
অনলাইন ডেস্ক : | শুক্রবার, ০১ অক্টোবর ২০২১ | প্রিন্ট
আজ চীনের ৭২ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। একটা সময় ছিল বাংলাদেশে চীন গুরুত্বহীন। কিন্তু এখন ক্রমশ বাংলাদেশের সার্বিক ক্ষেত্রেই চীন গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে নিচ্ছে। এবার চীনের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে শীর্ষ স্থানীয় সকল দৈনিকগুলোতে বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করা হয়েছে। বাংলাদেশ-চীন সম্পর্ক গত ১২ বছরে নতুন মাত্রা নিয়েছে। বাংলাদেশে এখন যতগুলো মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন চলছে সবগুলোতেই চীন অংশীদার। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয় যে, বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় অর্থনৈতিক বন্ধু হলো চীন। মেট্রোরেল, কর্ণফুলী টানেল, পদ্মা সেতুসহ বিভিন্ন প্রকল্পে চীন অর্থায়ন করছে এবং চীনের কারিগরি সহযোগিতায় এই প্রকল্প গুলোর বাস্তবায়নের কাজও চলছে। এই বাস্তবতায় প্রশ্ন উঠেছে যে, চীন কি শুধু বাংলাদেশের অর্থনৈতিক পার্টনার নাকি বাংলাদেশের রাজনীতিতেও চীন ধীরে ধীরে নাক গলাতে শুরু করেছে?
যদিও এখন পর্যন্ত রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন যে, চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের হৃদ্যতার মূলভিত্তি অর্থনীতি। রাজনৈতিক বিষয়ে চীন এখনও কোন নাক গলাচ্ছে না বা বাংলাদেশের রাজনীতিতে চীন এখনও ভূমিকাহীন। কিন্তু অনেক কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন যে, এই অবস্থাটি ঠিক নয়। এবার চীনের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে দেখা গেছে যে, বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে তৎপরতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বিশেষ করে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার দীর্ঘদিন ধরেই চীনের সাথে একটি সম্পর্ক তৈরি করে রেখেছে। চীনা কমিউনিস্ট পার্টির আমন্ত্রণে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নেতারা চীন সফর করেন এবং চীনের কূটনৈতিক অনুষ্ঠানগুলোতে এখন বাংলাদেশের আওয়ামী লীগের নেতারা যোগ দান করেন।
সাম্প্রতিক সময়ে আওয়ামী লীগ ভারত এবং চীনের সঙ্গে সমান্তরাল ধারায় সুসম্পর্ক রাখার এক নীতি নিয়ে চলছে এবং এখন পর্যন্ত এই কৌশলটি ভালোভাবেই প্রয়োগ করতে পারছে। অন্যদিকে, বিএনপির বিদেশনীতি নিয়ে একটি দোদুল্যমান অবস্থা লক্ষ্য করা যায় গত ১৫ বছর ধরে। কখনো ভারত বিরোধিতা আবার কখনো ভারতের সাথে নৈকট্য। আবার কখনও চীনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হওয়ার চেষ্টা বিএনপির মধ্যে সব সময়ই দেখা যায়। এই কূটনৈতিক অস্থিরতার কারণে বিএনপি এখনও কোন বৃহৎ শক্তিরই আস্থাভাজন রাজনৈতিক দল হিসেবে নিজেদেরকে প্রমাণ করতে পারেনি। তবে বিএনপির সঙ্গে সবচেয়ে গভীর সম্পর্ক হলো পাকিস্তানের। সাম্প্রতিক সময়ে পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই আবার বিএনপির সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা করেছে এবং আইএসআইয়ের অভিপ্রায় অনুযায়ী বিএনপি বাংলাদেশের রাজনীতিতে কিছু কিছু কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছে বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে। এখানেই অনেকে মনে করছেন যে চীন এবং পাকিস্তানের যে বন্ধুত্ব, সেই বন্ধুত্ব বাংলাদেশের রাজনীতিতে কোন প্রভাব ফেলবে কিনা।
বিশেষ করে সাম্প্রতিক সময়ে আফগানিস্তানে তালেবান সরকার প্রতিষ্ঠিত হবার পর এই প্রশ্নটি এখন আবার নতুন করে সামনে এসেছে। একটা সময় চীনের মূল বিষয় শুধু অর্থনীতি থাকলেও এখন বিভিন্ন দেশেও চীন রাজনৈতিক বিষয়েও নাক গলাচ্ছে। বিশেষ করে আফগানিস্তান, শ্রীলঙ্কা, মালদ্বীপ, পাকিস্তানের রাজনৈতিক ইস্যুতে চীনের ভূমিকা এখন দৃশ্যমান হচ্ছে। এই রকম অবস্থায় বাংলাদেশের রাজনীতিতে আগামী নির্বাচনে চীন কি কোন ভূমিকা রাখবে? বিভিন্ন কূটনৈতিকরা মনে করছেন যে, ভারতের সঙ্গে চীনের একটি প্রকাশ্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা আছে। আর সেজন্য এই অঞ্চলে কৌশলগত একটি ঐক্য করেছে চীন এবং পাকিস্তান। সেই কৌশলের অংশ হিসেবে বাংলাদেশের রাজনীতির উপরও চীনের প্রভাব দৃশ্যমান হতে পারে। কারণ বাংলাদেশের রাজনীতিতে পাকিস্তানের আগ্রহ দীর্ঘদিনের। সূত্র: বাংলা ইনসাইডার
Posted ১১:০৭ অপরাহ্ণ | শুক্রবার, ০১ অক্টোবর ২০২১
সংবাদমেইল | Nazmul Islam
.
.