বিশেষ প্রতিনিধি,সংবাদমেইল২৪.কম | মঙ্গলবার, ২০ ডিসেম্বর ২০১৬ | প্রিন্ট
ঢাকা: ময়মনসিংহের মুক্তিযোদ্ধা সুজাত আলী। মেয়ের চাকরির জন্য চেষ্টা করছেন। সরকারি একটি পদে আবেদনও করেছেন তার মেয়ে। কিন্তু চাকরিটার হবে কি হবে না তা নিয়ে শঙ্কা। আর শঙ্কা থেকেই তার একটু দৌড়ঝাঁপ। সোজা চলে এসেছেন ঢাকায়। একটি জায়গাতো আছে তার- মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়।
সম্প্রতি মন্ত্রণালয়ে কথা হয় জাতির এই সূর্য সন্তানের সঙ্গে। সকালেই সোজা চলে এসেছেন রাজধানীর সচিবালয় সংলগ্ন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে।
পরিচয় দিয়ে জানতে চাইলাম মন্ত্রীর সঙ্গে সময় নিয়ে এসেছেন কি না? বললেন, “সময় নিয়ে আসতে হবে কেন। আপনি জানেন না, এই মন্ত্রণালয় আমাদের জন্য। এখানে আসতে আমাদের কোনো অনুমতি লাগে না। লাগে না অ্যাপয়নমেন্ট। মন্ত্রীর রুমেও আমরা অবাধে যেতে পারি। একটু অপেক্ষা করেন, দেখতে পারবেন।”
কথাগুলো শুধু যে সুজাত আলীর তা নয়। সুজাত আলীর মতো হাজারো মুক্তিযোদ্ধার আশা ভালোবাসার স্থান এই মন্ত্রণালয়। সেখানে তারা আসতে পারেন, নিজের অনুরোধ নিয়ে কথা বলতে পারেন। সহায়তা চাইতে পারেন। আবেগে ফেলতে পারেন চোখের পানি।
সরেজমিনে মন্ত্রণালয়টিতে কয়েকদিন গিয়ে দেখা গেছে, মুক্তিযোদ্ধাদের নির্ভয়ে চলার স্থান যেন মন্ত্রণালয়। আর মন্ত্রী আ ক ম মোজ্জামেল হকের ব্যক্তিগত অফিস কক্ষটি যেন দেশের লাখো মুক্তিযোদ্ধার আবেগের জায়গা। আশ্রয়ের জায়গা।
মন্ত্রী যতক্ষণ অফিসে থাকেন, তার দরজা খোলা থাকে জাতির সূর্য সন্তানদের জন্য। প্রবেশে লাগে না অনুমতি। নেই ব্যক্তিগত কর্মকর্তা বা পুলিশের বাধার ঘটনা।
আর পুরো মন্ত্রণালয়ের পরিবেশটাও যেন একই। মন্ত্রী যেন একটু বেশিই ভালোবাসেন মুক্তিযোদ্ধাদের। তাই দলবেঁধে মুক্তিযোদ্ধারা অভিযোগ, অনুরোধ নিয়ে যেতে পারেন তার কক্ষে।
আর মোজ্জামেল হকও একে একে শোনেন সবার কথা। তাদের জমা দেয়া আবেদনগুলো আলাদাভাবে দেখেন। সুরাহা দেন। যার যেমন চাওয়া, চেষ্টা করেন তেমনভাবেই সহায়তা করতে।
তাইতো সুজাত আলী মেয়ের চাকরির আবেদনে পেয়ে যান মন্ত্রীর লিখিত সুপারিশ। আবার নাটোরের তারা সরকারের মিলে যায় ভাতা সংক্রান্ত জটিলতার সুরাহা।
পাশেই প্রশাসনের প্রাণকেন্দ্র সচিবালয়ে প্রবেশে যতটা কড়াকড়ি। ঠিক তার উল্টা চিত্রে চলে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে।
জানতে চাইলে আ ক ম মোজাম্মেল হক সম্প্রতি বলেন, “আমি এখানে এসেছি আমার ভাই-বোন জাতির বীরদের সেবা দিতে। তাদের অসম্মান করতে পারি না। তাই আমার এখানে প্রবেশে কোনো বাধা নেই। আমি সেভাবেই নির্দেশনা দিয়ে রেখেছি।”
মন্ত্রণালয়ের সচিব এম এ হান্নান বলেন, “আমাদের মন্ত্রণালয়ের সেবার ধরন সরকারের অন্য যে কোনো সংস্থার চেয়ে বেশি সহায়তাপূর্ণ। আমরা সব সময় চেষ্টা করি, মুক্তিযোদ্ধাদের যাতে কোনোভাবেই ন্যূনতম অসম্মান না হয়। তাদের কোনো হয়রানি বা কষ্ট না হয়।”
তিনি জানান, মাননীয় মন্ত্রী মহোদয় মুক্তিযোদ্ধাদের এতোটাই ভালোবাসেন যে, তিনি একটু লম্বা সময় অফিসের বাইরে থাকলে তাও নোটিশ আকারে জানিয়ে দেয়া হয়। যেটা আর কেউ করে না।
সংবাদমেইল২৪.কম/এসএ/এনএস
Posted ৫:১৯ অপরাহ্ণ | মঙ্গলবার, ২০ ডিসেম্বর ২০১৬
সংবাদমেইল | Nazmul Islam
.
.