
শরীয়তপুর জেলা প্রতিনিধি,সংবাদমেইল২৪.কম | শুক্রবার, ১৬ ডিসেম্বর ২০১৬ | প্রিন্ট
শরীয়তপুর: স্বাধীনতার ৪৫ বছরেও মুক্তিযোদ্ধা ভাতা পাননি শরীয়তপুরের রতন মুন্সি। স্ত্রীকে হারিয়ে দুই সন্তান নিয়ে তিনি মানবেতর জীবনযাপন করছেন। বর্তমানে শরীয়তপুর সদরের পশ্চিম কাশাভোগ গ্রামে মৃত্যুর সঙ্গেপাঞ্জা লড়ছেন রতন।
মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছেন তার সহযোদ্ধা ও বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের শিবচর উপজেলা কমান্ডারও। এমনকি মুক্তিযোদ্ধাদের যাচাইবাছাই তালিকায়ও রয়েছে তার নাম। এরপরও মুক্তি ভাতার তালিকায় নাম উঠেনি এই মুক্তিযোদ্ধার। ক্ষোভ আর হতাশা জানিয়ে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে জীবনের শেষ ইচ্ছা পূরণে জন্য সরকারের প্রতি দাবি জানিয়েছেন রতন।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের ডাকে সাড়া দিয়ে দেশ ও জাতিকে রক্ষা করার জন্য মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন তৎকালীন ফরিদপুর জেলার মাদারীপুর মহাকমা শিবচর থানার উত্তরচর তাজপুর গ্রামের মৃত মোনতাজ উদ্দিন মুন্সির ছেলে রতন মুন্সি। ভারতের আগরতলা বাগমারা ক্যাম্পে কর্নেল এস এস থাবার নের্তৃত্বে অস্ত্র প্রশিক্ষণ নেন তিনি। পরে তৎকালীন ফরিদপুর জেলার মাদারীপুরের শিবচরের মেজর খসরুর নের্তৃত্বে পশ্চিমা পাকসেনাদের বিরুদ্ধে শিবচরের বিভিন্নস্থানে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে হানাদারমুক্ত করেন রতন।
স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে ঢাকা স্টেডিয়াম ক্যাম্পে অস্ত্র জমা দেন এবং মাদারীপুরের যাচাইবাছাই তালিকায় নামও ওঠে। এর নাম্বার ৪৬১। ১৯৭২ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি ঢাকার পিলখানা থেকে পুলিশ বাহিনীতে যোগদান করে ২০০৯ সালের জুলাই মাসে অবসর নেন রতন।
মুক্তিযোদ্ধা গেজেটের তালিকায় নাম অর্ন্তভুক্ত না করতে পারার কারণে ২০১৪ সালের মে মাসের ২৭ তারিখে অনলাইনে মুক্তিযোদ্ধা নিবন্ধন ফরমে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেন তিনি। প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা ও এলাকায় মুক্তিযোদ্ধা রতন হিসেবে পরিচিত হলেও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রকাশিত গেজেটে নাম উঠেনি রতন মুন্সির।
মুক্তিযোদ্ধা গেজেটের তালিকায় তার নাম অর্ন্তভুক্ত করার জন্য সরকারের প্রতি দাবি জানান জানান রতন মুন্সি। তিনি বলেন, “চাকরি জীবনে সময়মতো আবেদন করতে না পারায় আমার নাম গেজেটে উঠেনি। এখন আমার জীবনে চাওয়ার মতো আর কিছুই নাই। তবে সরকারের প্রতি চাওয়ার আছে এ দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান হিসেবে স্বীকৃতি চাই। তাহলে মরে গেলেও শান্তি পাবো। এখন আমাকে দেখার মতো কেউ নাই।”
এ বিষয়ে কথা হয় এলাকার মুক্তিযোদ্ধা মো. মোতালেব মিয়া, আ. মান্নান বয়াতি, মো. তৈয়ব আলীর সঙ্গে। তারা রতন মুন্সিকে তাদের সহযোদ্ধা বলে জানান। এছাড়া বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের শিবচর উপজেলা কমান্ডার এবং দত্তপাড়া ইউনিয়নের কমান্ডার মোকলেচুর রহমান প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে রতন মুন্সিকে প্রত্যয়নপত্র দেন। একইসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রকাশিত গেজেটে নাম উঠানোর জন্যও দাবি জানান তারা।
সংবাদমেইল২৪.কম/এনবি/এনডি/এসজে/এনএস
Posted ৯:৪৬ অপরাহ্ণ | শুক্রবার, ১৬ ডিসেম্বর ২০১৬
সংবাদমেইল | Nazmul Islam
.
.