
বিশেষ প্রতিনিধি,সংবাদমেইল২৪.কম | বুধবার, ০৪ জানুয়ারি ২০১৭ | প্রিন্ট
ঢাকা: বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ‘বিপথগামী’ কর্মীরাই সারা দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে বলে মন্তব্য করেছেন সংগঠটির কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক এসএম জাকির হোসেন।
তিনি বলেন, “কিছু বিপথগামী নেতাকর্মীরা নিজেদের মধ্যে দ্বন্দ্বে জড়িয়েছে। তাদের কারণে বিভিন্ন সময়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হচ্ছে।”
ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সাধারণ সম্পাদক এসএম জাকির হোসেনের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।
আগামী ৪ জানুয়ারি বাংলাদেশের বৃহত্তম এ সংগঠনটির ৬৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। এ বছর নিরক্ষরমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে কাজ করে যাবে সংগঠনটি।
১৯৪৮ সালের ৪ জানুয়ারি ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠা করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান। নাঈমউদ্দিন আহমেদকে আহ্বায়ক করা হয় তখন। এ পর্যন্ত ২৯ জন এ সংগঠনের সভাপতি নির্বাচিত হন। তার মধ্যে দুইজনকে বহিষ্কার করা হয়েছিল। সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন ৩১ জন। এ পদ থেকেও বহিষ্কার হয় দুইজন। জাকির হোসেন এ সংগঠনের ৩১তম সাধারণ সম্পাদক। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে পড়াশুনা করেছেন।
ছাত্রলীগের বর্তমান কমিটির সফলতা ও ব্যর্থতার প্রসঙ্গে জাকির হোসেন বলেন, “আমাদের সফলতার বিষয়ে আমি কিছু বলতে চাই না। সফলতার বিষয়ে মূল্যায়ন করবে সংগঠনের নেতাকর্মীরা। দেশবাসী এর বিচার করবে। আর ব্যর্থতা বলতে ছাত্রলীগের কিছু বিপদগামী নেতাকর্মী নিজেরা নিজেদের মধ্যে দ্বন্দ্ব জড়িয়েছে। তাদের কারণেই বিভিন্ন সময়ে বিশৃঙ্খলা হচ্ছে। তবে ছাত্রলীগের সব ইউনিটের নেতাকর্মীরা ঐক্যবদ্ধ আছেন। তবে সফলতা-ব্যর্থতা যাই থাকুন না কেন আগামীতে আমরা আরো দুর্বার গতিতে এগিয়ে যাবো বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলাদেশ গড়তে। আমরাই শেখ হাসিনার হাতকে আরো শক্তিশালী করবো।”
প্রতিবারের মতো এবারও সংগঠটির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে পাঁচ দিনের কর্মসূচি হাতে নিয়েছে ছাত্রলীগ। সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন বলেন, “প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে প্রথমবারের মতো এবার অনলাইন রেজিস্ট্রেশন করতে হচ্ছে নেতাকর্মীদের। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছাত্রলীগের কর্মীরা প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর স্লোগান নিয়ে নিজেদের প্রোফাইল পিকচার পরিবর্তন করছেন। এছাড়া দেয়াল লিখন, ব্যানার, ফেস্টুন আর বিলবোর্ড তো থাকছেই।”
সাম্প্রতিক সময়ে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘাত ও সহিংসতার বিষয়ে সাধারণ সম্পাদকের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, “ছাত্রলীগের কিছু বিপথগামী নেতাকর্মী বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে। কিন্তু আমরা বসে নেই। সঙ্গে সঙ্গে তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করছি। এর মাধ্যমে সারা দেশের নেতাকর্মীকে বার্তা দেয়া হয়, সংগঠনবিরোধী কর্মকাণ্ডে যে কেউ যুক্ত হোক, শাস্তি তাকে পেতেই হবে।”
গঠনতন্ত্র অনুসারে শিক্ষার্থীদের দাবি-দাওয়া নিয়ে কথা বলার কথা ছাত্র সংগঠনগুলোর। ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্রেও একই কথাই উল্লেখ আছে। কিন্তু হলের দাবিতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের আন্দোলনে বেশ কয়েকবার ছাত্রলীগের হামলার অভিযোগ এসেছে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে।
এ প্রসঙ্গে জাকির বলেন, “এ আন্দোলনে আমরাও ছিলাম। এ নিয়ে আমরা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছি। যার কারণে এর একটা সমাধানও হয়েছে। এ নিয়ে আমরা শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গেও বৈঠক করেছি। এ সংগঠন অতীতে ছাত্রছাত্রীদের পক্ষে ছিল, আগামীতেও থাকবে।”
৬৯ বছরে বাংলাদেশ ছাত্রলীগকে মূল্যায়ন করতে গিয়ে সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন বলেন, “জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাতে গড়া এই সংগঠন গৌরব, ঐতিহ্য, সংগ্রাম ও সাফল্যে উদ্ভাসিত। বাংলাদেশের স্বাধীকার ও স্বাধীনতা সংগ্রাম থেকে শুরু করে জাতির প্রয়োজনে সব সময়ই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে এ সংগঠন। সর্বশেষ ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচন, ওয়ান ইলেভেনের সময় অন্য কোনো ছাত্র সংগঠন মাঠে না থাকলেও ছাত্রলীগ ছিল সক্রিয়।”
তিনি যোগ করেন, “নতুন বছরে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের অঙ্গীকার হচ্ছে-২০১৭ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নিরক্ষরমুক্ত করা। বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়তে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিরক্ষরমুক্ত বাংলাদেশ উপহার দিতে চায় ছাত্রলীগ। এজন্য বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে।”
সংবাদমেইল২৪.কম/এনবি/এআর/এনএস
Posted ৫:১৯ অপরাহ্ণ | বুধবার, ০৪ জানুয়ারি ২০১৭
সংবাদমেইল | Nazmul Islam
.
.