স্টাফ রিপোর্টার,সংবাদমেইল২৪.কম | শনিবার, ১৯ নভেম্বর ২০১৬ | প্রিন্ট
সমাজসেবক ও স্বদেশি আন্দোলনের নেত্রী ছিলেন মনোরমা বসু। ১৮৯৭ সালের ১৮ নভেম্বর বরিশালের বানারীপাড়ায় জন্ম তার। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার সুযোগ মেলেনি তার।
১১ বছর বয়সে ক্ষুদিরামের আত্মত্যাগে অনুপ্রাণিত হয়ে রাজনীতির প্রতি আকৃষ্ট হন তিনি।
১৪ বছর বয়সে বরিশালের বাঁকাই গ্রামের জমিদার চিন্তাহরণ বসুর সঙ্গে তার বিয়ে হয়।
জমিদারি রক্ষণশীলতা ভেঙে স্বামীর সমর্থন নিয়ে তিনি স্বদেশি আন্দোলনে জড়িয়ে পড়েন। সন্তানদের শিক্ষার জন্য বরিশাল যাওয়ার সুবাদে সেখানে ‘সরোজনলিনী মহিলা সমিতি’ এর শাখা প্রতিষ্ঠা করেন। এবং এর মাধ্যমে নারীদের ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে উদ্বুদ্ধ করেন।
‘সরোজনলিনী মহিলা সমিতি’ বাংলাদেশের প্রথম নারী সংগঠন। ১৯৩০ সালে তিনি কংগ্রেসে যোগ দেন এবং দলের হয়ে আইন অমান্য আন্দোলনে অংশ নিয়ে জেলে যান। চল্লিশের দশকের প্রথম দিকে তিনি কমিউনিস্ট পার্টির সদস্য হন। বরিশালে ‘মহিলা আত্মরক্ষা সমিতি’র নেতৃত্ব দেন।
১৯৪৩-৪৪ সালের দুর্ভিক্ষের সময় তিনি লঙ্গরখানা, চিকিৎসালয় ও পুনর্বাসনের কাজে অংশ নেন। বরিশালের খাদ্য আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয়ার কারণে এক বছর সশ্রম কারাদণ্ড খাটতে হয়। জননিরাপত্তা আইনে আরো তিন বছর কারাভোগের পর ১৯৫২ সালে মুক্তি পান।
১৯৫৪ সালে পূর্ব বাংলার রাজনৈতিক অস্থিরতার সময় তাকে আত্মগোপনে যেতে হয়। ১৯৬২ ও ১৯৬৪ সালের গণ-আন্দোলন ও ১৯৬৯ সালের গণ-অভ্যুত্থানে নারীদের সংগঠিত করার ক্ষেত্রে তার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিলো। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধেও তিনি অগ্রণী ভূমিকা রাখেন।
বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ বরিশাল শাখা তিনিই প্রতিষ্ঠা করেন। অনাথ ও দুস্থ, বিশেষ করে বিধবা ও কুমারী মেয়েদের জন্য তিনি ‘মাতৃমন্দির আশ্রম’ প্রতিষ্ঠা করে আজীবন তা পরিচালনা করেছেন। নিজের সব সম্পত্তিও আশ্রমকে দিয়ে দেন।
এ ছাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়, পাঠাগার ও শিশুদের জন্য ‘মুকুল মিলন খেলাঘর’ গড়ে তোলেন। মানবদরদি এ মানুষটিকে অনেকেই বলতেন ‘মাসিমা’। তার জীবদ্দশায় সত্যেন সেনের ‘মনোরমা মাসিমা’ গ্রন্থটি প্রকাশিত হয়। ১৯৮৬ সালের ১৬ অক্টোবর তিনি মারা যান।
সংবাদমেইল২৪.কম/এন আই/এনএস
Posted ১০:৩৪ পূর্বাহ্ণ | শনিবার, ১৯ নভেম্বর ২০১৬
সংবাদমেইল | Nazmul Islam
.
.