বিশ্বনাথ প্রতিনিধি,সংবাদমেইল২৪.কম | শনিবার, ০৪ আগস্ট ২০১৮ | প্রিন্ট
সিলেটের বিশ্বনাথে সংঘটিত একাধিক ছিনতাইর ঘটনার মূলহোতা ও ব্যাংকের তথ্য পাচারকারী ‘লন্ডনী হোসেন’ নামে পরিচিত আলী হোসেন তৌফিক (৩০) কে গ্রেফতার করেছে বিশ্বনাথ থানা পুলিশ।
সে ওসমানীনগর উপজেলার তাজপুর ইউনিয়নের নাগেরকোনা গ্রামের মৃত নিজাম উদ্দিনের পুত্র। দীর্ঘ ৯মাস অভিযানের পর অবশেষে শনিবার (৪আগষ্ট) দুপুরে ওসমানীনগরের রাখালগঞ্জ বাজার (টিকির বাজার) এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় বিশ্বনাথ থানা পুলিশ।
আলী হোসেন তৌফিককে গ্রেফতারের পর শনিবার বেলা ১টায় এক সংবাদ সম্মেলনে থানার ওসি শামসুদ্দোহা পিপিএম জানান, ছিনতাইকারীর মূল হোতা গ্রেফতারকৃত আলী হোসেন তৌফিক ইতিপূর্বে বিশ্বনাথ উপজেলা সদরের সোনালী ব্যাংকে পিয়নের চাকুরীতে কর্মরত ছিল। প্রায় তিন বছর পূর্বে ব্যাংকের চাকুরী ছেড়ে দেয়ার পর আলী হোসেন তৌফিক একজন ছিনতাইকারী হয়ে যায়। সে বিভিন্ন ব্যাংকে আবারও চাকুরী করার জন্য ছুটে যায়। মূলত সে চাকুরীর জন্য ব্যাংকে যেতে না। সে ব্যাংকে গিয়ে বসে থাকতো এবং গ্রাহকদের অনুসরণ করতো। কোন গ্রাহক ব্যাংক থেকে কে কত টাকা উত্তোলন করছেন। বিষয়টি ব্যাংকের বাহিরে থাকা তার সহযোগিদের বলে দিত এবং তার সহযোগীরা ছিনতাই করতো। এভাবে তারা এলাকায় ছিনতাই করে আসছিল। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে আলী হোসেন তৌফিক এসব তথ্য জানিয়েছে বলে সাংবাদিকদের জানান ওসি।
২০১৭ সালের ২৯ নভেম্বর বিশ্বনাথ উপজেলা সদরের উত্তরা ব্যাংক থেকে ২২লাখ টাকা উত্তোলন করেন উপজেলার বগিরচক গ্রামের লন্ডন প্রবাসী জুলহাস মিয়ার স্ত্রী জেবুন নাহার (৩২)। তিনি টাকা উত্তোলন করে অটোরিকশা (সিএনজি) গাড়িতে টাকা নিয়ে বাড়ি ফেরার পথে উপজেলার বগিরচক নামক স্থান থেকে তাদের কাছ থেকে টাকা ছিনতাই করে নিয়ে যায় ছিনতাইকারীরা। এসময় তার ব্যবহৃত দুটি মোবাইল সেটও লুট করা হয়। তবে পরদিন ছিনতাইয়ের ঘটনায় জেবুন নাহার বাদী হয়ে থানায় মামলা করেছেন দেড় লাখ টাকা। মামলা নং-(১৪)। ওই মামলার সুত্র ধরেই ব্যাংকের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে ছিনতাইকারীর মূলহোতা হোসেন’কে শনাক্ত করা হয়। গ্রেফতারের পর সিসি ক্যামেরার ফুটেজে তার পরনে থাকা শার্ট, প্যান্ট ও জুতা উদ্ধার করেছে পুলিশ। এর পূর্বে সিলেটের করিম উল্লাহ মার্কেটে একজনের কাছ থেকে লুন্টিত একটি মোবাইল সেটও উদ্ধার করা হয়।
চলতি বছরের ১৫ মে বিশ্বনাথের ডাচ্ বাংলা ব্যাংক থেকে ৩ লাখ টাকা উত্তোলন করেন ছাতক উপজেলার ভাটিপাড়া গ্রামের আবদুল মতিনের পুত্র জামরান আহমদ (৩৭)। তিনি অটোরিকশা (সিএনজি) গাড়িতে বাড়ি ফেরার পথে বিশ্বনাথ-রামপাশা সড়কের নরসিংপুর নামক স্থান থেকে তার টাকা ছিনতাই করা হয়। সেদিনের সিসি ক্যামেরায়ও গ্রেফতারকৃত হোসেনকে দেখা যায়। ওই ৩লাখ টাকা থেকে ছিনতাইকারীদের মূলহোতা হোসেন ৫হাজার টাকা ভাগ পায়।
ওসি শামসুদ্দোহা পিপিএম বলেন, গ্রেফতারকৃত আলী হোসেন তৌফিক ছিনতাইকারীদের মূলহোতা। তার নেতৃত্বে বিশ্বনাথ এলাকায় দুটি ছিনতাইর ঘটনা ঘটে। তার বিরুদ্ধে জেলার বিভিন্ন থানায় ছিনতাই’র মামলা রয়েছে। ইতিপূর্বে তাকে কোনো থানা পুলিশ গ্রেফতার করতে পারেনি, আমরাই তাকে প্রথম গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছি। আগামীকাল (রোববার) তাকে আদালতে প্রেরণ করা হবে এবং বাকি ছিনতাইকারীদের গ্রেফতারের জন্য অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে তিনি জানান।
Posted ৯:১৮ অপরাহ্ণ | শনিবার, ০৪ আগস্ট ২০১৮
সংবাদমেইল | Nazmul Islam
.
.