সোমবার ২৯ মে, ২০২৩ | ১৫ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩০

শেষ বলে হেরে গেল বাংলাদেশ

স্পোর্টস ডেস্ক : | মঙ্গলবার, ২৩ নভেম্বর ২০২১ | প্রিন্ট  

শেষ বলে হেরে গেল বাংলাদেশ

নাটকীয়তায় ভরা তীব্র প্রতিদ্বন্দিতাপুর্ন ম্যাচে শেষ পর্যন্ত পাকিস্তানের কাছে হেরে গেল বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। সোমবার (২২ নভেম্বর) সিরিজের তৃতীয় ম্যাচ জিততে শেষ বল পর্যন্ত পাকিস্তানকে টেনে নিয়ে গিয়েছিল বাংলাদেশের বোলাররা। কিন্তু নাটকীয় শেষ ওভারে শেষ বলে ৫ উইকেটে হেরে ৩-০ তে হোয়াইটওয়াশ হলো বাংলাদেশ। এই সিরিজ জিতে টি-টোয়েন্টি র‍্যাংকিংয়ে ভারতকে পেছনে ফেলে দ্বিতীয় স্থানে উন্নীত হল পাকিস্তান।
জয়ের জন্য শেষ ওভারে পাকিস্তানের প্রয়োজন ছিলো ৮ রান। এমন পরিস্থিতিতে নিজেই বোলিং করতে আসলেন টাইগার অধিনায়ক। শুরুর দুই বলেই তুলে নিলেন দুই অভিজ্ঞ পাকিস্তানি ব্যাটার সরফরাজ ও হায়দার আলীকে। এরপর হ্যাটট্রিক বলে খেয়ে বসলেন ছক্কা। পরের বলেই তুলে নিলেন আরেকটি উইকেট। তখন বাংলাদেশও জয়ের আশা দেখলো। শেষ বলে দরকার দুই রান। কিন্তু মাহমুদউল্লাহ বল ছোড়ার পর দুই হাত তুলে বল ছেড়ে দেন মোহাম্মদ নওয়াজ। আম্পায়ারের অনেক পেছন থেকে বল ডেলিভারি করেন বাংলাদেশি বোলার। বল স্টাম্পে আঘাত করলেও তা অবৈধ ঘোষণা হয়। শেষ বলে চার মারেন নওয়াজ। এই বিতর্ক ও নাটকীয়তায় বাংলাদেশেরই হারেই শেষ হলো গল্প।
১২৪ রান তাড়ায় নেমে পাকিস্তানের শুরুটা হয়েছিল ধীরগতির। পেসারদের বদলে শেখ মেহেদিকে দিয়ে বোলিং শুরু করে বাংলাদেশ। রান তুলতে বেশ ধুঁকতে হয়েছে অতিথিদের। প্রথম তিন ওভারে আসে মাত্র ৯ রান। নিজের দ্বিতীয় ওভার করতে এসে বাবরের শট হাতে লাগায় মাঠ ছাড়তে হয় তাসকিন আহমেদকে। বাকি পাঁচ বল করেন নাহিদুল। ৭ম ওভারে টাইগারদের প্রথম সাফল্য এনে দেন আমিনুল ইসলাম বিপ্লব। তার বলে মোহাম্মদ নাঈমের তালুবন্দি হন ২৫ বলে ১৯ রান করা পাকিস্তান অধিনায়ক বাবর আজম। দলীয় ৩২ রানে পাকিস্তান প্রথম উইকেট হারায়। উইকেটে আসেন হায়দার আলী। ১০ ওভারে পাকিস্তান তোলে ৪৬ রান। একাদশ ওভারে মাঠে ফিরে ফের বোলিং করেন তাসকিন।
কঠিন উইকেটে হাত খোলার চেষ্টা করছিলেন রিজওয়ান আর হায়দার। তাদের ব্যাটে ঘুরতে থাকে রানের চাকা। ১৬তম ওভারের প্রথম বলে ৪৩ বলে ২ চার ১ ছক্কায় ৪০ রান করা রিজওয়ানকে বোল্ড করে দেন অভিষিক্ত শহিদুল। উইকেটে আসেন অভিজ্ঞ সরফরাজ আহমেদ। হায়দারের সৌজন্যে ওই ওভারে দুটি ছক্কা হজম করতে হয় শহিদুলকে। ওভার থেকে আসে ১৬ রান। হাত খুলে দ্রুত রান তুলতে থাকেন হায়দার। শেষ ওভারে দরকার হয় ৮ রানের। ইনিংসে প্রথমবার বোলার হিসেবে আসেন অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ।
প্রথম বলে কোনো রান হয়নি। দ্বিতীয় বলে উড়িয়ে মারতে গিয়ে ক্যাচ দেন সরফরাজ আহমেদ (৬)। তৃতীয় বলে আবার উইকেট। ৩৮ বলে ৩ চার ২ ছক্কায় ৪৫ করা হায়দার আলী নাজমুল হোসেন শান্তর তালুবন্দি হন। চতুর্থ বলটি স্ট্রেইট ড্রাইভে ছক্কা মারেন ইফতেখার। পঞ্চম বলে ইফতেখার আবারও উড়িয়ে মারতে গিয়ে ইয়াসির আলীর তালুবন্দি হন। শেষ বলটি মাহমুদউল্লাহ ডেলিভারি করার পর হঠাৎ সরে যান ব্যাটার নওয়াজ। বল স্টাম্পে লাগলেও আম্পায়ার ডেড বল ঘোষণা করেন। পরে মাহমুদউল্লাহও বল করতে এসে শেষ পর্যন্ত বল না ছেড়ে একই কাণ্ড ঘটান। শেষ বলে বাউন্ডারি মেরে পাকিস্তানের জয় নিশ্চিত করেন নওয়াজ। অন্যদিকে ১ ওভার বল করে ১০ রানে ৩ উইকেট নিয়েও বাংলাদেশকে জেতাতে পারেননি মাহমুদউল্লাহ।
