
বিশেষ প্রতিনিধি,সংবাদমেইল২৪.কম | সোমবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০১৬ | প্রিন্ট
খুব সাধারণ একটা মেয়ে ইজু। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সবুজ ক্যাম্পাসে আর দশটা মেয়ের মতোই বন্ধু-বান্ধব ও লেখাপড়া নিয়ে ব্যস্ত। পড়া শেষ করে একটা চাকরিতো সবার মতোই প্রত্যাশা ছিল ইজু। কিন্তু কিছু ইচ্ছে হঠাৎ করেই মানুষের জীবনের রঙিন স্বপ্নঘুড়িকে আরো অনেকটা উচুতে নিয়ে যায় ক্লান্তিহীন উড়বে বলে।
ব্যাপারটা অতো সহজ না হলেও ইজুর ক্ষেত্রেও অনেকটা তাই হয়েছে। প্রকৃতির সঙ্গে আত্মবিশ্বাসে সৃষ্টি করেছে নতুন কিছু। ছোটবেলা থেকেই ইজুকে কেশবতী কন্যা বলেই ডাকতেন সবাই। মিষ্টি একটা মেয়ের ঘন কালো চুলে সবারই চোখ আটকে যেতো। অনেকে এর রহস্য জিজ্ঞাসা করতো তাকে। তখন হয়তো বোঝেনি তার নানির হাতে বানানো নারিকেল তেল তার জীবন আমূল বদলে দেবে।
কিন্তু আজ তা বেশ ভালোই বোঝেন ইজু। তাই প্রকৃতির বিশুদ্ধতায় নানির দেয়া সেই ফর্মুলায় নিজেই বানিয়ে ফেলেন অসাধারণ এক হেয়ার অয়েল। কিন্তু তেল বানিয়ে নিজেই কেশবতী হলেই তো তার স্বপ্ন পূরণ হবে না। তাই প্রথমে এটার নাম দিলেন। কিন্তু কি নাম দেয়া যায়? অনেক ভেবে নাম ঠিক করলেন ‘র্যাপাঞ্জেল সিক্রেট হেয়ার অয়েল’। শুধু নাম দিলেই হবে না, এটা পৌঁছে দিতে হবে নারীদের হাতে হাতে।
প্রথমে ইজু তেলটি বান্ধবীদের কাছে বিক্রি শুরু করেন। এরপর চিন্তাভাবনা ডানা মেলে। ভাবনা শুরু করেন এটা কীভাবে আরো বড় পরিসরে করা যায়। শুরুর দিকে ফেসবুক দিয়ে প্রচার করেন। কিছুদিনপরই অর্ডার, ডেলিভেরি সব নিয়ে বেসামালি অবস্থায় পড়ে যান। এর পর ‘শপআপ’ নামের একটি প্রতিষ্ঠানের খোঁজ পান। যারা ক্ষুদ্র অনলাইন ব্যবসার প্রসার সহায়তা করেন। কতগুলো অর্ডার এলো। ডেলিভেরি, অর্ডার নিশ্চিত করা। ফেক ক্লায়েন্টও বোঝার ব্যাপারটা সহজে ধরা ইত্যাদি।
২০১২ সালের ইজু যখন শুরু করছিল পেইজে অর্ডার এসেছিল মাত্র তিনটি। হয়তো তখন মনটা একটু খারাপই হয়েছিল। প্রত্যাশার চেয়ে অর্ডারটা কমই বটে। কিন্তু ইজু ভাবতেই পারেনি মাত্র ২ থেকে ৩ বছরের মধ্যে ‘র্যাপাঞ্জেল সিক্রেট অয়েল’ তার স্বপ্নকে পেরিয়ে আকাশ ছোঁবে।
বর্তমানে ইজুর প্রতিমাসে এক হাজারের বেশি তেলের অর্ডার আসে। ক্রেতা বেড়েই চলেছে। তেল তৈরির যাবতীয় উপাদান ইজু নিজেই সংগ্রহ করেন এবং নিজেই তৈরি করেন। এতে ‘র্যাপাঞ্জেল সিক্রেট হেয়ার অয়েলে’র কোয়ালিটি থেকে গেছে আগের মতোই নিখাদ। আর কখনোই কাস্টমারদের কাছ থেকে কোনো নেগেটিভ কথা শুনতে হয়নি।
ইজু বলেন, ‘‘সপআপ এর কারণে আমার পরিচিতিটা বাড়তে থাকে। না হলে আমার এ আবিষ্কার হয়তো অন্ধকারে পড়ে থাকতো। এ জন্য তাদের ধন্যবাদ দেয়ার ভাষা আমার জানা নেই।’’
সাহসী আর আত্মপ্রত্যায়ী ইজু গড়ে তুলেছেন সফল একটি প্রতিষ্ঠান। আমাদের সামাজে এমন অনেক ইজু আছেন। কিন্তু ইজুর মতো আত্মবিশ্বাসের অভাবে পারেন না তারা কিছু করতে। আসুন ইজুর মতো শুরু করুন। আর হয়ে যান একটি প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার। আপনার আত্মবিশ্বাস ও স্বপ্নপূরণে পাশে থাকবে ‘সপ আপ’।
সংবাদমেইল২৪.কম/এনবি/এমএস
Posted ১২:৩৯ অপরাহ্ণ | সোমবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০১৬
সংবাদমেইল | Nazmul Islam
.
.