
অনলাইন ডেস্ক : | শনিবার, ০২ অক্টোবর ২০২১ | প্রিন্ট
সম্প্রতি দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) দুর্নীতি মামলায় বিএনপি নেতা মোসাদ্দেক আলী ফালুর বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেছে। একই সাথে মোসাদ্দেক আলী ফালুর দুবাইয়ের ব্যাংক একাউন্টের সাড়ে ৩দশ কোটি টাকা জব্দ করা হয়েছে। এক সময় বেগম খালেদা জিয়ার নিরাপত্তা রক্ষী, সেখান থেকে তার একান্ত সচিব। পরবর্তীতে রাজনৈতিক সচিব এবং এমপি হয়ে যাওয়া মোসাদ্দেক আলী ফালু আসলে ছিলেন গোর (কবর) খোদক। খিলগাঁও বাসাবো এলাকায় সবাই মোসাদ্দেক আলী ফালুকে গোর (কবর) খোদক হিসেবেই চেনে। সেই ফালু এখন ১২দশ ৮৫ কোটি টাকার সম্পদের মালিক। দেশে-বিদেশে বিভিন্ন স্থানে রয়েছে তার বিপুল পরিমাণ সম্পদ, বিত্ত-বৈভব। এনটিভির মালিকানা ছাড়াও বাংলাদেশে তার বিভিন্ন ধরনের ব্যবসা আছে কিন্তু দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) মামলা করার পর মোসাদ্দেক আলী ফালু পালিয়ে সৌদি আরবে যান এবং সেখানে তিনি বসবাস করছেন। সৌদি আরব ছাড়াও সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং মধ্যপ্রাচ্যে আরও কয়েকটি দেশে তার ব্যবসা রয়েছে।
দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সূত্র বলছে যে, তারা অনুমান করছে দেশের বাইরে প্রায় ১২দশ ৮৫ কোটি টাকার সম্পদ রয়েছে মোসাদ্দেক আলী ফালুর এবং বাংলাদেশ থেকে দুর্নীতির মাধ্যমে এই টাকাগুলো বিদেশে পাচার করা হয়েছে। মোসাদ্দেক আলী ফালুর এই টাকাগুলো কার, এ নিয়ে এখন রাজনীতিতে নানামুখী আলোচনা চলছে। বিএনপির নেতারাই মনে করছেন, এই টাকা গুলো আসলে মোসাদ্দেক আলী ফালুর নয়। মোসাদ্দেক আলী ফালু বাস্তবে বেগম খালেদা জিয়ার ক্যাশিয়ার। বিভিন্ন সরকারি কাজে দুর্নীতির মাধ্যমে যে টাকা পেয়েছেন সেই টাকাগুলো ফালুর কাছে রক্ষিত রয়েছে। আর এ কারণেই দেখা যায় যে, মোসাদ্দেক আলী ফালুর সমস্ত প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ছিলেন খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকো। মোসাদ্দেক আলী ফালুর এই যে বিপুল সম্পদ নিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) অনুসন্ধান করতে গিয়ে অনেক চাঞ্চল্যকর তথ্য পাচ্ছে।
তার জীবন শুরু হয়েছিল খিলগাঁও এলাকায়। খুবই নিম্ন ঘরের সন্তান ছিলেন। মির্জা আব্বাস তাকে বিএনপির রাজনীতিতে আনেন এবং যখন বেগম খালেদা জিয়া রাজনীতিতে প্রবেশ করে তখন দেহরক্ষী হিসেবে ফালু তার সঙ্গে ছিলেন। পরবর্তীতে বেগম খালেদা জিয়ার আনুকূল্যে মোসাদ্দেক আলী ফালু তার দেহরক্ষী থেকে একান্ত সচিবে পরিণত হন। ১৯৯১ সালের নির্বাচনে বিএনপির আকস্মিক বিজয়ের পর মোসাদ্দেক আলী ফালু প্রধানমন্ত্রীর একান্ত সচিব হন। যদিও এ ধরনের সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে নূন্যতম শিক্ষাগত যোগ্যতা স্নাতক লাগে। কিন্তু মোসাদ্দেক আলী ফালুর কোন শিক্ষাগত যোগ্যতার ছাড়াই প্রধানমন্ত্রীর একান্ত সচিব হয়েছিলেন। এই সময় ফালু প্রথম ফুলে-ফেঁপে ওঠা শুরু করেন। দ্বিতীয় মেয়াদে বেগম খালেদা জিয়া ক্ষমতায় আসেন ২০০১ সালে। তখন মোসাদ্দেক আলী ফালুকে খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব করা হয়। এই সময়ে ফালুর সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েন তারেক জিয়া এবং হারিছ চৌধুরী চক্র। এক সময় প্রধানমন্ত্রী কার্যালয় থেকে বিদায় করে দেওয়া হয় মোসাদ্দেক আলী ফালুকে। তিনি ঢাকার তেজগাঁও-রমনা আসন থেকে উপনির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে এমপি হন। কিন্তু বেগম খালেদা জিয়া যখন প্রধানমন্ত্রী সেই প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় এবং হাওয়া ভবন থেকে বিতাড়িত হলেও বেগম খালেদা জিয়ার ভালোবাসা থেকে বিতাড়িত হননি মোসাদ্দেক আলী ফালু। বরং বেগম খালেদা জিয়ার তার প্রতি আলাদা একটা পক্ষপাত ছিল। এই সময় ব্যবসায়ে মনোযোগী হন এবং প্রচুর পরিমাণে বিদেশে টাকা পাঠান।
বিভিন্ন সূত্র বলছে, বাংলাদেশ থেকে মোসাদ্দেক আলী ফালু ৫ হাজার কোটি টাকার বেশি পাচার করেছেন এবং এই টাকাগুলো অধিকাংশই বেগম খালেদা জিয়ার টাকা বলে মনে করা হচ্ছে। বেগম খালেদা জিয়ার ক্যাশিয়ার আসলে মোসাদ্দেক আলী ফালু, এটি মনে করেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। সূত্র: বাংলা ইনসাইডার
Posted ১২:৪৪ পূর্বাহ্ণ | শনিবার, ০২ অক্টোবর ২০২১
সংবাদমেইল | Nazmul Islam
.
.