
বিশেষ প্রতিনিধি,সংবাদমেইল২৪.কম | শুক্রবার, ০৯ আগস্ট ২০১৯ | প্রিন্ট
কিছু পেরেছি
অনেক কিছু পারিনি!!
প্রিয় ইউনিয়ন বাসী
আসসালামু আলাইকুম /আদাব
অনেক প্রতিকুলতা মাড়িয়ে হাজীপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পদে দায়িত্ব পালনের আজ ৩ বছর পূর্ণ করেছি।আলহামদুলিল্লাহ!!! ২০১৬ সালের১০ আগস্ট এপদের দায়িত্ব গ্রহন করি।
বিজয়ী হয়েছিলাম একই বছরের ৭ মে। ২০০০ সালে জনসেবার প্রবল ইচ্ছে আর মানসিকতা থেকে হাজীপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সিদ্ধান্ত নেই। অনেক মানুষের অক্লান্ত পরিশ্রম আর সহযোগিতা নিয়ে ১৭ বছর পর এপদে সফল হই যাহা ছিলো আমার রাজনৈতিক ও সামাজিক জীবনে বড় ধরনের এক মাইলফলক। যদিও এই ইচ্ছে পুরণে ব্যক্তিগত ও পারিবারিক জীবনে আমাকে অনেক মাশুল গুনতে হয়েছে । ছেড়ে এসেছি বড় বেতনের সরকারি চাকুরী। সুযোগ ছিলো সিলেট বিভাগে শীর্ষস্থানীয় সাংবাদিক হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার । এমনকি জেলা সদরে প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী হিসেবে গাড়ি বাড়ির মালিক বনে যাওয়ার।সময় দিতে পারিনি স্ত্রী সন্তানকে।
অবশ্য এই তিনবছর চেয়ারম্যান পদে দায়িত্ব পালন করে অনেক বিচিত্র অভিজ্ঞতা অর্জন করেছি যা ভবিষ্যতে কাজে আসতে পারে। কেন্দ্রীয় সরকার প্রতিনিয়ত ইউনিয়ন পরিষদের ক্ষমতা বাড়ানোর অনেক কথা বললেও এ সংক্রান্ত আইন ও বিধিবিধানের তোয়াক্কা না করে ক্ষমতাধর ব্যক্তিরা এই পদের মর্যাদা অনেক নীচে নামিয়ে এনেছেন।
এখন দেশের অনেক ইউনিয়নে স্বাক্ষর দেওয়া আর সালিশ বিচার ব্যতীত চেয়ারম্যানের কিছু করতে হয় না। বিভিন্ন পদের ক্ষমতাধর ব্যক্তিরা নিজেদের আলাদা বলয় সৃষ্টি করে রেখেছেন। তাদের গাইডলাইন অনুযায়ী সবকিছু চলে, চলতে হয়। স্থানীয় ক্ষমতার কেন্দ্রে ব্যক্তির পরিবর্তন হয় কিন্তু চলমান ব্যবস্থার পরিবর্তন হয় না। এটা শক্তিশালী স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠায় বড় প্রতিবন্ধক। এই রকম প্রতিকুল পরিস্থিতিতে তিন বছর কাটাতে পেরে যদিও আমি খুশী কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য এই তিন বছর দায়িত্ব পালন করে আপনাদের জন্য আমি তেমন কিছুই করতে পারিনি। পারিনি আপনাদের অনেক প্রত্যাশা পূরণ করতে। আপনাদের অনেক রাস্তাঘাট যান ও জন চলাচলের অনুপযোগী।এসব রাস্তা পাকা করা সম্ভব হয়নি। মনু নদীর ভাঙনের কবলে পড়ে শতাব্দীর প্রাচীন কাউকাপন বাজার বিলীন হয়ে গেছে। এই বাজারের অনেক ব্যবসায়ী এখন সর্বশান্ত। হাসিমপুর এলাকায়ও মনু নদীর প্রতিরক্ষা বাধ ভেঙে পড়েছে।
কটারকোনা – হাজীপুর ইউনিয়ন অফিস এবং কুনিমোড়া -তারাপাশা সড়ক যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। বিকল্প সড়ক চালু করা সম্ভব হয়নি।হাজার হাজার লোক প্রতিদিন ভোগান্তির শিকার। তবে কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন করতে পারিনি ঠিকই কিন্তু আপনারা স্বাক্ষী অব্যাহত চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
অতীতে মসজিদ মাদ্রাসা মন্দিরে ইউনিয়নের ফান্ড থেকে তেমন কিছু দেওয়া হতো না। এই তিনবছরে প্রতিটি ওয়ার্ডে ৭০ হাজার টাকা হইতে লক্ষাধিক টাকা পর্যন্ত দিতে পেরেছি । অনেক গ্রামের ছোট রাস্তাগুলোতে ১২০ থেকে ৫/৬ শ ফুট পর্যন্ত ইটসলিং করা হয়েছে। অনেকগুলো মাটির রাস্তাও মেরামত করা হয়েছে। উন্নয়ন মুলক কাজ বরাদ্দের ক্ষেত্রে মাদানগর থেকে কাউকাপন পর্যন্ত সমান গুরুত্ব পেয়েছে। করিনি আঞ্চলিকতা।
অনেক গরীব লোকজনকে সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনি তথা বয়স্ক বিধবা প্রতিবন্ধী স্বামী পরিত্যক্তা ভাতা ও ভিজিডি কার্ড এর আওতায় আনা হয়েছে। সর্বোপরি চেষ্টা করছি আপনাদের সম্মান দেওয়ার। এখন যেকোনো লোক তার ভোটে নির্বাচিত চেয়ারম্যানের পাশের চেয়ারে বসে খোলা মনে কথা বলতে পারে। শালিস বিচার বা অন্য কাজে চেয়ারম্যানের গাড়ির গ্যাস/ তেল মবিলের টাকা দিতে হয় না।
তিন বছর পুর্তির দিনে আর কিছুই চাই না।
দোয়া ও আশীর্বাদ করবেন যেনো বদলে না যাই। যে আব্দুল বাছিত বাচ্চু ছিলাম সেভাবেই বাকি জীবন কাটাতে পারি। ধন্যবাদ
আপনাদের প্রিয়/অপ্রিয়
আব্দুল বাছিত বাচ্চু
চেয়ারম্যান, ১০ নং হাজীপুর ইউনিয়ন পরিষদ
কুলাউড়া, মৌলভীবাজার।
Posted ৮:১৮ অপরাহ্ণ | শুক্রবার, ০৯ আগস্ট ২০১৯
সংবাদমেইল | Nazmul Islam
.
.