চলতি বছর শান্তিতে নোবেল পেলেন দুইজন সাংবাদিক। একজন ফিলিপিন্সের মারিয়া রেসা। অপরজন রাশিয়ার দিমিত্রি আন্দ্রেইভিচ মুরাতভ। নরওয়ের নোবেল কমিটি শুক্রবার অসলোতে এক সংবাদ সম্মেলনে ১০২তম নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য তাদের নাম ঘোষণা করে। মতপ্রকাশের স্বাধীনতার পক্ষে সাহসী লড়াইয়ের স্বীকৃতি হিসেবে মারিয়া রেসা ও দিমিত্রি মুরাতভ এ পুরস্কারে ভূষিত হলেন। খবর বিবিসি ও আলজাজিরা অনলাইনের।
১৯৩৫ সালের পর এই প্রথম শান্তিতে নোবেল পেলেন কোন সাংবাদিক। ১৯৩৫ সালে জার্মান সাংবাদিক কার্ল ফন অসিয়েতস্কি শান্তিতে নোবেল পান। মারিয়ার ক্ষেত্রে নরওয়েজিয়ান নোবেল কমিটি বলেছে, তিনি তাঁর জন্মস্থান ফিলিপিন্সে ক্ষমতার অপব্যবহার, সহিংসতা ও দেশটিতে ক্রমেই বেড়ে চলা কর্তৃত্ববাদের বিরুদ্ধে মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে শক্তহাতে ব্যবহার করছেন। পুরস্কারের অর্থ দুজনের মধ্যে ভাগ করে দেয়া হবে। মারিয়া রেসার জন্ম ১৯৬৩ সালের ২ অক্টোবর ফিলিপিন্সের ম্যানিলায়। ১৯৬১ সালে রাশিয়ার সামরায় জন্মগ্রহণ করেন দিমিত্রি মুরাতভ। মারিয়া রেসা ফিলিপিন্সের অনলাইন নিউজ পোর্টাল র্যাপলার-এর সহপ্রতিষ্ঠাতা। এর আগে তিনি সিএনএনের হয়ে দক্ষিণপূর্ব এশিয়ায় দুই দশক অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা করেছেন। দিমিত্রি মুরাতভ রুশ সংবাদপত্র নোভায়া গ্যাজেটের এডিটর ইন চীফ। এই সংবাদপত্রটিকে অনেকেই রাশিয়ার প্রকৃত সমালোচক সংবাদমাধ্যম মনে করে। নোবেল কমিটির প্রধান বেরিট রেইস-এ্যান্ডারসেন বলেন, বিশ্বে গণতন্ত্র আর সংবাদপত্রের স্বাধীনতা ক্রমেই হুমকির মুখে পড়ছে। তার বিপরীতে দাঁড়িয়ে যারা এসব আদর্শের জন্য লড়াই করে চলেছেন, সেই সকল সাংবাদিকের প্রতিনিধিত্ব করছেন মারিয়া রেসা ও দিমিত্রি মুরাতভ। চলতি বছর নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য ৩২৯ জন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের মনোনয়ন পেয়েছিল নোবেল কমিটি। এবারের পুরস্কারের জন্য যাদের নাম এসেছিল, তাদের মধ্যে পরিবেশ আন্দোলন কর্মী গ্রেটা থুনবার্গ, অধিকার সংগঠন রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডারস এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নামও ছিল। এ বছর সাহিত্যে নোবেল পান ভারত মহাসাগরের বিচ্ছিন্ন দ্বীপ জানজিবারের শরণার্থী, বর্তমানে ব্রিটিশ নাগরিক আবদুল রাজাক গুরনাহ। শরণার্থী জীবনের টানাপোড়েন ও ঔপনিবেশিকতার প্রভাব নিজের লেখায় আপসহীন এবং সহানুভূতিশীল ভঙ্গিতে উপস্থাপন করেছেন তিনি। প্যারাডাইস নামে চতুর্থ উপন্যাস তাকে বিশ্বজুড়ে খ্যাতি এনে দেয়। বৃহস্পতিবার স্টকহোমে সুইডিশ একাডেমি সাহিত্যে নোবেল বিজয়ীর নাম ঘোষণার বিবৃতিতে আবদুল রাজাকের সাহিত্যকর্ম সম্পর্কে এসব বর্ণনা করে। তার জন্ম ১৯৪৮ সালে। তিনি বেড়ে ওঠেন জানজিবার দ্বীপে। তানজানিয়ার একটি বিচ্ছিন্ন স্বায়ত্তশাসিত দ্বীপ এটি।
অনু গঠনের নয়া কৌশল উদ্ভাবনের কারণে এ বছর রসায়নশাস্ত্রে নোবেল পান জার্মান রসায়নবিদ বেঞ্জামিন লিস্ট ও স্কটিশ বংশোদ্ভূত মার্কিনী ডেভিড ম্যাকমিলান। এ আবিষ্কার ওষুধ শিল্পে বিপ্লব ঘটাতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত জটিলতা নিয়ে গবেষণার জন্য এ বছর পদার্থ বিজ্ঞানে নোবেল পান তিন গবেষক। তারা হলেন জাপানী বংশোদ্ভ‚ত মার্কিন নাগরিক স্যুকুরো মানাবে, জার্মান বিজ্ঞানী ক্লাউস হেসেলমান এবং ইতালির বিজ্ঞানী জর্জিও পারিসি। ১১ অক্টোবর অর্থনীতিতে নোবেল বিজয়ীর নাম ঘোষণা করা হবে।
Comments
comments
Posted ২:৩৪ পূর্বাহ্ণ | শনিবার, ০৯ অক্টোবর ২০২১
সংবাদমেইল | Nazmul Islam