বৃহস্পতিবার ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ | ৬ আশ্বিন, ১৪৩০

সিলেট জেলা পরিষদ নির্বাচন : মাঠে নেমেছে আওয়ামী লীগ, দোদুল্যমান বিএনপি

সিলেট সংবাদদাতা, সংবাদমেইল২৪ডটকমঃ | বুধবার, ০২ নভেম্বর ২০১৬ | প্রিন্ট  

সিলেট জেলা পরিষদ নির্বাচন : মাঠে নেমেছে আওয়ামী লীগ, দোদুল্যমান বিএনপি

সিলেট: সিলেট জেলা পরিষদ নির্বাচনে মাঠে আওয়ামী লীগ প্রার্থীদের প্রচারণা থাকলেও দোদুল্যমান অবস্থায় রয়েছেন বিএনপির প্রার্থীরা। নির্বাচনে দলের অংশগ্রহণের উপর নির্ভর করছে তাদের প্রার্থী হওয়া।

এদিকে, আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা মাঠে থাকলেও দল থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী সবাই। দলীয় প্রতিকে নির্বাচন না হলেও দলের সমর্থন ছাড়া কেউ নির্বাচন করতে রাজী নন। দেশের শীর্ষ এ দুটি দল ছাড়াও জাতীয় পার্টি এবং স্বতন্ত্র প্রার্থীরা মাঠে তৎপর রয়েছেন। ইতোমধ্যে তারা বিভিন্ন ইউনিয়ন, উপজেলা, পৌরসভা ও সিটি করপোরেশনের সংশ্লিষ্ট ভোটারদের সাথে যোগোযোগ রক্ষা করে চলেছেন।


দেশে প্রথমবারের মতো জেলা পরিষদ নির্বাচন আয়োজনের জন্য ২৮ ডিসেম্বর দিন ঠিক করেছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। স্থানীয় সরকার বিভাগের পক্ষ থেকে নির্বাচন কমিশনে চিঠি পাঠিয়ে ভোটের ওই তারিখ ইতোমধ্যে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি প্রয়োজনীয় নির্বাচনী বিধি ও আচরণ বিধি গেজেট আকারে প্রকাশ করে তফশিল ঘোষণার ব্যবস্থা নিতেও অনুরোধ করা হয়েছে চিঠিতে। এরপর থেকেই মূলত প্রস্তুতি নিতে শুরু করেন নির্বাচনে আগ্রহী প্রার্থীরা। এখনো পর্যন্ত আওয়ামী লীগ থেকে বর্তমান প্রশাসক, সাবেক গণপরিষদের সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অ্যাডভোকেট লূৎফুর রহমান, যুগ্ম-সম্পাদক অধ্যক্ষ সুজাত আলী রফিক, অ্যাডভোকেট নিজাম উদ্দিন ও অ্যাডভোকেট নাসির উদ্দিন খান নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে দলের সমর্থন ছাড়া নির্বাচন করতে অনাগ্রহী অনেক প্রার্থী।

এদিকে, বিএনপি থেকে দলের চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা, মহানগর বিএনপির সাবেক সভাপতি এম এ হক, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলী আহমদ নির্বাচন করার চিন্তাভাবনা করছেন। তবে দল যদি নির্বাচনে অংশ না নেয়, তাহলে তারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেন না বলে জানিয়েছেন।


এছাড়া জাতীয় পার্টি থেকে জেলা জাতীয় পার্টির আহ্বায়ক আব্দুল্লাহ সিদ্দিকী, জেলা সদস্য ও সাবেক ছাত্রনেতা প্রবাসী ফখরুল ইসলাম সোহেল এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ইমরান আহমদ মহিলা ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ ডক্টর মো. এনামূল হক সরদার নির্বাচনী প্রচারণা অব্যাহত রেখেছেন।

জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক অধ্যক্ষ সুজাত আলী রফিক জানান- দল যদি মনোনয়ন দেয়, তাহলে আমি নির্বাচন করবো। দল থেকে অবশ্যই মনোনয়ন দেওয়া হবে। কারণ জাতীয় কাউন্সিলে স্থানীয় সরকার পরিষদে প্রার্থী নির্ধারণের জন্য ১৯ সদস্য বিশিষ্ট নির্বাচনী বোর্ড গঠন করা হয়েছে। কাউন্সিল অধিবেশনে এর অনুমোদনও নেওয়া হয়। সেই বোর্ড আশা করি আমায় মনোনয়ন দেবে। দল থেকে মনোনয়ন পেলে আমি অবশ্যই নির্বাচন করবো। একই কথা বলেছেন জেলা আওয়ামী লীগের আরেক যুগ্ম সম্পাদক অ্যাডভোকেট নাসির উদ্দিন খানও। দল থেকে মনোনয়ন পেলে তিনি নির্বাচন করবেন। তবে দল থেকে যদি কোন প্রার্থী নির্ধারণ করা না হয়, উন্মুক্ত থাকে, তাহলে তিনি নির্বাচন করবেন বলে জানিয়েছেন। নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি, বর্তমান জেলা পরিষদের প্রশাসক অ্যাডভোকেট লূৎফুর রহমান ও যুগ্ম সম্পাদক অ্যাডভোকেট নিজাম উদ্দিনও।


জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলী আহমদ জানান- দলের অনেক নেতাকর্মী নির্বাচন করার জন্য বলছেন। চিন্তাভাবনা করছি। দল যদি সিদ্ধান্ত দেয়, তাহলে করবো। না হলেতো কিছু করতে পারবো না। কারণ দলের সিদ্ধান্তের বাহিরে গিয়ে নির্বাচন করতে চাই না। এছাড়া দলের অনেক সিনিয়র নেতৃবৃন্দ প্রার্থী রয়েছেন। দল যে সিদ্ধান্ত দেবে সে অনুযায়ী কাজ করবো।

বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা, মহানগর বিএনপির সাবেক সভাপতি এম এ হক জানান- দল এখনো নির্বাচনে যাবে কি যাবে না, তা নিশ্চিত নয়। দল গেলে চিন্তাভাবনা করবো। এর বেশি এখনই কোন মন্তব্য করতে রাজি নন বলে তিনি জানান।

স্বতন্ত্র প্রার্থী ইমরান আহমদ মহিলা ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ ডক্টর মো. এনামূল হক সরদার জানান- সরকার যেহেতু নির্দলীয় কনসেপ্টে নিবাচন করবে, দলীয় কোন প্রতিক থাকবে না, তাই একজন শিক্ষক হিসেবে আমি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করার আকাঙ্ক্ষা নিয়ে মাঠে কাজ করছি। আমি ব্যক্তিগতভাবে এই কেলজ ছাড়াও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সেবা দিয়ে আসছি। যেহেতু তৃণমূল থেকে একজন শক্তিশালী জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হয়ে আসবেন, তাই মানুষের সেবা করা বিশাল একটা সুযোগ রয়েছে। আমি তা কাজে লাগাতে চাই। সেই সাথে স্থানীয় সরকারকে শক্তিশালী সরকার হিসেবে প্রতিষ্ঠা করে উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় অবদান রাখতে চাই।

জেলা জাতীয় পার্টির আহ্বায়ক আব্দুল্লাহ সিদ্দিকী জানান- প্রার্থী নির্ধারণ নিয়ে আলাপ-আলোচনা চলছে। জাপা এখনো কোন সিদ্ধান্ত নেয়নি। তবে যতোটুকু জানি, পার্টি এ নিয়ে চিন্তাভাবনা করছে। কেন্দ্র থেকে দেওয়া হলে আমি নিজেও নির্বাচন করবো। এছাড়া জাপার জেলা সদস্য, সাবেক ছাত্রনেতা প্রবাসী ফখরুল ইসলাম সোহেলও চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হিসেবে মাঠে রয়েছেন।

এদিকে, চেয়ারম্যান প্রার্থীরা ধীরে চলো নীতিতে এগুলেও বেশ তৎপর রয়েছেন সদস্য প্রার্থীরা। ইতোমধ্যে অনেকে নিজের প্রার্থীতা ঘোষণা করেছেন। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী ১নং ওয়ার্ডে মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এটিএম হাসান জেবুল, ৩নং ওয়ার্ডে সিলেট জেলা প্রেসক্লাবের ক্রীড়া সম্পাদক ফয়সল আহমদ মুন্না, ৪নং ওয়ার্ডে আপ্তাব উদ্দিন, ৯নং ওয়ার্ডে বিশ্বনাথ প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক এবং দৈনিক উত্তরপূর্ব’র বিশ্বনাথ প্রতিনিধি প্রনঞ্জয় বৈদ্য অপু,  ১৩নং ওয়ার্ডে জেলা জাপার যুগ্ম-আহ্বায়ক নাজমুল ইসলাম, একই ওয়ার্ডে রোটারিয়ান বাবর লস্কর, ৭ নং ওয়ার্ডে স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক ইউপি সদস্য হাজী শাহ্ আকলাছ আলী প্রার্থীতা ঘোষণা করেছেন।

মোট ১৫টি ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত সিলেট জেলা পরিষদ। ১৫টি ওয়ার্ডের মধ্যে সিলেট সিটি করপোরেশনের ২৭টি ওয়ার্ড, ১৩টি উপজেলা, ৪টি পৌরসভা ও ১০৫টি ইউনিয়ন রয়েছে। মোট ভোটার সংখ্যা ১ হাজার ৪৬৭জন।

তিন পার্বত্য জেলা বাদে বাংলাদেশের ৬১টি জেলা পরিষদে ২০১১ সালের ১৫ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগ নেতাদের প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ দেয় সরকার। তাদের মেয়াদপূর্তিতে ডিসেম্বরে প্রথমবারের মত এ নির্বাচন হবে। নির্বাচন করতে চাইলে জেলা পরিষদের বর্তমান প্রশাসকদের পদ ছাড়ার বিধান রাখা হয়েছে সংশোধিত জেলা পরিষদ আইনে। গত ৬ অক্টোবর এই সংশোধনী জাতীয় সংসদের অনুমোদন পায়।

সংবাদমেইল২৪.কম/বা/নাশ

Facebook Comments Box

Comments

comments

advertisement

Posted ৩:০৯ অপরাহ্ণ | বুধবার, ০২ নভেম্বর ২০১৬

সংবাদমেইল |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

এ বিভাগের আরও খবর

সম্পাদক ও প্রকাশক : মো. মানজুরুল হক

নির্বাহী সম্পাদক: মো. নাজমুল ইসলাম

বার্তা সম্পাদক : শরিফ আহমেদ

কার্যালয়
উপজেলা রোড, কুলাউড়া, মেলভীবাজার।
মোবাইল: ০১৭১৩৮০৫৭১৯
ই-মেইল: sangbadmail2021@gmail.com

sangbadmail@2016 কপিরাইটের সকল স্বত্ব সংরক্ষিত