
অনলাইন ডেস্ক : | শনিবার, ০৬ নভেম্বর ২০২১ | প্রিন্ট
কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের দানসিন্দুক খোলা মানেই কোটি কোটি টাকা। আর এবার মসজিদের সিন্দুক খুলে পাওয়া গেল তিন কোটিরও বেশি টাকা যা এ যাবতকালের সবচেয়ে বেশি বলে জানিয়েছে মসজিদ কর্তৃপক্ষ। বরাবরের মতো এবারও পাওয়া গেছে প্রচুর বৈদেশিক ও দেশীয় খুচরা মুদ্রা এবং স্বর্ণালঙ্কার। সর্বশেষ গত ১৯ জুন দানবাক্সগুলো খোলা হয়েছিল। সেসময় দানবাক্স খুলে পাওয়া গিয়েছিল ২ কোটি ৩৩ লাখ ৯৩ হাজার ৭৭৯ টাকা।
৬ নভেম্বর (শনিবার) সকাল ৯টা থেকে কিশোরগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ফারজানা খানম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক(সার্বিক) মো. নাজমুল ইসলাম সরকার, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক(শিক্ষা ও আইসিটি) মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফা, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আলী সিদ্দিকী, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শিহাবুল আরিফ, শফিকুল ইসলাম, অর্ণব দত্ত, পাগলা মসজিদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মুক্তিযোদ্ধা মো. শওকতউদ্দিন ভুঁইয়ার উপস্থিতিতে মসজিদ প্রাঙ্গণে রক্ষিত সিন্দুকগুলো খোলা হয়। পরে টাকা বাছাইয়ের কাজ শুরু এবং বাছাইয়ের পর প্রথমে ১২ বস্তায় টাকাগুলো ভর্তি করা হয়। সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টা পর্যন্ত টাকা গণনার কাজ চলে। গণনা শেষে রূপালী ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা টাকাগুলো বুঝে নেন। পাগলা মসজিদের নামে রূপালী ব্যাংকে একটি অ্যাকাউন্ট আছে। প্রতিবারই সিন্দুক খোলার পর প্রাপ্ত টাকা গণনা করে রূপালী ব্যাংকের হিসাবে জমা দেওয়া হয়। সাধারণত ৩-৪ মাস পরপর এই সিন্দুকগুলো খোলা হয়।
পাগলা মসজিদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. শওকত উদ্দিন ভূঞা সংবাদমাধ্যমকে জানান, মাদরাসার ১২৭জন ছাত্র, মসজিদের ৩৪জন কর্মচারি ও রূপালী ব্যাংকের বিভিন্ন শাখার ৬০জন কর্মকর্তা-কর্মচারি সারাদিন টাকা গণনা করেছেন। তিনি জানান, যারা মসজিদে টাকা গণনার কাজে সহযোগিতা করেন, তাদের জন্যও থাকে সম্মানির ব্যবস্থা।
রূপালী ব্যাংকের সহকারী মহাব্যবস্থাপক ও কিশোরগঞ্জ শাখা প্রধান মো. রফিকুল ইসলাম জানান, পাগলা মসজিদের হিসাব দেখভাল করার সুযোগ পেয়ে তারা গর্বিত। আমরাই মসজিদের সিন্দুকে লোকজনের দান করা টাকা গণনা থেকে শুরু করে ব্যাংকে নিয়ে যাওয়ার কাজটি করি।
পাগলা মসজিদের সাধারণ সম্পাদক ও কিশোরগঞ্জ পৌরসভার মেয়র মো. পারভেজ মিয়া জানান, মসজিদের উন্নয়নমূলক কাজ ছাড়াও দানের টাকায় দুঃস্থ ও অসহায়দের নানাভাবে সহযোগিতা দেওয়া হয়। দূরারোগ্য রোগীদের চিকিৎসায় অনুদান দেয় এই মসজিদ। সম্প্রতি শত কোটি টাকায় এই মসজিদের বহুতল কমপ্লেক্স নির্মাণের একটি প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। দানের টাকা দিয়ে এই প্রকল্পের ব্যয় মেটানো হবে।
তিনি আরো বলেন, মসজিদের তহবিল থেকে কোরোনা মোকাবেলায় বিভিন্ন হাসপাতালে যন্ত্রপাতি ও ওষুধপত্রের জন্য মোটা অঙ্কের টাকা অনুদান দেওয়া হয়েছে।
জানা গেছে, কিশোরগঞ্জের নরসুন্দা নদীর তীরে স্থাপিত দুই শতাব্দী প্রাচীন মসজিদটি দেশজুড়ে পরিচিত। ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদকে ঘিরে রয়েছে অনেক জনশ্রুতি। প্রতিদিনই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অসংখ্য ধর্মপ্রাণ মুসলমান এই মসজিদে আসে। তারা দান ও মানত করে যায়। তাছাড়া প্রতিদিনই লোকজন গরু-ছাগল, হাঁস-মুরগি প্রভৃতি নিয়ে আসে। ওইগুলো বিক্রি করে মসজিদের ফান্ডে জমা দেওয়া হয়। অন্য সম্প্রদায়ের লোকজনও এই মসজিদে এসে দান ও মানত করেন।
Posted ৮:১৫ অপরাহ্ণ | শনিবার, ০৬ নভেম্বর ২০২১
সংবাদমেইল | Nazmul Islam
.
.