দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণকারী কথিত ভুঁইফোড় সংগঠনের বিরুদ্ধে আবারও হার্ডলাইনে আওয়ামী লীগের হাইকমান্ড। ক্ষমতায় থাকার সুযোগে সংগঠনের নামে ব্যাঙের ছাতার মতো কথিত ‘দোকান খুলে’ দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণœকারী এসব ভুঁইফোড়-ধান্ধাবাজ সংগঠনের বিরুদ্ধে কঠোর এ্যাকশনে নেমেছে দলটি। এখন থেকে বিতর্কিত ও দলকে বিব্রতকর অবস্থার মুখে ফেলে দেয়া এসব অবৈধ সংগঠনের কাউকেই ন্যূনতম ছাড় দেবে না আওয়ামী লীগ। ছাড় পাবে না এসব ভ্ুঁইফোড় সংগঠনের পৃষ্ঠপোষক, মদদদানকারীও। আর এসব ভুঁইফোড় সংগঠনের কোন অনুষ্ঠানে যোগ না দিতেও দলের মন্ত্রী-এমপি-নেতাদের বারণ করে দিয়েছে দলটি।
দলটির একাধিক সূত্রে জানা গেছে, সরকারী দলের নামে এসব ভুঁইফোড় সংগঠন খুলে ক্ষমতার দাপট দেখানো ব্যক্তি, তদ্বির বাণিজ্য, ধান্ধাবাজি, চাঁদাবাজি, দখলদারী কিংবা অনৈতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে শুধু সাংগঠনিক ও আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণই নয়, পাশাপাশি সরকার ও দলের মন্ত্রী-এমপি কিংবা নেতাদের মধ্যে কারা কারা এসব কথিত ভুঁইফোড় সংগঠনকে পৃষ্ঠপোষকতা, মদদ কিংবা নেপথ্যে থেকে উৎসাহিত করছে, তাদের ব্যাপারেও খোঁজখবর নিতে শুরু করেছে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নীতিনির্ধারক নেতারা। তাঁদের মতে, গঠনতন্ত্রের বাইরে অনুমোদিত দোকান খুলে অবৈধ কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর এ্যাকশন শুরু হয়েছে। এসব অপকর্মের সঙ্গে জড়িত যত বড় ক্ষমতাধর ব্যক্তি বা নেতাই হোন না কেন, এবার কাউকেই আর ছাড় দেয়া হবে না।
গত শনিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) আওয়ামী লীগের সম্পাদকমণ্ডলীর সভায় আওয়ামী লীগের নামে গড়ে ওঠা অসংখ্য ভুঁইফোড় ও নামসর্বস্ব সংগঠনের মাধ্যমে দল ও সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। করোনার সংক্রমণ বৃদ্ধির কারণে এতদিন কিছুটা চুপচাপ থাকলেও এখন থেকে আবারও এসব কথিত সংগঠনের বিরুদ্ধে কঠোর এ্যাকশন গ্রহণের দাবি ওঠে বৈঠকে।
বৈঠকে এমন আলোচনার পরপরই দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের নির্দেশে শনিবার দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ‘আওয়ামী মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্ম লীগ’-এর প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠান বন্ধ করে দিয়ে তাদের মঞ্চসহ সবকিছু সরিয়ে নিতে ওই সংগঠনের নেতাকর্মীদের বাধ্য করা হয়। সাফ জানিয়ে দেয়া হয়- আওয়ামী লীগের নাম ভাঙ্গিয়ে আর কোন ভুঁইফোড় সংগঠনকে কোন ধরনের তৎপরতা চালাতে দেয়া হবে না। এমনকি এসব সংগঠনের পরিচয় দিয়ে কোথাও কোন ধরনের অনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ এলে তাদের আইনের হাতে সোপর্দ করার কথাও জানিয়ে দেন কেন্দ্রীয় নেতারা।
এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্মের ব্যাপারে আমাদের কোন দ্বিমত নেই। কিন্তু লীগ আর আওয়ামী যখন যুক্ত হয় তখন এখানে আমাদের সংশ্লিষ্টতা এসে যায়। এখানে আমাদের ভাবমূর্তির বিষয়টি এসে যায়। কারণ এসব দোকান অনেকে খুলে থাকে চাঁদাবাজির জন্য। এগুলোর বেশিরভাগই আসলে চাঁদাবাজির প্রতিষ্ঠান। তবে সবাই চাঁদাবাজি করে, তা নয়। কিছু কিছু প্রতিষ্ঠান আছে যারা চাঁদাবাজিনির্ভর। আগামীতে এসব নামসর্বস্ব সংগঠনের কোন কর্মসূচীতে দলের কেন্দ্রীয় নেতারা অতিথি হিসেবে না যায়, সেজন্য কেন্দ্রীয় নেতাদের প্রতি অনুরোধ জানান ওবায়দুল কাদের।
-দৈনিক জনকণ্ঠ
Comments
comments