এর আগে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ১২৪ রান তোলে বাংলাদেশ। ব্যাট হাতে সতর্ক শুরু করেন শেখ নাঈম এবং তিন নম্বর থেকে ওপেনিংয়ে প্রমোশন পাওয়া নাজমুল হোসেন শান্ত। দ্বিতীয় ওভারের প্রথম বলে শাহনেওয়াজ দাহানিকে বাউন্ডারি মারা শান্ত পরের বলেই বোল্ড হয়ে যান। তার সংগ্রহ ৫ বলে ৫ রান। দলীয় ৭ রানে প্রথম উইকেট হারায় বাংলাদেশ। তিন নম্বরে নামেন শামীম হোসেন। চতুর্থ বলে বাউন্ডারি্ও হাঁকান। শাহনেওয়াজের করা ফিরতি ওভারে তার ব্যাট থেকে আসে জোড়া বাউন্ডারি। বিপরীতে নাঈম ছিলেন ধীরগতির।
এই জুটিতে যখন আশার আলো দেখছিল বাংলাদেশ, তখনই ছন্দপতন। পাকিস্তানের কিংবদন্তি লেগ স্পিনার উসমান কাদিরের করা ৮ম ওভারের দ্বিতীয় বলে শামীম ধরা পড়েন ইফতেখার আহমেদের হাতে। শামীম ফিরেন ২২ বলে ৪ বাউন্ডারিতে ২২ রান করে। ৩৭ রানে দ্বিতীয় উইকেট হারায় বাংলাদেশ। নতুন ব্যাটসম্যান হিসেবে আসেন আফিফ। ১০ম ওভারে উসমান কাদিরকে বাউন্ডারি মেরে হাত খোলেন নাঈম। এরপর আফিফের থেকেও ছক্কা হজম করেন কাদির। ১০ ওভারে বাংলাদেশ করে ৫২ রান।
১৩তম ওভারে নাঈমের বিপক্ষে লেগ বিফোরের আবেদন আম্পায়ার নাকচ করলে রিভিউ নিয়েও ব্যর্থ হয় পাকিস্তান। ২১ বলে ২০ রান করা আফিফের বিদায়ে তৃতীয় উইকেটের পতন। ব্যাট হাতে আসেন অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ। ১৭তম ওভারে বাংলাদেশের স্কোর তিন অংক স্পর্শ করে। ১৯ তম ওভারে মোহাম্মদ ওয়াসিমের বলে কট অ্যান্ড বোল্ড হয়ে যান মোহাম্মদ নাঈম। তিনি ৫০ বলে ২ চার ২ ছক্কায় ৪৭ রানের ধীরগতির ইনিংস খেলেন।
একই ওভারের শেষ বলে ক্যাচ দিয়ে ফিরেন বাউন্ডারি মেরে রানের খাতা খোলা সোহান। হারিস রউফের করা শেষ ওভারের প্রথম বলে ছক্কা মারতে গিয়ে সীমানায় ধরা পড়েন ১৪ বলে ১৩ রান করা মাহমুদউল্লাহ। শেষ বলে দুই ব্যাটার একপ্রান্তে চলে আসায় রান-আউট হয়ে যান আমিনুল ইসলাম (৩)। শেখ মেহেদি অপরাজিত থাকেন ৩ বলে ১ চারে ৫ রানে। বাংলাদেশের স্কোর দাঁড়ায় ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ১২৪ রান। ২টি করে উইকেট নিয়েছৈন মোহাম্মদ ওয়াসিম আর উসমান কাদির। ১টি করে নিয়েছেন শাহনেওয়াজ আর হারিস রউফ। বিশ্বকাপ ও পাকিস্তান সিরিজ মিলিয়ে শর্টার ফরম্যাটে টানা আট ম্যাচ হেরেছে বাংলাদেশ। এর আগে ২০১৬-১৭ মৌসুমে টানা আট টি-টোয়েন্টি হারে টাইগাররা। আজ (সোমবার) সেই রেকর্ড ছুঁয়ে ফেলেছে মাহমুদউল্লাহর দল। এটি বাংলাদেশের টানা হারের রেকর্ড নয়। ২০০৭-২০১০ মৌসুমে টানা ১২ টি-টোয়েন্টিতে হেরেছে বাংলাদেশ।

Facebook Comments Box


Comments

comments

advertisement

Posted ৭:৫৬ পূর্বাহ্ণ | মঙ্গলবার, ২৩ নভেম্বর ২০২১

সংবাদমেইল |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

এ বিভাগের আরও খবর

সম্পাদক ও প্রকাশক : মো. মানজুরুল হক

নির্বাহী সম্পাদক: মো. নাজমুল ইসলাম

বার্তা সম্পাদক : শরিফ আহমেদ

কার্যালয়
উপজেলা রোড, কুলাউড়া, মেলভীবাজার।
মোবাইল: ০১৭১৩৮০৫৭১৯
ই-মেইল: sangbadmail2021@gmail.com

sangbadmail@2016 কপিরাইটের সকল স্বত্ব সংরক্ষিত