
বিশেষ প্রতিনিধি,সংবাদমেইল২৪.কম | সোমবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০১৬ | প্রিন্ট
মস্তিষ্কবিকৃতির কারণে শিকলেবন্দী জীবনযাপন করছেন দুই সন্তানের জননী রেহেনা বেগম (৪০)। দীর্ঘ ৮ বছর ধরে অসুস্থ রেহেনার প্রথম দিকে একবার চিকিৎসার শুরু হলেও টাকার অভাবে কিছুদিন পর তা বন্ধ হয়ে যায়।
বাবা আলা বকসের চার সন্তানের মধ্যে মা হারানো সবার বড় মেয়ে রেহেনা বেগমের বাড়ি দিনাজপুরের পার্বতীপুর উপজেলার বেলাইচন্ডি ইউনিয়নে ১ নং ওয়ার্ডের ভাটিপাড়া গ্রামে।
২৫ বছর আগে মনমথপুর ইউনিয়নের দেগলাগঞ্জ গ্রামের জমির উদ্দিনের সঙ্গে বিয়ে হয় রেহেনার। কয়েক বছর আগে স্বামী মারা গেলে মানসিক রোগে আক্রান্ত হন তিনি। আতিকুল (২৪) ও সাদেকুল (১৮) নামে তার দুই সন্তান আছে। এদের মধ্যে একজন মুরগির ফার্মে কাজ করেন এবং অন্যজন ভ্যান চালক।
মায়ের খোঁজ খবর না নেয়ায় শেষ পর্যন্ত বাবার বাড়িতে নোংরা অস্বাস্থ্যকর স্থানে ঠাঁই হয় পায়ে শিকল বাঁধা রেহেনার। সব সময় বিড়বিড় করে আপন মনে কথা বলেন, ছেড়ে দিলে লোকদের ওপর চড়াও হয় ও ভাঙচুর করে। এজন্য তাকে পায়ে শিকল দিয়ে বেঁধে আটকে রাখা হয়েছে।
চিকিৎসা না করার কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে বাবা আলা বকস জানান, রেহেনার দুই সন্তানের একজনও খবর নেয় না। অসুস্থ অবস্থায় তার বাড়েতে রেখে গেছে। টাকার অভাবে মেয়ের চিকিৎসা করাতে পারছেন না আলা বকস।
রেহেনার ভাই অব্দুল মজিদ বলেন, ‘‘রেহেনা ৫ বছর আগত হারে গেছিলো। দুনিয়ার খোঁজার পর কিশান বাজারত পাছি। এরি লাগি শিকল দিয়া বাঁধি রাকছি। পাইশা কড়ির (টাকা) কারণে চিকিৎসা বন্ধ হয়া আছে। যদি কাইয়ো হামাক টাকা দিলে চিকিৎসা করমো। ওর ছেলেরা ধার ধারে না। এত ডাক ডাকাছি কোনো দিন আইসে নাই। একটা ডাক্তার দেখাই ছিনো মেলা পাইশা করি খরচ কইরা। হে প্রায় ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকার কথা বলেছে।’’
রেহেনার বড় ভাবি শাপলা বেগম বলেন, ‘‘যখন মাথাটা আউল বাউল করে তখন মাইনসক ডাঙ্গা ডাঙ্গি করে।’’
যদি কোনো ব্যক্তি আর্থিকভাবে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয় তবে রেহেনা সুস্থ জীবনে ফিরে আসবে বলে মনে করছেন তার পরিবার।
সংবাদমেইল২৪.কম/এএ/এনএস
Posted ৬:৫৮ অপরাহ্ণ | সোমবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০১৬
সংবাদমেইল | Nazmul Islam
.
.