
অনলাইন ডেস্ক : | সোমবার, ০১ নভেম্বর ২০২১ | প্রিন্ট
মাথাভর্তি সাদা ব্যান্ডেজ। তাতে ডাক্তার লিখে দিয়েছেন ‘হাড় নেই, চাপ দিবেন না।’ মাথার একপাশে এঁকে দেওয়া হয়েছে ‘বিপদজনক চিহ্নও’। হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দুই চোখও। যে কারণে সাদা ব্যান্ডেজে ঢেকে দেওয়া হয়েছে। আর অস্ত্রপচার করে মাথার খুলির অংশ তার পেটের চামড়ার নিচে সংরক্ষণ করে রেখেছেন চিকিৎসকরা।
জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে থাকা এই শিক্ষার্থীর নাম মাহাদি জে আকিব। তিনি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের (চমেক) এমবিবিএস দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। পড়তে এসে নিজের কলেজের সহপাঠীদের হামলায় তার স্থান হয়েছে এখন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ)।
সহপাঠিরা হামলা চালিয়ে থেঁতলে দিয়েছে তার মাথার খুলি। এতে ভেঙ্গে গেছে মাথার হাড়। মস্তিষ্কে হয়েছে প্রচুর রক্তক্ষরণ। এমন অবস্থায় ঝুঁকিমুক্ত নন বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। ৪৮ ঘণ্টায় রাখা হয়েছে অবজারভেশনে।
গত ৩০ অক্টোবর শনিবার সকাল ৯টার দিকে চমেকের প্রধান ফটকের সামনের সড়কে মাত্র ৫০ সেকেন্ডেই ৮-১০জন যুবক তার ওপর হামলা চালায়। এর পর থেকে আইসিইউতে নিথর পড়ে আছেন আকিব।
সিসিটিভির ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, গত শনিবার সকাল ৯টার দিকে কলেজের সামনের সড়কের ফুটপাতের ওপর কলেজে সাদা এপ্রোন পড়া অবস্থায় দৌড়াচ্ছেন আকিব। পেছনে কয়েকজন ধাওয়া করছে তাকে। প্রতিপক্ষের হামলা থেকে বাঁচতে দৌঁড়াচ্ছে তিনি। দৌঁড়াতে দৌঁড়াতে একপর্যায়ে পড়ে যান। আবার উঠে দৌঁড় দেবার আগেই এপ্রোন পড়া পেছন থেকে একদল যুবক (তারই ব্যাচমেট) তাকে এসে ধরে ফেলে। তাকে ঘিরে ধরে শুরু করে মারধর। এরপর শুরু হয় খুর দিয়ে একের পর কোপ। তাদের থামাতে চেষ্টা করেও পারেননি আকিব। হামলার সময় সড়কের চারপাশে ছিল অনেকে। তবে সবাই কেবল তাকিয়ে দেখছেন হামলার দৃশ্য। ভয়ে এগিয়ে আসেননি কেউই। প্রায় ৫০ সেকেন্ড সময়ের মধ্যে আকিবের মাথা থেঁতলে দিয়ে পালিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। পরে আকিবের কয়েকজন সহপাঠি এসে মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে নিয়ে যায় চমেক হাসপাতালে।
নিউরো সার্জারি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান এসএম নোমান খালেদ চৌধুরী সমকালকে বলেন, ‘আকিবকে যখন আমরা পাই তখন তার মাথা পুরোপুরি থেঁতলানো ছিল। হামলায় তার মাথার হাড় ভেঙে গেছে; মস্কিষ্কেও রক্তক্ষরণ হয়েছে প্রচুর। ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে ব্রেইন। অপারেশন করে মাথার কিছু অংশ তার শরীরের মধ্যে সংরক্ষণ করে রাখা হয়েছে। এখনও ঝুঁকিমুক্ত না হলেও আগের চেয়ে তার শারীরিক অবস্থা ভালোর দিকে। তাকে ৪৮ ঘণ্টার অবজারভেশনে রাখা হয়েছে। তারপরেও আমরা আশাবাদী আকিব সুস্থ হয়ে উঠবেন।’
সহকারী অধ্যাপক ডা. মাহফুজুল কাদের বলেন, ‘তার মাথার আঘাত খুব প্রকট ছিল। মাথার হাড়ের একটা অংশ খুলে আপাতত তার পেটের চামড়ার নিচে রাখা হয়েছে। শারীরিক অবস্থার উন্নতি হলে সেটি আবার আগের জায়গায় প্রতিস্থাপন করা হবে।’
প্রকাশ্যে এমন ঘটনায় চট্টগ্রাম নগরজুড়ে বইছে আলোচনা-সমালোচনা।
-উৎস : সমকাল
Posted ৭:৫৫ পূর্বাহ্ণ | সোমবার, ০১ নভেম্বর ২০২১
সংবাদমেইল | Nazmul Islam
.
.