
সিলেট প্রতিনিধি,সংবাদমেইল২৪.কম | বুধবার, ০৯ নভেম্বর ২০১৬ | প্রিন্ট
সিলেট: সিলেট জেলাকে বাল্যবিয়ে মুক্ত ঘোষণা করেছে জেলা প্রশাসন।
(০৮ নভেম্বর) মঙ্গলবার সিলেট জেলাকে বাল্যবিয়েমুক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। কোথাও বাল্য বিয়ের খবর পেলে শুধু প্রতিরোধ নয়, বর-কনের অভিভাবক, সংশ্লিষ্ট কাজি ও বিয়ের পড়ানোর সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির বিরুদ্ধেও কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার ঘোষণা দিয়েছে জেলা প্রশাসন। বাল্যবিয়েরোধ করা গেলে মাতৃ ও শিশু মৃত্যুর হার কমে আসবে বলে অভিমত বিশেষজ্ঞদের।
সিলেটে বাল্যবিয়েমুক্ত করতে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে আসছিল জেলা প্রশাসন। জনপ্রতিনিধি, বিবাহ নিবন্ধক, বিয়ে পড়ানোর সাথে সংশ্লিষ্ট ইমাম ও পুরোহিত, সুশীল সমাজ ও পেশাজীবী নেতৃবৃন্দের সাথে মতবিনিময়ের মাধ্যমে তারা জনসচেতনতা সৃষ্টির কাজ করছিল। এর ধারাবহিকতায় ইতোমধ্যে জেলার ১৩টি উপজেলা ও ১০৫টি ইউনিয়নকে বাল্যবিয়ে মুক্ত ঘোষণা করা হয়। নিবন্ধক (কাজী) ছাড়াও বিয়ে পড়ানোর সাথে সংশ্লিষ্ট জেলার ৫২০ জন ইমাম ও পুরোহিতকেও বাল্যবিয়ে না পড়ানোর নির্দেশ দেয়া হয়েছে। কোন ইমাম বা পুরোহিত বাল্যবিয়ে পড়াচ্ছেন কি-না তা পর্যবেক্ষণ করতে ডাটাবেজ তৈরিরও উদ্যোগ নিয়েছে জেলা প্রশাসন।
মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ার জন্য ১৩ বছর হতে হবে
সিলেট জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, ২০১৫ সালে সিলেট জেলায় বাল্য বিয়ের ঘটনা ঘটেছে ৮০টি। আর চলতি বছরে প্রশাসনের উদ্যোগে বাল্যবিয়ে বন্ধ করা হয়েছে ১২টি। বাল্যবিয়ে রোধে জনসচেতনতা সৃষ্টির তৈরি হওয়ায় বেড়েছে বিয়ে রেজিস্ট্রেশনের সংখ্যাও। ২০১৩ সালে সিলেটে যেখানে বিয়ে রেজিস্ট্রেশন হয়েছিল ১৪ হাজার ৭৬০টি, সেখানে গত বছর রেজিস্ট্রেশন হয়েছে ১৮ হাজার ১১২টি বিয়ে। বাল্যবিয়ে বন্ধ করা গেলে সিলেটে মাতৃ ও শিশু মৃত্যুর হারও কমানো সম্ভব বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
বাল্যবিয়ে পড়ানো প্রসঙ্গে সিলেট জেলা কাজী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক কাজী জয়নুল ইসলাম মুনিম সংবাদমেইলকে বলেন, আগে না বোঝে অনেক কাজী বাল্যবিয়ে পড়াতেন। এখন কাজীরাও অনেক সচেতন। সিলেটে এখন কোন কাজী বাল্যবিয়ে নিবন্ধন করেন না। বাল্যবিয়ের সংবাদ পেলে কাজীরা উল্টো তা প্রশাসনকে অবগত করেন।
বাল্যবিয়ে মুক্ত সিলেট ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছেন সিলেটের সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা। এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড এন্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট) সিলেটের সভাপতি এডভোকেট ইরফানুজ্জামান চৌধুরী সংবাদমেইলকে বলেন, বাল্যবিয়ে মুক্ত সিলেট ঘোষণাকে কার্যকর রাখতে হলে শহরের চেয়ে গ্রামের মানুষকে বেশি সচেতন করতে হবে। গ্রামের মানুষকে বাল্যবিয়ের কুফল সম্পর্কে বোঝানো গেলে বাল্যবিয়ে মুক্ত সিলেট গড়ে তোলা কষ্টসাধ্য ব্যাপার হবে না।
এ ব্যাপারে সিলেটের জেলা প্রশাসক জয়নাল আবেদীন সংবাদমেইলকে বলেন, বাল্যবিয়ের নেতিবাচক দিক সম্পর্কে জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে জেলা প্রশাসন দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে আসছে। মানুষের মধ্যে যে সচেতনতা সৃষ্টি হয়েছে তা ধরে রাখা গেলে সিলেটকে বাল্যবিয়েমুক্ত রাখা সম্ভব হবে। এখন থেকে বাল্যবিয়ের কোন খবর পাওয়া গেলে শুধু তা প্রতিরোধ নয়, সংশ্লিষ্টদের কোমরে দঁড়ি বেধে পুলিশ পর্যন্ত নিয়ে আসা হবে। বাল্যবিয়ের সাথে সংশ্লিষ্ট কাউকে ছাড় দেয়া হবে না।
সংবাদমেইল২৪.কম/বা/নাশ
Posted ১১:৪১ পূর্বাহ্ণ | বুধবার, ০৯ নভেম্বর ২০১৬
সংবাদমেইল | Nazmul Islam
.
.