
বিশেষ প্রতিনিধি,সংবাদমেইল২৪.কম | রবিবার, ১৯ জানুয়ারি ২০২০ | প্রিন্ট
মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার পাল্লাতল চা বাগানে ৪ জনকে কুপিয়ে হত্যা করে ঘাতক নীজে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছে। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ৫ জনের মৃত দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। স্ত্রীর প্রতি পরকিয়া সন্দেহ ও স্বামী মাদকাশক্ত থেকেই এ ঘটনার সূত্রপাত হতে পারে বলে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি লোকজন ধারণা করছেন।
(১৯ জানুয়ারী) রোববার ভোরের দিকে নির্মল নামে ওই ব্যক্তি প্রথমে তাঁর স্ত্রীকে দা দিয়ে এলোপাতাড়ি ভাবে কুপিয়ে জখম করে। এরপর শাশুড়িকে, পরে দুই প্রতিবেশীকে কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করে। চারজনের মৃত্যু নিশ্চিত হয়ে খুনি নিজে বসতঘরের চালের তীরের সাথে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বড়লেখা উপজেলার পাল্লাতল চা বাগানের শ্রমিক নির্মল মাদকাসক্ত ও তার স্ত্রীর প্রতি সন্দেহ থাকায় পরিবারে দীর্ঘ দিন থেকে ঝগড়া চলছিলো। পারিবারিক কলহের জের ধরে নির্মল নামে ওই ব্যাক্তি প্রথমে তার স্ত্রী ডলি ব্যানার্জি (৩০), শাশুড়ি লক্ষ্মী ব্যানার্জি(৬০) প্রতিবেশী বসন্ত বক্তা(৫৫)ও বসন্তের মেয়ে শিউলি বক্তা(১২)কে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে। এসময় তার সৎ মেয়ে চন্দনা ব্যানার্জি পালিয়ে রক্ষা পায় এবং কানন বক্তা (২৮) গুরতর আহত হয়। তাকে সিলেট ওসামানী হাসপাতালে প্রেরন করা হয়েছে। সবাই পাল্লাতল চা বাগানের শ্রমিক।
পাল্লাতল চা বাগানের ব্যাবস্থাপক এবি এম মাহবুবুর রহমান জানান,রোববার ভোর সাড়ে ৫টার দিকে এই ঘটনা ঘটতে পারে।
বড়লেখা থানার উপপরিদর্শক (এএসআই) রোকসানা বেগম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেছেন অভিযুক্ত খুনি নির্মল মাদকাসক্ত ছিলেন। চা বাগানের এক প্রতিবেশী শ্রমিক জানায়, রোববার ভোর রাতের দিকে নির্মল ও ডলির মধ্যে উচ্চস্বরে ঝগড়া শুরু হয়। একপর্যায়ে ডলিকে মারধর শুরু করে নির্মল ডলি ভয়ে দৌড়ে অন্য ঘরে বাবা মায়ের কাছে চলে যায়। তখন নির্মল ধারালো অস্ত্র দিয়ে ডলিকে কোপাতে থাকে। মেয়েকে রক্ষা করতে শাশুড়ি ছুটে আসলে তাঁকেও কোপায় নির্মল। এরপর বসন্ত ও শিউলি সেখানে আসলে দুজনকে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকে নির্মল। পরে চারজনের মৃত্যু নিশ্চিত হয়ে নির্মল নিজে বসতঘরের চালের তীরের সাথে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করে। জানাযায়,নির্মলের বাড়ি এই এলাকায় নয়। বছর খানিক আগে ডলির সঙ্গে তার বিয়ে হয়। তারপর থেকে সে শ্বশুর বাড়িতেই বসবাস করতো।
উত্তর শাহাবাজপুর ইউনিয়নের ১০ নং ওয়ার্ডের স্থানীয় মেম্বার মখলিছুর রহমান মুঠোফোনে বলেন এ ঘটনায় ঘাতক নির্মল ছাড়া আর কেউ জড়িত নয়। সে মাঝে মাঝে বাগানে মধ্যপান করলেও এ ঘটনা স্ত্রীর পরকীয়া জনিত হতে পারে। কারন নির্মল ডলিকে দ্বিতীয় বিয়ে করায় শশুর বাড়িতেই সে বসবাস করতো। ঘটনার দিন রাতে শশুর বাড়িতে মেহমান হিসেবে একটি লোক এসেছিলো। যার কারনে এ হত্যাকান্ডের সূত্রপাত হতে পারে।
এদিকে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যান মৌলভীবাজার পুলিশ সুপার মো. ফারুক আহমেদ ও কুলাউড়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাদেক কাউসার দস্তগীর ও বড়লেখা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইয়াসিনুল হক।
মৌলভীবাজার পুলিশ সুপার ফারুক আহমেদ মুঠোফোনে জানান,পরকীয়া না মাদকাশক্ত থেকে এই ঘটনা ঘটেছে না কি অন্য কিছু সবগুলো আমলে নিয়ে তদন্তে মাধ্যমে সত্য উদঘাটন করা হবে।
Posted ৫:১৮ অপরাহ্ণ | রবিবার, ১৯ জানুয়ারি ২০২০
সংবাদমেইল | Nazmul Islam
.
.