
অনলাইন ডেস্ক : | শনিবার, ০২ অক্টোবর ২০২১ | প্রিন্ট
প্রথম পর্যায়ে দুই দফায় ৬দিন বৈঠক করেছে বিএনপি। এই বৈঠকে অংশগ্রহণ করেছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ থেকে শুরু করে জেলা পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ। দ্বিতীয় ধাপে বিএনপি বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের সঙ্গে বৈঠক অনুষ্ঠান করতে যাচ্ছে। সেই উপলক্ষে গতকাল বিএনপিপন্থী বিভিন্ন পেশাজীবীদের সাথে একটি রুদ্ধদ্বার বৈঠক করে। এই বৈঠকে পেশাজীবীদের সঙ্গে বৈঠকে কাদেরকে আমন্ত্রণ জানানো হবে, কিভাবে আমন্ত্রণ জানানো হবে এবং বৈঠকের আলোচ্য বিষয় নিয়ে আলাপ আলোচনা করা হয়েছে। রুদ্ধদ্বার এই বৈঠকে পেশাজীবীদের পক্ষ থেকে নানারকম বিষয় উত্থাপন করা হয়েছে। বিএনপিপন্থী পেশাজীবীদের বাইরে যারা আওয়ামী বিরোধী পেশাজীবী আছে তাদেরকে কিভাবে বিএনপির আন্দোলন প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত করা যায় সেই কর্মপন্থা নিয়েও কথা হয়েছে বলে জানা গেছে। আর এসব আলোচনায় আবার তারেক জিয়া প্রসঙ্গ এসেছে।
বিএনপিপন্থী পেশাজীবীরা বলেছেন যে বিএনপিপন্থী পেশাজীবীদের বাইরে যারা নিরপেক্ষ পেশাজীবী আছেন যারা আওয়ামী বিরোধী বা সরকারের সমালোচনা করেন তারা তারেক মুক্ত বিএনপি চান। তারেক জিয়া যতক্ষণ বিএনপির নেতৃত্বে থাকবেন ততক্ষণ এই সমস্ত পেশাজীবীরা বিএনপির সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করবে না বলেই তার শঙ্কা প্রকাশ করেছেন। এজন্য পেশাজীবীদের বৈঠকে নিরপেক্ষ ঘরানার বুদ্ধিজীবীদের না ডাকার পক্ষেই তারা মতামত দিয়েছেন বলে বিএনপির দায়িত্বশীল সূত্রগুলো নিশ্চিত করেছে। বিএনপি এখন নতুন করে আন্দোলন শুরু করতে চাইছে। আর এই আন্দোলন শুরু করার ক্ষেত্রে যে বিষয়গুলো বিএনপি প্রাধান্য দিচ্ছে তার মধ্যে রয়েছে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন এবং ন্যূনতম ইস্যুতে সকল শ্রেণী-পেশার মানুষকে এক করা। কিন্তু গত ১৪ বছর ক্ষমতার বাইরে থাকা বিএনপির ব্যাপারে বুদ্ধিজীবী এবং পেশাজীবীদের একটা নেতিবাচক মনোভাব রয়েছে। বিভক্ত রাজনীতিতে কোন কোন পেশাজীবী ব্যক্তি সরাসরি আওয়ামী লীগ অথবা বিএনপির সঙ্গে সম্পৃক্ত। বাকিরা একটি নিরপেক্ষ অবস্থানে থাকে। তারা সরকারের বিভিন্ন বিষয়ের সমালোচনা করেন।
কিন্তু যারা আওয়ামী লীগের সমালোচনা করেন, বিএনপি করেন না এরকম বুদ্ধিজীবীদের মধ্যে তারেক সম্পর্কে একটি নেতিবাচক মনোভাব সবসময় কাজ করে। বিশেষ করে ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত তারেক জিয়া ক্ষমতাকে ব্যবহার করে যেভাবে লুটপাট করেছেন, সরকারের টেন্ডার বাণিজ্য, নিয়োগ বাণিজ্যে অংশগ্রহণ করেছেন তাতে তারেককে নিরপেক্ষ বুদ্ধিজীবীরা একজন দুর্বৃত্ত মনে করেন, রাজনীতিবিদ মনে করেন না। পাশাপাশি লন্ডনে যাওয়ার পর তারেক জিয়া যেভাবে অর্থ-বিত্তের প্রসার ঘটিয়েছেন এবং দলের মনোনয়ন বাণিজ্য, কমিটি বাণিজ্য করছেন তাতে নিরপেক্ষ বুদ্ধিজীবীরা উদ্বিগ্ন এবং আতঙ্কিত। বাংলাদেশের নিরপেক্ষ বুদ্ধিজীবীদের একটি বড় অংশ মনে করেন যে, আওয়ামী লীগের অনেক সমালোচনা আছে কিন্তু তারেক জিয়া ভয়ঙ্কর। তারেক জিয়া রাজনীতিকে শুধু তার অর্থ উপার্জনের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছেন বলেও প্রায় সকল নিরপেক্ষ বুদ্ধিজীবী মনে করেন। তারা মনে করেন যে, তারেক জিয়ার হাতে বিএনপি নিরাপদ নয়, দেশ তো নয়ই। আর এসব কারণেই বিএনপি ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন করতে চাইলেও শেষ পর্যন্ত অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলো তারেকের কারণেই বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলন আগ্রহ না। একইভাবে পেশাজীবীরাও তারেক জিয়ার নেতৃত্বে সরকার বিরোধী অবস্থান গ্রহণে মোটেও আগ্রহী নয় বলেই জানা গেছে।
সাম্প্রতিক সময়ে অন্যতম পেশাজীবী এবং বুদ্ধিজীবী হিসেবে পরিচিত ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীকে নিয়ে বিএনপি যে কাণ্ড করেছে তাতে বুদ্ধিজীবী এবং পেশাজীবীরা একটু উদ্বিগ্ন বটে। কারণ তারা মনে করছেন যে, জাফরুল্লাহ চৌধুরী যিনি বিএনপির জন্য এত কিছু করেছেন তার ন্যূনতম সমালোচনা যখন বিএনপি সহ্য করতে পারে না তখন অন্যদের কি অবস্থা হবে। আর এ কারণেই পেশাজীবীদের সাথে বৈঠক শেষ পর্যন্ত বিএনপির অনুগত এবং একান্ত বাধ্যগত পেশাজীবীদের বৈঠকি পরিণত হবে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন। সূত্র: বাংলা ইনসাইডার
Posted ১২:৪৮ পূর্বাহ্ণ | শনিবার, ০২ অক্টোবর ২০২১
সংবাদমেইল | Nazmul Islam
.
.