
স্টাফ রিপোর্টার,সংবাদমেইল২৪.কম | বুধবার, ১৬ নভেম্বর ২০১৬ | প্রিন্ট
ঢাকা: টেকসই উন্নয়নের বিভিন্ন লক্ষের সফল বাস্তবায়নে জলবায়ুতাড়িত অভিবাসী সমস্যা সমাধানে বৈশ্বিক উদ্যোগ নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “জলবায়ুতাড়িত অভিবাসীর চ্যালেঞ্জ যথাযথভাবে মোকাবেলা করতে না পারলে আমরা কখনোই টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যসমূহ অর্জন করতে সক্ষম হব না।”
(১৫ নভেম্বর) মঙ্গলবার রাতে বৈশ্বিক জলবায়ু সম্মেলনের (কপ-২২) উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে এ কথা বলেন তিনি।
জলবায়ু পরিবর্তনের ভয়াবহ হুমকির বিরুদ্ধে লড়াই করতে বৈশ্বিক অংশীদারিত্ব সুসংহত করার লক্ষ্যে সবাইকে একজোট হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “মারাক্কেশ সম্মেলন বিশেষ তাৎপর্য বহন করে। কারণ গত বছর প্যারিসে জলবায়ুর প্রভাব মোকাবেলায় অর্থবহ সহযোগিতা গড়ে তুলতে স্বাক্ষরিত ঐতিহাসিক চুক্তি চলতি বছর বাস্তবায়িত হতে যাচ্ছে।”
গত বছর গৃহীত সিদ্ধান্তসমূহ এগিয়ে নেয়ার এটাই সময় একথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, “জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় প্যারিস চুক্তি অর্থবহ সহযোগিতার সুদৃঢ় ভিত্তি গড়ে তুলেছে। প্যারিস চুক্তিতে স্বাক্ষর ও অনুসমর্থন দেয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ প্রথম সারির দেশ। জলবায়ু পরিবর্তনের ইস্যুতে আমাদের অঙ্গীকার পূরণ করতে ব্যর্থ হলে কোটি কোটি মানুষ ঝুঁকির মধ্যে বসবাস করবে।
আগামী প্রজন্মের জন্য পৃথিবীকে নিরাপদ ও সুন্দর করতে আমাদের অঙ্গীকার পূরণের লক্ষ্যে অবশ্যই ন্যায়সঙ্গত দায়িত্ব পালনে প্রস্তুত হতে হবে বলে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “বাংলাদেশ নিজস্ব তহবিল থেকে ৪শ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে সর্বপ্রথম ‘ক্লাইমেট চেঞ্জ ট্রাস্ট’ গঠন করেছে। বন্যা, ঘূর্ণিঝড়ের মতো জলবায়ু সম্পৃক্ত অধিক ঝুঁকিপূর্ণ উপকূলীয় এলাকা থাকা সত্ত্বেও বাংলাদেশ দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় সাফল্য অর্জন করেছে।”
তিনি পূর্বসতর্কীকরণ ব্যবস্থা ও আশ্রয় কেন্দ্র নির্মাণসহ বাংলাদেশের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কার্যক্রমের উল্লেখ করে বলেন, “এসব পদক্ষেপের প্রেক্ষিতে দুর্যোগকালে জীবন ও সম্পদের ক্ষয়-ক্ষতি অনেক হ্রাস পেয়েছে।”
পানি সম্পর্কিত জাতিসংঘের উচ্চ পর্যায়ের প্যানেলের সদস্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পানি নিরাপত্তার ওপর গুরুত্বারোপ করে গত সেপ্টেম্বরে নিউইর্য়কে গৃহীত অ্যাকশন প্লানের প্রতি তার সরকারের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন।
প্রধানমন্ত্রী পানি বিষয়ে টেকসই উন্নয়ন অর্জনে গবেষণা, উদ্ভাবন ও প্রযুক্তি স্থানান্তরে সহায়তা করতে একটি বৈশ্বিক তহবিল গঠনের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
বৈঠকে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন, ফিলিস্তিনির প্রধানমন্ত্রী রামি হামদাল্লাহ, সুইজারল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী বারনাবাস শিবোসিসো দাষ্কমিনি, কুক আইসল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী হেনরি পুনা, ফিজির প্রধানমন্ত্রী জোসাইয়া ভি বাইনিমারামা, কেনিয়ার প্রেসিডেন্ট উরো কেনিয়াত্তা, রুয়ান্ডার প্রেসিডেন্ট পল কাগামি, পলৌটমির প্রেসিডেন্ট ই রেমেনজেসাউ জুনিয়র, এবং মার্শাল আইসল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট মিজ হিলডা হেইনে।
এর আগে কনফারেন্স ভেন্যুতে অংশগ্রহণকারী রাষ্ট্রপ্রধান ও প্রতিনিধিদের স্বাগত জানান মরক্কোর রাজা ৬ষ্ঠ মোহাম্মদ, জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুন, ইউএনএফসিসি’র নির্বাহী সম্পাদক পেট্রেসিয়া ইস্পেনোসা এবং কপ-২২ এর প্রেসিডেন্ট সালাহেদিন মেজোয়ার।
প্রধানমন্ত্রী কপ-২২ সম্মেলনে যোগদানের উদ্দেশ্যে তিন দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে সোমবার বিকেলে এখানে পৌঁছেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্মেলনে বাংলাদেশের ৫৮ সদস্যের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তার সফরসঙ্গী অন্যান্যের মধ্যে রয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এএইচ মাহমুদ আলী, পরিবেশ ও বন মন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু, পানিসম্পদ মন্ত্রী ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ এবং পরিবেশ ও বন প্রতিমন্ত্রী আবদুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব।
মরক্কোর সাবেক রাজকীয় শহর মারাকাসে তিনদিনব্যাপী জাতিসংঘ আয়োজিত এই উচ্চ পর্যায়ের বৈশ্বিক জলবায়ু সম্মেলন (কপ-২২) অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
এ বৈঠকে বাংলাদেশসহ ১১৫টি দেশের ৮০জন রাষ্ট্র ও সরকার প্রধান এবং সিনিয়র মন্ত্রীরা অংশ নিচ্ছেন।
সূত্র: বাসস
সংবাদমেইল২৪.কম/বা/এনএস
Posted ২:১২ অপরাহ্ণ | বুধবার, ১৬ নভেম্বর ২০১৬
সংবাদমেইল | Nazmul Islam
.
.