বিশেষ প্রতিনিধি,সংবাদমেইল২৪.কম | সোমবার, ২০ মে ২০১৯ | প্রিন্ট
উদ্ভোধনের ৯মাস অতিবাহিত হলেও কুলাউড়া-শাহবাজপুর রেললাইনের পুনর্নির্মাণ কাজের গতি মন্তর। নির্মাণ কাজের অগ্রগতি সরেজমিনে পরিদর্শনে এসে কাজের ধীর গতি দেখে ক্ষোভ ও অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশস্থ ভারতীয় হাই কমিশনার রিভা গাঙ্গুলি দাস। তিনি রোববার বিকেলে এ প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন করেন। এসময় নির্মাণ কাজের ভারতীয় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কালিন্দীর স্থানীয় ও উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
জানা গেছে, ২০০২ সালে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়া কুলাউড়া-শাহবাজপুর রেললাইন পুনঃস্থাপনের জন্য ২০১৭ সালের ১৫ নভেম্বর রাজধানীর রেলভবনে বাংলাদেশ রেলওয়ে এবং ভারতের কালিন্দী রেল নির্মাণ প্রতিষ্ঠানের (টেক্সমাকো রেল অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিডেটের একটি বিভাগ) সঙ্গে এই চুক্তি হয়। বাংলাদেশ রেলওয়ের মহা-ব্যবস্থাপক (পূর্ব) আব্দুল হাই ও ভারতের কালিন্দী রেল নির্মাণ প্রতিষ্টানের ভাইস প্রেসিডেন্ট শারদ শর্মা এ চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। ২০১৮ সালের ১০ আগস্ট থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে রেলের পুরাতন ব্রিজ ও রেল লাইন উঠানোর কাজ শুরু হয়। কিন্তু চুক্তি স্বাক্ষরের প্রায় দেড় বছর আর কাজ শুরুর প্রায় এক বছর অতিবাহিত হলেও রেললাইন চালুর মুল কাজ অর্থ্যাৎ ব্রিজ, স্টেশন ভবন, গোডাউন, স্টেশন ইয়ার্ড, রেলস্ট্রেক বসানোর কাজ এখনো শুরুই করেনি সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। এদিকে ২০১৮ সালের ১০ সেপ্টেম্বর ২য় দফায় ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে কুলাউড়া-শাহবাজপুর রেললাইন সেকশন পুনর্বাসন কাজের উদ্বোধন করেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। অথচ গত বছরের ২০ আগষ্ট রেললাইনের পুনঃস্থাপন কাজ পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে স্থানীয় সংসদ সদস্য ( তৎকালিন জাতীয় সংসদের হুইপ ) ও বর্তমান পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রী আলহাজ¦ শাহাব উদ্দিন জানিয়েছিলেন আগামী ১ বছরের মধ্যে কুলাউড়া-শাহবাজপুর রেললাইন পুন:স্থাপনের কাজ শেষ হবে। কিন্তু এ সময়ের মধ্যে মাত্র ৫ থেকে ৭ ভাগ কাজ সম্পন্ন হওয়ায় ভুক্তভোগী মহলে হতাশা বিরাজ করছে।
সরেজমিনে রোববার সকালে কুলাউড়া-শাহবাজপুর রেললাইনের নির্মাণ কাজের অগ্রগতি পরিদর্শনে যান ভারতীয় হাই কমিশনার রিভা গাঙ্গুলি দাস। বিকেল পর্যন্ত তিনি শাহবাজপুর রেলস্টেশনের বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করে কাজের ধীরগতি দেখে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের প্রতি ক্ষোভ ও অসন্তোষ প্রকাশ করেন। এসময় ভারতীয় হাই কমিশনার নির্মানাধীন প্রকল্পের এলাকা, স্টেশন সংখ্যা, দুরত্ত্ব, প্রকল্প ব্যয় ও কুলাউড়া থেকে শাহবাজপুর যেতে এবং শাহবাজপুর থেকে ভারতে যেতে কত সময় লাগবে, এ লাইন চালু হলে কি পরিমান জনসাধারণ উপকৃত হবে তা অবহিত হন।
রেলওয়ে সূত্র জানিয়েছে, পুনর্নির্মাণাধিন রেললাইনের ৪৪ দশমিক ৭৭ কিলোমিটারের পুরোটাই দ্বৈত গেজ লাইনে পুনর্বাসন করা হবে। এরমধ্যে ৭ দশমিক ৭৭ কিলোমিটার লুপ লাইনের কাজ হবে। ট্রেন লাইন পুনর্বাসনের পাশাপাশি ছয়টি স্টেশনের মধ্যে জুড়ী, দক্ষিণভাগ, বড়লেখা ও শাহবাজপুর ‘বি’ শ্রেণি এবং কাঁঠালতলি ও মুড়াউল স্টেশন ‘ডি’ শ্রেণিতে পুনঃসংস্কার করা হবে। এই রেললাইনটি চালু হলে কুলাউড়া থেকে শাহবাজপুর পর্যন্ত প্রতিদিন পাঁচটি ট্রেন চলাচল করবে। লোকাল ট্রেন ছাড়াও আন্তঃনগর ট্রেন চলবে বলে জানা গেছে। পরবর্তী সময়ে ভারতীয় ট্রেনও এ পথ দিয়ে চলবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে।
উল্লেখ্য, ১৮৯৬ সালে কুলাউড়া থেকে শাহবাজপুর পর্যন্ত ৪৪ দশমিক ৭৭ কিলোমিটার মিটারগেজ রেলপথ নির্মাণ হয় । এক সময় এ পথে আসাম থেকে সরাসরি চট্টগ্রাম বন্দর পর্যন্ত ট্রেন চলতো। ২০০২ সালে তৎকালীন বিএনপি জামায়াত জোট সরকার লোকসান দেখিয়ে এ রেলপথটি বন্ধ করে দেয়।
Posted ৪:৩১ অপরাহ্ণ | সোমবার, ২০ মে ২০১৯
সংবাদমেইল | Nazmul Islam
.
.