
অনলাইন ডেস্ক : | শুক্রবার, ২৯ অক্টোবর ২০২১ | প্রিন্ট
পক্ষাঘাতে শয্যাশয়ী চার সন্তানের জননী জাহানুর বেগম (৮০)। অর্থাভাবে চিকিৎসা করাতে পারছেন না তিনি। সম্পত্তিও বিক্রি করতে দিচ্ছে না দুই সন্তান। এমন পরিস্থিতিতে আইনের আশ্রয় নিতে চাচ্ছিলেন তিনি। কিন্তু আদালতে যাওয়ার মতো শারীরিক সক্ষমতা নেই। বিষয়টি জানতে পেরে বিচারক নিজেই বৃদ্ধার বাসায় গিয়ে দুই সন্তানের বিরুদ্ধে দেওয়া মামলা গ্রহণ করেছেন।
২৮ অক্টোবর বৃহস্পতিবার দুপুর ১টার দিকে বরিশাল নগরীর বৈদ্যপাড়া সড়কে জাহানুর বেগমের বাসায় গিয়ে মামলাটি নেন অতিরিক্ত মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতের বিচারক মো. মাসুম বিল্লাহ। তিনি অভিযোগ আমলে নিয়ে বৃদ্ধার ছেলে মোস্তাফিজুর রহমান এবং মেয়ে সাবিনা আক্তারের বিরুদ্ধে সমন জারি করেন। আগামী ১ নভেম্বর সশরীরে তাদের আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। জাহানারা বেগম বর্তমানে ছোট মেয়ে সাহিদা আক্তারের বাসায় অবস্থান করছেন।
বরিশালের সমাজসেবা অধিদপ্তরের কর্মকর্তা সাজ্জাদ পারভেজ জানান, জাহানুর বেগমের পক্ষে একটি নালিশি আবেদন বৃহস্পতিবার সকালে আদালতে পেশ করেন আইনজীবী মো. ফজলুল হক বিশ্বাস। এ সময় বিচারক জানতে চান, ‘আবেদনকারী কেন আদালতে নেই?’ জবাবে আইনজীবী ফজলুল হক জানান, তিনি বাড়িতে শয্যাশয়ী এবং আদালতে আসার মতো সক্ষমতা নেই। এরপর বিচারক বৃদ্ধার বাসায় যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। সমাজসেবা কর্মকর্তা সাজ্জাদ বলেন, এরপর বিচারক দুপুরে আমাকে সঙ্গে নিয়ে জাহানুর বেগমের বাসায় যান। তার জবানবন্দি নিয়ে সমন জারি করেন।
আইনজীবী ফজলুল হক বিশ্বাস জানান, জাহানুর বেগম খুলনায় তার মৃত স্বামীর বসতবাড়িতে থাকতেন। চিকিৎসার ব্যয় বহনে তিনি খুলনার বাড়িটি বিক্রি করতে উদ্যোগী হন। গত ২২ অক্টোবর বরিশালের বাসায় এসে ক্রেতা দরদামও করে যান। কিন্তু তার ছেলে মোস্তাফিজুর রহমান ও মেয়ে সাবিনা আক্তার বাধা হয়ে দাঁড়ান। আবার মায়ের চিকিৎসা খরচ ও ভরণপোষণ দিতেও অস্বীকার করেন।
ফজলুল হক বলেন, বৃদ্ধার অভিযোগের ভিত্তিতে পিতামাতার ভরণপোষণ আইন ২০১৩-এর ৫ ধারা মোতাবেক সন্তান মোস্তাফিজুর রহমান ও সাবিনা আক্তারের বিরুদ্ধে মামলা গ্রহণ করে সমন জারি করেছেন বিচারক। এ আইনে বরিশালে ফৌজদারি আদালতে এটাই প্রথম মামলা। এই আইনজীবী জানান, বৃদ্ধার ছেলে মোস্তাফিজুর রহমান খুলনায় পিতার বাড়িতে এবং সাবিনা আক্তার বরিশাল নগরীতে স্বামীর বাড়িতে থাকেন।-সমকাল
Posted ৭:২৯ পূর্বাহ্ণ | শুক্রবার, ২৯ অক্টোবর ২০২১
সংবাদমেইল | Nazmul Islam
.
.