
বিনোদন ডেক্স,সংবাদমেইল২৪.কম | মঙ্গলবার, ২০ ডিসেম্বর ২০১৬ | প্রিন্ট
ছবি: সংগৃহীত
ঢাকাই ছবির শীর্ষ নায়ক শাকিব খান। প্রায় এক যুগ ধরে ঢাকাই ছবিতে রাজত্ব করে আসছেন। দেশি-বিদেশি নতুন নায়কদের আগমনে শাকিব খানের রাজত্ব যখন নড়বড়ে হয়ে যাচ্ছিল ঠিক তখনই তার হাতে আসে বেশকিছু ভিন্ন মাত্রার ছবি। ফলে বরাবরের মতো ২০১৬ সালেও বহাল তবিয়তে আছেন এই ঢাকাই কিং।
এ বছরের মুক্তিপ্রাপ্ত ৮টি ছবির তিনটিই হয়েছিল হিট। বাকি ৫টি ছবিও ছিল ব্যবসাসফল। তবে আগের বছরগুলোর তুলনায় এ বছর শাকিব খানের অবস্থান আরও শক্তিশালী হয়েছে। একক রাজত্বে শাকিব খানের এ শক্তি বৃদ্ধির পেছনে অবশ্যই যৌথ-প্রযোজনার ছবির অবদানই বেশি।
শাকিব খানের ২০০১৬ শুরু হয় ‘রাজা ৪২০’ ছবি দিয়ে। উত্তম আকাশ পরিচালিত এ ছবিতে তার নায়িকা ছিলেন অপু বিশ্বাস। ৫ ফেব্রুয়ারি মুক্তিপ্রাপ্ত এ ছবিতে আগের চিরচেনা শাকিবকেই দেখেছে দর্শক। তার মাঝে তেমন কোন নতুনত্ব ছিল না বলেই চলে। তবে শাকিব খানের ছবি হিসেবে এ ছবিটির ব্যবসা একেবারে খারাপ বলা যায় না।
৮ এপ্রিল মুক্তি পায় শাকিব খান ও জয়া আহসান অভিনীত ‘পূর্ণদৈর্ঘ্য প্রেম কাহিনি-২’। এ ছবিটি ব্যবসায়িকভাবে সফল হলেও দর্শকের মন জয় করতে পারেনি পুরোপুরি। কারণ এর আগের সিকুয়্যাল আরও ভালো হওয়ায় দর্শকের চাহিদা মিটাতে ব্যর্থ হয়েছেন পরিচালক সাফি উদ্দিন সাফি। তবে বছরের আলোচিত ছবির তালিকায় অবশ্যই ঠাঁই পেয়েছিল ‘পূর্ণদৈর্ঘ্য প্রেম কাহিনি-২’।
৭ জুলাই, ঈদুল ফিতরের দিন মুক্তি পায় শাকিব খান ও শ্রাবন্তী অভিনীত ‘শিকারি’। দুই বাংলার যৌথ প্রযোজনার এ ছবিটি পাল্টে দেয় শাকিব খানের সমস্ত হিসেব নিকেশ। এ ছবি মুক্তির পরপরই শাকিব খান তার নির্দিষ্ট গণ্ডির বাইরেও দর্শকের দেখা পান। ফলে শাকিব খানকে নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে যেসব নিন্দামন্দ কথা প্রচলিত ছিল সেসবে ভাটা পড়ে। নতুন লুকে নতুন এক শাকিব খানের আবির্ভাবের ঘটনাটা সত্যিই চলচ্চিত্র জগতে প্রভাব ফেলে। শাকিব খানের নিয়মিত পরিচালকরাও ভাবতে থাকেন নতুন শাকিবকে নিয়ে। অপরদিকে শাকিব খানও নিজেকে আবিস্কার করতে পেরেছেন বলে মনে করেন চলচ্চিত্র বোদ্ধারা। শাকিব খান নিজেও ঘোষণা দেন যেনতেন ছবিতে আর অভিনয় করবেন না। ‘শিকারি’ সুপারহিট হওয়ায় পশ্চিমবঙ্গেও কদর বেড়ে যায় এ নায়কের। সবমিলিয়ে ‘শিকারি’ শাকিব খানকে করে তুলেছে আরও শক্তিশালী।
