আব্বা! আমার মাশুক! তুমি আমাকে এই পৃথিবীতে সবার প্রথম সবচেয়ে অনবদ্য অমূল্য উপহার দিয়েছো। তুমি আমাকে এই পৃথিবীর বুকে মা হিসেবে পরিচয় করিয়ে দিয়েছো।মা ডাক সবার প্রথম তোমার মুখেই শুনি।
দেবশিশু তুল্য তোমাকে হাসপাতালে যখন নার্স আমার কাছে দিয়ে গেলেন তখন এই বালিকা মায়ের বিশ্বাসই হচ্ছিলো না এই তুলার বল আমার একান্ত!
আমি তো কখনো এমন কল্পনায় আঁকিনি কিছু কিন্তু স্রষ্টা না চাইতেই তোমাকে আমার করে আমার বুকে দিলেন আলহামদুলিল্লাহ।
আব্বা, খুব অল্প বয়সী ছিলাম বলে আমি মা হিসেবে তোমাকে তেমন যত্ন করতে পারিনি! আবার যখন তুমি স্কুলে পড়া বালক তখনও তোমার যত্ন নিতে পারিনি।
তুমি বড় হয়েছো তোমার দাদাদাদী নানানানী বড়চাচাচাচীর কাছে। আর অসম্ভব সৌন্দর্যের কারণে কেউ বিশ্বাস করতো না তুমি আমার সন্তান! সবাই ভাবতো তুমি তোমার অসম্ভব সুন্দর বড় চাচীর সন্তান এবং আমার সামনেই এই নিষ্ঠুরতম বাক্য বারবার অবুঝ আগন্তুকদের দ্বারা উচ্চারিত হতো! আমি মন খারাপ করে তোমাকে বুকে নিয়ে কাঁদতাম আর ভাবতাম শ্যামলা মায়ের কোলে দেবশিশু আসতে পারে অবশ্যই যদি স্রষ্টা ইচ্ছা করেন! এই অধ্যায়টি আমার জন্য খুবই কষ্টদায়ক ছিলো যা হয়তো তোমার অজানা।
তুমি কখনও আমাকে দরকার মতো সেভাবে কাছে পাওনি, তার জন্য মন খারাপ করেছো কিনা কখনও শুনিনি, তবে আমার অনেক মন খারাপ হয়েছে। কিন্তু এই গানের ক্যারিয়ারের জন্য, আমার জন্য, শুধু তুমি নও,তোমার বাবা,তুমি, ফারিয়া সবাই আসলে তোমাদের জীবন উৎসর্গ করেছো তার বদলে কখনও অভিযোগ করোনি, কিন্তু আমার আত্মগ্লানি! সেই আত্মগ্লানি থেকে আমার রেহাই কই বাবা!এক দন্ডও আমি স্বস্তি পাইনা এসব ভেবে। মনে হয় আরেকটি জীবন পেতাম তাহলে অন্য ভালো ভালো মায়েদের মতো প্রতিটি মুহূর্ত তোমাকে, তোমাদের বুকে করে রাখতাম!
তারপর ও জেনো আমি আসলে তোমাদের সাথে, তোমাদের জন্য, তোমাদের কাছেই আছি।
আমার সবসময়ের দোয়া তোমার, তোমাদের জন্য অবিরাম। দূর বিদেশে সফরকালীন সময়ে পুরোটা সময় আমি তোমাদের জন্যই অনবরত দোয়া করতে থাকি বাবা।এতে আমার কোন ক্লান্তি নাই।
আল্লাহ তোমাকে, তোমার পুরো পরিবারকে অনেক সুখী করুন। আমি তোমাকে এতো ভালোবাসি যেমন ভালোবাসি আমার আব্বাকে।দোয়া করি আমার আব্বা হয়ে ওঠো।তোমার কন্যা খাদিজা, আমিনাকে তাদের নামের জন্য মর্যাদাময় ব্যাক্তি হিসেবে গড়ে তোলো।
এটাই এখন তোমার একমাত্র ব্রত!
শুভজীবন মাশুক।