
বড়লেখা প্রতিনিধি,সংবাদমেইল২৪.কম | বৃহস্পতিবার, ২৩ মার্চ ২০১৭ | প্রিন্ট
বড়লেখায় গাংকুল পঞ্চগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয়ের ড্রেস পরে স্কুলে না আসায় অর্ধশত শিক্ষার্থীকে প্রকাশ্যে ২০ বার করে কান ধরে ওঠবস করালেন প্রধান শিক্ষক আশরাফ হায়দার । অমানবিক এ শাস্তির ঘটনায় এলাকায় তোলপাড় শুরু হয়েছে। লোকলজ্জায় অনেক শিক্ষার্থী মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়ে স্কুলে আসা বন্ধ করে দিয়েছে। গত রোববার সকালে স্কুলের নিয়মিত সমাবেশ (পিটি) চলাকালে শাস্তির এ ঘটনাটি ঘটেছে। ইতিপূর্বে বড়লেখায় একসাথে অর্ধশত শিক্ষার্থীকে কান ধরে ওঠবস করানোর কোন ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।
সরেজমিন শাস্তিপ্রাপ্ত ৬ষ্ঠ, নবম ও দশম শ্রেণীর ছাত্ররা অভিযোগ করে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আশরাফ হায়দার ও শরীরচর্চা শিক্ষক বিশ^নাথ নাহা স্কুলড্রেস পরে বিদ্যালয়ে না যাওয়ায় গত রোববার সকালে অন্তত ৫০ জন ছাত্রকে ২০ বার করে কান ধরে ওঠবস করেন।
ছাত্ররা জানায়, বিদ্যালয় থেকে নির্ধারিত টেইলারিং শপ রতুলী বাজারস্থ এমএম টেইলার্সে স্কুলড্রেস তৈরির জন্য স্যাররা তাদেরকে বলে দেন। কমিশন পাওয়ার জন্য স্যাররা অন্য কোথাও স্কুল ড্রেস বানাতে নিষেধ করেছেন। সে অনুসারে সকলেই ওই দোকানে যাওয়ায় কাজের চাপ পড়ায় অনেকের স্কুলড্রেস তৈরিতে সময় ক্ষেপন হচ্ছিলো। সমাবেশ (পিটি) চলাকালীন ছাত্রদের কান ধরে ওঠবস করানোর ঘটনায় অনেক ছাত্র চরম বিভ্রতবোধ করে এবং মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়।
স্কুলের ১০ম শ্রেণীর ছাত্র আনিফুল হক, আশরাফুল হক, এমদাদ আহমদ ও সদর উদ্দিন, ৯ম শ্রেণীর ছাত্র নাবিল হোসেন, ৮ম শ্রেণীর সাজু আহমদ এবং ৬ষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্র তাওহিদুল ইসলামসহ শিক্ষর্থীরা জানায়, আমরা কোনো অন্যায় করিনি তবুও প্রকাশ্যে আমাদের এরকম শাস্তি দেয়া হয়েছে। শাস্তিভোগকারী শিক্ষার্থী অভিভাবক জেবলু আহমদসহ অভিভাবকরা অভিযোগ করেন, টেইলার সময়মত ড্রেস ডেলিভারী দিতে না পারায় কোমলমতি শিক্ষার্থীদের এমনভাবে শাস্তি প্রদান অমানবিক। প্রধান শিক্ষক টেইলারের নিকট থেকে কমিশন নিতেই একজনকে নির্ধারণ করে দিয়েছেন।
প্রধান শিক্ষক আশরাফ হায়দার ৫০ জন ছাত্রকে ওঠবস করানোর অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, কতেক ছাত্র দীর্ঘদিন ধরে স্কুল ড্রেস ব্যবহার করছে না। অনেকটা দম্ভোক্তির সুরে বলেন স্কুলের ডিসিপ্লি¬ন রক্ষার্থে কয়েক ছাত্রকে তিনি ওঠবস করিয়েছেন। আইনে না থাকলেও শিক্ষার্থীদের স্বার্থে এধরণের শাস্তি দেয়া হয়ার বিষয় সকলেই জানে।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সমীর কান্তি দে জানান, স্কুলড্রেস পরে না যাওয়ায় এধরণের শাস্তি দেয়া অনুুচিত। বিশেষ করে স্কুলের হাজারো শিক্ষার্থীর সম্মুখে কান ধরে উঠবস করালে শিক্ষার্থীরা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়, লজ্জাবোধ করে যা পাঠ গ্রহণে প্রভাব পড়ে। শিক্ষার্থীকে যেকোন ধরণের শারীরিক ও মানসিক শাস্তি শিক্ষা মন্ত্রণালয় অনেক আগেই নিষিদ্ধ করেছে। বিষয়টির খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।
সংবাদমেইল২৪.কম/এজেএল/এনএস
Posted ১২:৪৫ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ২৩ মার্চ ২০১৭
সংবাদমেইল | Nazmul Islam
.
.