
অনলাইন রিপোর্ট | শুক্রবার, ২২ অক্টোবর ২০২১ | প্রিন্ট
নিউইয়র্কের মুক্তধারা ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে আগামী ২৮ অক্টোবর বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হচ্ছে পাঁচদিনব্যাপী ‘নিউইয়র্ক বাংলা বইমেলা’। ৩০তম এই বাংলা বইমেলা বাংলাদেশ ও পশ্চিম বাংলার বাইরে সবচেয়ে বড় ও দীর্ঘস্থায়ী বইমেলা হিসেবে স্বীকৃত। করোনা মহামারীর কারণে মাঝে একটি বছর প্রকাশ্যে বইমেলা করা সম্ভব হয়নি। এবারও শেষ পর্যন্ত ভার্চুয়ালি, নাকি সরাসরি সবার অংশগ্রহণে মেলা হবে এ নিয়ে এক ধরণের দ্বিধা ছিল। তবে আয়োজকরা জানিয়েছেন, শেষ পর্যন্ত প্রকাশক, পাঠক ও সাংস্কৃতিক কর্মীদের সরাসরি অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হবে এবারের বইমেলা।
মুক্তধারা ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও বিশ্বজিত সাহা জানিয়েছেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ বছরে এবারের মেলাকে ভীন্ন আঙ্গিকে সাজানো হয়েছে। বাংলাদেশ ও ভারত থেকে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা এতে সরাসরি অংশ নেবেন। সেই সঙ্গে বইমেলারও ৩০ বছর পূর্ণ হচ্ছে। এই মাইলফলকটিও স্মরণীয় করে রাখার চেষ্টা হচ্ছে বলে জানান তিনি। বিশ্বজিত সাহা বলেন, “দীর্ঘস্থায়ী এই মেলার উপর মানুষের আস্থা ও ভালোবাসাই আমাদের সবচেয়ে বড় অর্জন। আশা করছি, এবারও সফল একটি আয়োজন করা সম্ভব হবে”।
আয়োজকরা জানিয়েছেন, এবারের বইমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানটি হবে নিউইয়র্কের কুইন্সের লাগোর্ডিয়া মেরিয়ট হোটেলের বলরুমে। জাঁকজমকপূর্ণ মেলার উদ্বোধন করবেন কবি আসাদ চৌধুরী। তবে প্রধান অতিথি থাকবেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ। অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত থাকবেন বাংলা একাডেমীর মহাপরিচালক কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা, জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রের পরিচালক মিনার মনসুরসহ অনেক লেখক-সাহিত্যক ও প্রকাশক। সঙ্গীত পরিবেশন করবেন রথীন্দ্রনাথ রায়, শহীদ হাসান, কাদেরী কিবরিয়া, কাবেরি দাশ, নবনিতা চৌধুরী, শাহ মাহবুব এবং পারমিতা মুমু। এ ছাড়া লেখক ও সাংবাদিক শামীম আল আমিনের পরিচালনায় দ্য কনসার্ট ফর বাংলাদেশ এর উপর ভিত্তি করে নির্মিত প্রামাণ্যচিত্র ‘একটি দেশের জন্য গান’ মেলায় প্রদর্শিত হওয়ার কথা রয়েছে।
বইমেলার এবারের আহবায়ক একুশে পদক বিজয়ী লেখক ড. নুরুন নবী জানান, উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পরেরদিন ২৯শে অক্টোবর শুক্রবার বাংলাদেশের সেরা প্রকাশনা সংস্থাগুলো বইয়ের পসরা সাজিয়ে বসবেন জ্যাকসন হাইটের জুইশ সেন্টারে। সেখানে মেলা চলবে প্রতিদিন বিকাল ৪ টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত। শেষ হবে ১লা নভেম্বর সোমবার। লেখক ও প্রকাশকদের অংশগ্রহণে বিভিন্ন অনুষ্ঠান থাকবে বলে জানান তিনি।
এদিকে এবার নিউইয়র্ক বাংলা বইমেলায় উপমহাদেশের বরেণ্য কথাসাহিত্যিক সমরেশ মজমুদারকে মুক্তধারা-জিএফবি সাহিত্য পুরস্কার প্রদান’ করা হচ্ছে। সাহিত্যে অনন্য কীর্তির জন্য আগামী ২৮ অক্টোবর মেলার প্রথম দিন আনুষ্ঠানিকভাবে এই পুরস্কার হস্তান্তর করা হবে। ড. নুরুন নবী জানিয়েছেন, “মুক্তধারার নির্বাহী পরিষদের এক বৈঠকে সমবেশ মজুমদারকে এবারের পুরস্কার দেয়ার জন্য সর্বসম্মতভাবে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে”।
সমরেশ মজুমদার তাঁর প্রতিক্রিয়ায় বলেন, “আটলাল্টিকের ওপার থেকে মুক্তধারা ফাউন্ডেশন আয়োজিত নিউ ইয়র্ক বাংলা বইমেলার পক্ষ থেকে আমাকে সাহিত্য সম্মনানা জানানোর খবরে আমি আনন্দিত। বইমেলার ৩০ বছর ও বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীর অনুষ্ঠান স্বার্থক ও সুন্দর হোক। মহামারী ভাইরাস থেকে পৃথিবী মুক্ত হলে নিশ্চয়ই আপনাদের সাথে আবার দেখা হবে”।
এর আগে মুক্তধারা সাহিত্য পুরস্কার পেয়েছেন কবি নির্মলেন্দু গুণ, বাংলা একাডেমির সাবেক সভাপতি শামসুজ্জামান খান, বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ, কথাসাহিত্যিক দিলারা হাশেম ও কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন। ছয় বছর আগে নিউইয়র্ক বইমেলা এই বার্ষিক সাহিত্য পুরষ্কার প্রবর্তন করে। বর্তমানে এর নাম মুক্তধারা-জিএফবি সাহিত্য পুরষ্কার। মুক্তধারার অন্যতম উপদেষ্টা গোলাম ফারুক ভুঁইয়ার অর্থানুকুল্যে প্রতিষ্ঠিত এই পুরষ্কারের অর্থমূল্য ২,৫০০ মার্কিন ডলার।
Posted ১:৪৯ পূর্বাহ্ণ | শুক্রবার, ২২ অক্টোবর ২০২১
সংবাদমেইল | Nazmul Islam
.
.