৭ জুলাই শাকিব অভিনীত আরও দুটি ছবি মুক্তি পায় ‘সম্রাট’ ও ‘মেন্টাল’। মুহাম্মদ মোস্তফা কামাল রাজ পরিচালিত ‘সম্রাট’ ছবিতে শাকিবের লুকেও ছিল নতুনত্ব। বলা যায় রাজই প্রথম শাকিব খানকে নতুন লুকে হাজির করেন দর্শকদের সামনে। কারণ সম্রাটের শুটিং শুরু হয়েছিল ‘শিকারি’ ছবির শুটিংয়েরও বহু আগে। ওদিকে শামীম আহমেদ রনি পরিচালিত ‘মেন্টাল’ ছবিতেও শাকিবের লুকে বৈচিত্র্য আনা হয়। ছবিটি গল্পের অসামাঞ্জস্যতার কারণে ব্যবসা না করতে পারলেও দর্শকের উপরি পাওনা ছিল শাকিব খানের ভিন্ন ধরনের লুক।
মাস দুয়েক পরে ঈদুল আজহায় মুক্তি পায় শাকিব অভিনীত আরও দুই ছবি। শামীম আহমেদ রনি পরিচালিত ‘বসগিরি’ ও রাজু চৌধুরী পরিচালিত ‘শুটার’। এ দুটি ছবিতে তার নায়িকা ছিলেন নবাগত বুবলী। ‘বসগিরী’ মোটামোটি ব্যবসা করলেও বক্স অফিসে থুবড়ে পড়ে ‘শুটার’। নিম্ন মানের নির্মাণই এর জন্য দায়ী বলে মন্তব্য করেছেন চলচ্চিত্র সমালোচকরা।
বছরের শেষে ৯ ডিসেম্বর মুক্তি পায় শাকিব অভিনীত ‘ধুমকেতু’। শফিক হাসান পরিচালিত এ ছবিতে শাকিব খানের নায়িকা ছিলেন পরী মনি। তবে ছবিটি সেভাবে আলো জ্বালাতে পারেনি।
শাকিব খানের আটটি ছবির হিসেব নিকেশ থেকে এটা স্পষ্ট যে, শাকিব খানকে যে ছবিগুলোতে ভিন্ন লুকে, ভিন্ন নির্মাণে উপস্থাপন করা হয়েছে সে ছবিগুলোই ব্যবসা সফল হয়েছে। এ কারণে নিম্নরুচির ছবি করার কারণে শাকিব খান যখন সমালোচিত হচ্ছিলেন তখন ‘শিকারি’,‘সম্রাট’,‘বসগিরি’ ‘পূর্ণ দৈর্ঘ্য প্রেম কাহিনি’ ছবিগুলো তাকে দিয়েছে অন্য মর্যাদা। এ ছবিগুলোতে শাকিব খানকে তুলে ধরা হয়েছে আরও শক্তিশালীরূপে। এ কারণে শাকিব খানের হাতে আসে আরও বেশকিছু ভালো মানের ছবি। এপার-ওপার মিলিয়ে শাকিবের আগামী বছরটাও ভালোই যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ফলে ২০১৬তে একক রাজত্বে আরও শক্তিশালী হয়ে উঠলেন এই ঢালিউড তারকা।
সংবাদমেইল২৪.কম/এসএ/এসএসকে
Posted ৪:৫৯ অপরাহ্ণ | মঙ্গলবার, ২০ ডিসেম্বর ২০১৬
সংবাদমেইল | Nazmul Islam
.
.