
স্পোর্টস রিপোর্টার, সংবাদমেইল২৪ডটকমঃ | রবিবার, ২০ নভেম্বর ২০১৬ | প্রিন্ট
এক সময় নগর প্রতিদ্বন্দ্বী অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদকে ঘোষণা দিয়ে হারাত রিয়াল মাদ্রিদ। তবে গত কয়েক বছরে ওই সমীকরণটা পুরোপুরি বদলে গিয়েছিল। লিগে দু দলের শেষ ছয় ডার্বিতে জয়হীন ছিল সর্বাধিক ১১বার ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নের মুকুট পাওয়া ক্লাবটি। এর মধ্যে চারবার হার মানে মাদ্রিদের অভিজাতরা, দুবার ড্র করে। শনিবারসীয় দ্বৈরথে দুর্দান্ত এক হ্যাটট্রিক করে লস ব্লাঙ্কোসদের জন্য গেরো হয়ে ওঠা সেই দুঃখটা ঘুচিয়ে দিয়েছেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো। আর তাতেই দাবার পাশা উল্টিয়ে প্রতিপক্ষ অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের মাঠ ভিসেন্ত ক্যালদেরনে গিয়ে ০-৩ ব্যবধানে জয় পায় রিয়াল।
প্রশান্তির জয়ের দিনে ৫৬ বছর অক্ষত থাকা পুরনো একটা রেকর্ডও ভেঙেছেন রোনালদো। ১৯৬০ সালে লস ব্লাঙ্কোসদের আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড আলফ্রেড ডি স্টেফানো ডার্বি ম্যাচে সর্বাধিক ১৭ গোল করার নজির স্থাপন করেছিলেন। ক্যারিয়ারের ৩৯তম হ্যাটট্রিকে তা মাড়িয়ে গেছেন পর্তুগাল ইন্টারন্যাশনাল। ডার্বিতে এই মুহূর্তে তার গোলের সংখ্যা ১৮টি।
কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে- ‘অবধ্য’ প্রতিপক্ষকে কীভাবে ঘায়েল করলেন জিনেজিদ জিদান? আর কীভাবেই বা মার খেল ডিয়াগো সিমিওনের উর্বর মস্তিষ্কের পরিকল্পনা? ফুটবল বিশ্লেষকরা বলছেন কেবল একটা পরিবর্তনেই প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করেছেন রিয়াল মাদ্রিদ ম্যানেজার। এমনিতে সবসময় ৪-৪-২ ফরমেশনে মাঠে নামে সান্টিয়াগো বার্নাব্যুর অধিবাসীরা। তাতে বাম উইংয়ে খেলে থাকেন রোনালদো, ডানে লুকাস ভাসকুয়েজ; মাঝখানে সেন্ট্রাল ফরোয়ার্ড হিসেবে গ্যারেথ বেল। কিন্তু ভিসেন্ত ক্যালদেরনে ওই প্রথা ভেঙে ৪-৪-১-১ ফরমেশনে মাঠে নামে সফরকারীরা। তাতে সেন্ট্রাল ফরোয়ার্ডের দায়িত্ব পান সিআরসেভেন। জিদানের এই ফাটকাটা ভালোভাবে কাজে লেগেছে।
এদিন খেলার ২৩ মিনিটে রিয়ালের প্রথম গোলটি ভাগ্যপ্রসূত। অ্যাটলেটিকোর ডি বক্সের ২৫ গজ দূর থেকে ফ্রি-কিক নেন রোনালদো। তা স্বাগতিক দলের ডিফেন্ডার স্তেফান সাভিচের গায়ে লেগে দিক পাল্টে ফেলে। তাতে পরাস্ত হন ইয়ান ও’বালাক। ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে যায় সফরকারীরা। প্রথমার্ধে আর কোনো গোল হয়নি। বিরতি থেকে ফিরে সমতায় ফিরতে মরিয়া হয়ে ওঠে অ্যাটলেটিকো। খেলা রি-স্টাটের প্রথম পাঁচ মিনিটেই দুটি ভালো আক্রমণ শানায় তারা। ২০ গজ দূর থেকে বেলজিয়ান তারকা ইয়ানিক কারাসকোর জোরালো শট লক্ষ্যভ্রষ্ট হওয়ার দুই মিনিট পর গোলমুখে পাস দেন অ্যান্টোনিও গ্রিজমান। কিন্তু বলে আলতো ছোঁয়া দেওয়ার মতো কেউ ছিল না সেখানে।
এরপর আস্তে আস্তে আবারও খেলার রাশ ধরে রিয়াল, ৭১ মিনিটে গিয়ে তার ফলও পায়। এই সময় আগুয়ান রোনালদোকে রুখতে ব্যর্থ হয়ে ফাউল করে বসেন প্রতিপক্ষ দলের ডিফেন্ডার সাভিচ। তাতে পেনাল্টির বাঁশি বাজিয়ে দেন রেফারি। স্পট কিক থেকে গোল তুলে নিতে কোনো ভুল করেননি গোলশিকারী পর্তুগিজ মহাতারকা। এর ছয় মিনিট পর হ্যাটট্রিকও পূর্ণ হয় তার। প্রতিপক্ষের বক্সের বাম প্রান্ত থেকে গ্যারেথ বেল একটি বল বাড়িয়েছিলেন। সেই বলটিতে একটু হাওয়া লাগিয়ে ক্যারিয়ারের ৩৯তম হ্যাটট্রিকটি পূর্ণ করেন তিনবারের ফিফা বর্ষসেরা ফুটবলার। তাতে টানা দ্বিতীয় ম্যাচে পরাজিত হতে হয় রোজেনারিদের। তাছাড়া ২০১১ সালের ডিসেম্বরে সিমিওনে অ্যাটলেটিকোর দায়িত্ব নেওয়ার পর এই প্রথম টানা পাঁচ ম্যাচ গোল হজম করতে হয়েছে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের রানার্সআপদের। ফলে চিন্তা বাড়ছে আর্জেন্টাইন মগজাস্ত্রের।
এদিকে দ্বাদশ রাউন্ডের জয়ের পর স্প্যানিশ লা লিগার পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষস্থানে আরো জকিয়ে বসেছে রিয়াল। ১২ ম্যাচে ৩০ পয়েন্ট তাদের। সমান সংখ্যক ম্যাচে চার পয়েন্ট পিছিয়ে দ্বিতীয় স্থানে থাকা বার্সেলোনা। যারা দিনের শুরুতে ঘরের মাঠে মালাগার কাছে গোলশূন্যভাবে আটকে যায়। ১২ ম্যাচে ২৪ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের তিন নম্বরে সেভিয়া। অন্যদিকে ২২ পয়েন্ট নিয়ে চারে ভিয়ারিয়াল; আর ২১ পয়েন্ট নিয়ে সেরা পাঁচের শেষ প্রতিনিধি অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ।
সংবাদমেইল২৪.কম/এন আই/এনএস
Posted ৯:৫২ পূর্বাহ্ণ | রবিবার, ২০ নভেম্বর ২০১৬
সংবাদমেইল | Nazmul Islam
.
.