোনা রোগীদের চিকিৎসাতেও ব্যবহার করতে প্রয়োজনীয় পরীক্ষা নিরীক্ষা চালাচ্ছে ফাইজার। তবে যে সব রোগীর হাসপাতালে ভরতি হওয়ার প্রয়োজন নেই, তেমন মৃদু উপসর্গের রোগীদের ক্ষেত্রেই এটি ব্যবহারের উপযোগী হবে। অক্টোবর থেকে ডিসেম্বরের মধ্যেই এই ওষুধের ট্রায়ালের ফলাফল জানা যাবে বলে মনে করা হচ্ছে। সদর্থক ফলাফল মিললে আগামী বছরের গোড়া থেকেই শুরু হয়ে যাবে এর ব্যবহার।
মার্কিন সংস্থা মেরেক ‘মলনুপিরাভির’ নামের এক অ্যান্টিভাইটাল ওষুধ নিয়ে কাজ করছে। ‘রিজব্যাক বায়োথার্পিউটিক্স’ নামের এক সংস্থার সঙ্গে হাত মিলিয়ে ওই ওষুধ তৈরি হয়েছে। সারা পৃথিবী জুড়েই ওষুধটির ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল চলছে। এমনকী, জাপানেও সেই ট্রায়াল চালানো হচ্ছে। আশা করা হচ্ছে, অক্টোবরের মধ্যেই ট্রায়ালের চূড়ান্ত ফলাফল জানা যাবে। শেষ পর্যন্ত পরীক্ষা সফল হলেই মিলতে পারে ছাড়পত্র। সংস্থার আশা, বছরের শেষেই আপৎকালীন ব্যবহার শুরু হয়ে যাবে এই ওষুধের। তার মাসখানেকের মধ্যে জাপানেও শুরু হয়ে যেতে পারে তার ব্যবহার।
১ অক্টোবর শুক্রবার সংস্থাটির তরফ থেকে জানানো হয়েছে, তাদের তৈরি মুখে খাওয়ার ওষুধ মলনুপিরাভির কোভিড আক্রান্তদের মৃত্যুর হার ৫০ শতাংশ কমিয়ে আনতে পারছে বলে পরীক্ষামূলক প্রয়োগে দেখেছেন তারা। এছাড়া ওই ওষুধ কোভিড আক্রান্তদের হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়ার হার কমিয়ে দেওয়ার ব্যাপারেও সাফল্য পেয়েছে মেরেক।
অংশীদার প্রতিষ্ঠান রিজব্যাকের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রে এ ওষুধের জরুরি ব্যবহারের অনুমতি চাওয়া হবে বলে জানিয়েছে মেরেক। মলনুপিরাভিরের জরুরি ব্যবহারের জন্য অন্যান্য দেশের ওষুধ নিয়ন্ত্রণক সংস্থার কাছেও অনুমতি চাইবে মেরেক ও রিজব্যাক বায়োথেরাপিউটিকস। অনুমোদন পেলে এটাই হবে কোভিড চিকিৎসায় প্রথম অনুমোদিত মুখে খাওয়ার ওষুধ। একে করোনা মহামারি রোধে একটি গুরুত্বপূর্ণ সাফল্য হিসেবে দেখা হচ্ছে। পরীক্ষামূলক প্রয়োগে সাফল্য পাওয়ার পর ওই ওষুধের তৃতীয় পর্যায়ের ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের সমাপ্তি ঘোষণা করেছে মেরেক ও রিজব্যাক।
এদিকে জাপানি সংস্থা শিওঙ্গি গত জুলাই থেকেই শুরু করে দিয়েছে করোনাভাইরাস পিলের প্রথম দফার ট্রায়াল। তবে সব ট্রায়াল চালিয়ে প্রয়োজনীয় ছাড়পত্র পেয়ে বাজারে এই ওষুধ আনতে আনতে ২০২২ সালের শেষদিক পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে বলেই জানা যাচ্ছে।
Comments
comments
Posted ৯:৩৩ অপরাহ্ণ | শুক্রবার, ০১ অক্টোবর ২০২১
সংবাদমেইল | Nazmul Islam