
অনলাইন ডেস্ক : | শনিবার, ২০ নভেম্বর ২০২১ | প্রিন্ট
কানাডার মতো উন্নত দেশে বন্যা-ভূমিধস খুবই বিরল দৃশ্য। কিন্তু সেই প্রাকৃতিক দুর্যোগেই হিমশিম খাচ্ছেন ব্রিটিশ কলাম্বিয়ার নাগরিকরা। গত পাঁচশ বছরের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যা ও ভূমিধসের কবলে পড়েছে কানাডার পশ্চিমাঞ্চল। ঝড় ও রেকর্ড বৃষ্টিপাতে দেশটির পশ্চিমাঞ্চলীয় ব্রিটিশ কলাম্বিয়া প্রদেশে হাজার হাজার ঘরবাড়ি ধসে পড়ার পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে অসংখ্য রাস্তাঘাট। যোগাযোগ ব্যবস্থা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় প্রদেশটিতে অন্তত ১৮ হাজার মানুষ আটকা পড়েছেন। ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনসহ প্রয়োজনীয় সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ট্রুডো।
ভেঙে পড়েছে যোগাযোগব্যবস্থা। বন্যায় কয়েক হাজার গবাদিপশুর মৃত্যু হয়েছে। ভয়াবহ বন্যা ও ভূমিধসের কবলে পড়েছে ব্রিটিশ কলাম্বিয়াসহ বেশ কয়েকটি প্রদেশ। যেদিকে চোখ যায় কেবল ভূমিধস ও ঝড়ের তাণ্ডবের ধ্বংসযজ্ঞ। ভয়াবহ বন্যায় পাহাড়ি ঢলে ভেঙে গেছে মহাসড়ক। ভূমিধসের কারণে ব্যাহত হচ্ছে যোগাযোগব্যবস্থা। তবে বেশ কয়েক জায়গায় ঝুঁকি নিয়েই যানবাহন চলতে দেখা গেছে।
ভয়াবহ বন্যা ও ভূমিধসে এখনো বেশ কয়েকজন নিখোঁজ রয়েছেন। তাদের খোঁজে সর্বাত্মক চেষ্টা চালাচ্ছেন উদ্ধারকর্মীরা। এ ছাড়া আটকে পড়াদের উদ্ধারে হেলিকপ্টারসহ বিমান বাহিনী মোতায়েন করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। হেলিকপ্টারে করে দেওয়া হচ্ছে খাবার ও প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র।
আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমে বলা হচ্ছে, গত পাঁচশ বছরেও এমন দুর্যোগের কবলে পড়েনি কানাডার পশ্চিমাঞ্চলীয় ব্রিটিশ কলাম্বিয়া প্রদেশ। চারদিকে এখন শুধুই ধ্বংসযজ্ঞের চিহ্ন।
হাজারো ঘরবাড়ি ধসের পাশাপাশি ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে রাস্তাঘাটসহ বহু স্থাপনা। ব্রিজ, সেতু, কালভার্টগুলো এখনো পানির নিচে তলিয়ে থাকায় অন্তত ১৮ হাজার বাসিন্দা আটকা পড়েছেন প্রদেশটিতে। তাদের উদ্ধারে কাজ করছে বিমান বাহিনীর সদস্যরা।
ঝড়ের তাণ্ডবে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে কৃষিখাতেও। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন স্থানীয়রা। পরিস্থিতি অবনতি হতে থাকায় প্রদেশটিতে জরুরি অবস্থা জারিসহ সেনা মোতায়েন করেছে সরকার।
কানাডার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কৃষি অঞ্চল ব্রিটিশ কলাম্বিয়ায়। বন্যা ও ভূমিধসে কয়েক হাজার গবাদিপশুর মৃত্যু হয়েছে। এখনো আটকে আছে আরো কয়েক হাজার গবাদিপশু। এখান থেকেই দুধ, ডিম ও পোল্ট্রিসামগ্রী চাহিদার অধিকাংশ জোগান দিয়ে থাকেন খামারিরা। তবে আটকেপড়া গবাদিপশু উদ্ধার ও চিকিৎসায় এরই মধ্যে পশু চিকিৎসদের মোতায়েন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন দেশটির কৃষিমন্ত্রী।
জরুরি পরিবহনসেবা চালু রাখায় বেশ কয়েকটি হাইওয়েতে গাড়ি চলতে দেখা গেছে। এদিকে, খাদ্য, ওষুধসহ ত্রাণসামগ্রী মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে পৌঁছে দিতে সেনাবাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। এছাড়া ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনসহ প্রয়োজনীয় সহায়তার আশ্বাসও দেন তিনি।
জাস্টিন ট্রুডো বলেন, সেনারা ইতোমধ্যেই কাজ শুরু করেছে। অন্তত কয়েকশো মানুষকে নিরাপদে সরিয়ে এনেছে তারা। আশা করি পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত সবাই বাড়িতে থাকবেন। ক্ষতিগ্রস্তদের যতদ্রুত সম্ভব পুনর্বাসনের চেষ্টা করছি।
গত মাসেই দেশটিতে ভয়াবহ দাবানলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিলো বহু স্থাপনা। ক্ষত কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই আবারো আঘাত হানলো স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যা। এমন প্রাকৃতিক দুর্যোগ ঠেকাতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার পরামর্শ পরিবেশবিদদের।
Posted ৪:১৪ পূর্বাহ্ণ | শনিবার, ২০ নভেম্বর ২০২১
সংবাদমেইল | Nazmul Islam
.
.