
অনলাইন ডেস্ক : | বুধবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২১ | প্রিন্ট
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা- ফাইল ছবি
কণ্টকাকীর্ণ পথ অতিক্রম করে বিভিন্নভাবে সংগ্রাম করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজকের অবস্থানে এসেছেন বলে মন্তব্য বিভিন্ন রাজনীতিবিদ ও শিক্ষাবিদরা। তারা বলেন, বিশ্ব নেতাদের তালিকায় প্রধানমন্ত্রীর অবস্থান আজ সুদৃঢ়।
মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৫তম জন্মদিন উপলক্ষে আয়োজিত এক গোলটেবিল আলোচনায় তারা এসব কথা বলেন। বক্তারা বলেন, প্রধানমন্ত্রী তার শৈশব, কৈশোর, ছাত্রজীবন, সংগ্রাম, অনিশ্চয়তার মধ্যেই নিজেকে আদর্শ মানুষ হিসেবে গড়ে তুলেছেন। তিনি একজন সুযোগ্য সন্তান হিসেবে এদেশের অর্থনৈতিক মুক্তির বিপ্লবকে সফলভাবে সম্পাদন করে একটি দরিদ্র, দুর্নীতিগ্রস্ত রাষ্ট্রকে মাত্র ১২ বছরের মধ্যে একটি দুর্নীতিমুক্ত, প্রযুক্তিনির্ভর, অসাম্প্রদায়িক, প্রগতিশীল ও মর্যাদাশীল মধ্যম আয়ের রাষ্ট্রে পরিণত করেছেন।
মঙ্গলবার রাজধানীর গণগ্রন্থাগার চত্ত্বরে ‘হাসুমণির পাঠশালা’র উদ্যোগে প্রধানমন্ত্রীর জন্মোৎসবের আয়োজন করা হয়। সকালে বেলুন ওড়ানো এবং মিষ্টি বিতরণের মধ্য দিয়ে প্রধানমন্ত্রীর জন্মোৎসবের উদ্বোধন করেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্মেদ পলক। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক।
জন্মেৎসব উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে বিভিন্ন ধরনের চিত্রকর্ম প্রদর্শন করা হয়। এছাড়া প্রধানমন্ত্রীকে শুভেচ্ছা বার্তা জানানোর জন্যে রাখা হয় শুভেচ্ছা দেয়াল। উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জীবন ও কর্মের একটি গোলটেবিল আলোচনার আয়োজন করা হয়।
হাসুমণি’র পাঠশালার সভাপতি মারুফা আক্তার পপির সভাপতিত্বে আলোচনায় বক্তব্য রাখেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্মেদ পলক, সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী মো. আশরাফ আলী খান খসরল্ফম্ন এবং ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মাঈনুদ্দীন হাসান চৌধুরী। এতে ‘শেখ হাসিনা: বাইগার নদীর তীরের রাজার মেয়ে’ শীর্ষক মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. মশিউর রহমান। স্বাগত বক্তব্য দেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান অধ্যাপক জুনায়েদ হালিম।
জুনাইদ আহ্মেদ পলক বলেন, জননেত্রী শেখ হাসিনা কখনোই নিজের জন্মদিন আনুষ্ঠানিকভাবে উদযাপন করেন না এবং করা হোক এটাও চান না। আমরা স্বপ্রণোদিত হয়ে তার জন্যে করি। তিনি তার ৭৫ বছরের জীবনের মধ্যে ৭৪ বছর কষ্টের মধ্যে কাটিয়েছেন। ৭১ বছর তিনি অনিশ্চয়তা ও আঘাতের মধ্যে কাটিয়েছেন। জন্ম থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত সংগ্রামের মধ্য দিয়ে কাটিয়েছেন। তার জন্মের সময় তার পিতা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছাত্রাবস্থায় বিভিন্ন আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। প্রধানমন্ত্রীর শৈশব কেটেছে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ার প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলের বাইগার নদীর তীরে, সেখানেই তার বেড়ে ওঠা। বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রামে যুক্ত থাকার কারণে বঙ্গবন্ধু পরিবারকে সময় দিতে পারতেন না। কিন্তু জননেত্রী শেখ হাসিনা তার শৈশব, কৈশোর, ছাত্রজীবন, সংগ্রাম, অনিশ্চয়তার মধ্যেই নিজেকে আদর্শ মানুষ হিসেবে গড়ে তুলেছেন। তিনি একজন সুযোগ্য সন্তান হিসেবে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন একের পর এক পূরণের মাধ্যমে তিনি বাংলাদেশকে বর্হির্বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন।
মো. আশরাফ আলী খান খসরু বলেন, খুব মসৃণ পথ পাড়ি দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জীবনের ৭৫ বছর পার করেননি। কণ্টকাকীর্ণ পথ অতিক্রম করে বিভিন্নভাবে সংগ্রাম করে জীবিত অবস্থায় আজকের এই অবস্থানে এসেছেন। ১৯৭৫ সালে জাতির পিতাকে হত্যার সময় দেশের বাইরে থাকার কারণে তিনি বেচেঁ গিয়েছিলেন। পরবর্তীতে বিভিন্ন সময় তাকে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। আল্লাহর রহমতে তিনি বেচেঁ গেছেন বলে, আজকে বাংলাদেশ নতুন স্বপ্ন দেখতে পারছে। এই করোনা ভাইরাসের মহামারীতেও একজন মানুষও না খেয়ে মরেনি।
মূল প্রবন্ধে অধ্যাপক ড. মো. মশিউর রহমান বলেন, বাঙালির ইতিহাসে রবীন্দ্রনাথ এবং বঙ্গবন্ধু যেমন অপরিহার্য নামে পরিণত হয়েছে, শেখ হাসিনা তেমনি এ প্রজন্মের কাছে আবশ্যক অনুকরণীয় রাজনীতিক রূপে বিবেচিত। তার চিন্তার আধুনিকতা ও বিশ্বাস ও ভরসার কর্মদক্ষতা এখন বিশ্বস্বীকৃত। বাঙালিকে নিষ্ঠার সঙ্গে ভালবেসে তিনি মানুষের প্রাণে প্রাণে ঠাঁই করে নিয়েছেন। বাংলাদেশের প্রান্তিক মানুষের কাছে শেখ হাসিনা আজ এক আস্থার নাম, বিশ্বাস ও ভরসার নাম। এই অর্জন শুধু রাজনীতিক শেখ হাসিনার পরিসর দিয়ে পরিমাপ করা যথার্থ হবে না।
সভাপতির বক্তব্যে মারুফা আক্তার পপি বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হারিয়ে এই জাতি নিঃস্ব হয়ে পড়েছিলো। আমাদের সব হারানোর দুঃখকে যিনি আমাদের আশার আলো দেখিয়েছেন, তিনি হলেন জননেত্রী শেখ হাসিনা। সমস্ত কষ্টকে জয় করে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে হবে।
আলোচনা অনুষ্ঠান শেষে পথশিশু এবং বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের মাঝে খাবার বিতরণ করা হয়। সূত্র: সমকাল
Posted ১২:২১ পূর্বাহ্ণ | বুধবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২১
সংবাদমেইল | Nazmul Islam
.
.