শুক্রবার ৩১ মার্চ, ২০২৩ | ১৭ চৈত্র, ১৪২৯

কুলাউড়ায় হরিজন পল্লীর শূকরের অবাধে বিচরণে অতিষ্ঠ পৌরশহরের দেড় সহস্রাধিক পরিবার!

স্টাফ রিপোর্টার,সংবাদমেইল২৪.কম | রবিবার, ০৩ মে ২০২০ | প্রিন্ট  

কুলাউড়ায় হরিজন পল্লীর শূকরের অবাধে বিচরণে অতিষ্ঠ পৌরশহরের দেড় সহস্রাধিক পরিবার!

কুলাউড়ায় হরিজন সম্প্রদায় পল্লীর পালিত শূকের অবাধ বিচরণে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন পৌর শহরের ২ ও ৬ নং ওয়ার্ডের দেড় সহস্রাধিক পরিবারের বাসিন্দারা। অনেকের বাড়ি, ঘরে ঢুকে পড়ছে ওই শূকর এবং ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতিও করছে। হরিজন সম্প্রদায়কে তাদের পালিত শূকর প্রাণীগুলোকে পল্লীর ভিতরে নিয়ন্ত্রণ রাখতে বলায় উল্টো স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দাদের ওপর ক্ষেপে গিয়ে হামলার চেষ্টা চালায় বলে অভিযোগ ওঠেছে।

শনিবার (২ মে) দিনে ৬ নং ওয়ার্ডের সৈয়দ বাড়িতে এমনিভাবে ঢুকে পড়ে কয়েকটি শূকর। বাড়ির লোকজন ওই শূকরদের মালিক হরিজনদের ডেকে এর পরিত্রাণ চাইলে উল্টো হামলার চেষ্টা করে হরিজন সম্প্রদায়ের কয়েকজন।


এঘটনার পর আশেপাশের স্থানীয়রা ক্ষিপ্ত হয়ে পাল্টা অবস্থান নিলে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। খবর পেয়ে পৌর কাউন্সিলর কায়ছার আরিফ (২ নং) ও রাসেল আহমদ চৌধুরী (৬ নং) এবং কুলাউড়া থানা এস আই মাসুদের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে উত্তেজিত জনতাকে শান্ত করেন। এবং প্রতিশ্রুতি দেন যে, এবিষয় শূকরদের মালিকদের সাথে আলোচনা করে সমাধান করে দিবেন। যাতে তারা তাদের পশুগুলোকে নিজ দায়িত্বে খামার করে রাখেন এই শর্তে জনতা শান্ত হয়ে ফিরে যান।

জানা যায়, বিগত কয়েকবছর থেকে কুলাউড়া পৌরসভার ২ নং ওয়ার্ডের হরিজন সম্প্রদায়ের (সুইপার পল্লী) কয়েকটি পরিবার অবাধে পশু (শূকর) পালন করে আসছে। এই স্থানে দুই শতাধিক পশু কোন খামার ছাড়া অবাধে পালন করা হচ্ছে। এসব পশু যখন তখন মানুষের বাড়ি ঘরে ঢুকে পড়ে। এমনকি ঘরের রান্না ঘরেও ঢুকে যায়। এতে এলাকার সাধারণ মানুষের জনজীবন ব্যাহত হওয়ার পাশাপাশি মারাত্মকভাবে স্বাস্থ্যঝুঁকির সম্মুখীন হচ্ছেন বলে অভিযোগ করছেন। এই এলাকার আশেপাশের কৃষি জমি ফলফসলাদি বিনষ্ট করাসহ বিভিন্ন ধর্মীয় স্থানে (কবর স্থানে) ঢুকে কবর খুঁড়ারমত স্পর্শকাতর ঘটনার সূত্রপাত করছে পশুগুলো।


স্থানীয়দের অভিযোগ হরিজনরা কোন নিয়মনীতি না মেনে তাদের পালিত এসব শূকর অবাধে বিচরণের জন্য ছেড়ে দেয়ে। আর শূকররা ক্ষেতের ফসল নষ্ট করে দেয়। তাছাড়া শূকর বাসা বাড়িতে ঢুকে যাওয়ায় ছোট বাচ্চারা আতঙ্কে থাকে।
স্থানীয়রা আরো জানান, বিষয়টি এর আগেও হরিজনদের জানালেও তারা উল্টো বলতো আমাদের পারমিশন আছে শূকর পালনের।

বিষয়টি থেকে পরিত্রাণ পেতে এলাকাবাসী প্রশাসন ও পৌর কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।


যার বহিঃপ্রকাশ হিসেবে শনিবার পৌর শহরের ৬ নং ওয়ার্ডের উত্তর জয়পাশা ও ২ নং ওয়ার্ডের স্থায়ী বাসিন্দাদের সাথে সুইপার কলোনির বাসিন্দাদের হামলা ও পাল্টা হামলার ঘটনাটি ঘটে।

এবিষয়ে ভুক্তভোগী স্থানীয় সৈয়দ নাহিদ ও সৈয়দ আজিজুল ইসলামসহ একাধিক ব্যাক্তি জানান, হরিজনরা তাদের পালিত শূকরগুলো অবাধে ছেড়ে দেয়ায় অনেকের বাড়ি ঘরে ঢুকে পড়ে এসব প্রাণী। বারবার বুঝিয়ে বললেও তারা (হরিজন সম্প্রদায়) এবিষয়ে পাত্তা দিতে চায় না। আজও একই ঘটনার সূত্রপাত হলে স্থানীয়রা ক্ষিপ্ত হয়। পরে অবশ্য স্থানীয় কাউন্সিলর ও প্রশাসনের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়। আমরা এর স্থায়ী সমাধান চাই।

কুলাউড়া পৌর কাউন্সিলর কায়সার আরিফ ও রাসেল আহসদ চৌধুরী জানান, হরিজন সম্প্রদায় কর্তৃক পালিত এসব পশু অবাধে বিচরণে স্থানীয় অনেকেই ক্ষয়ক্ষতির শিকার হচ্ছে। যেহেতু বিষয়টি নিয়ে আপত্তি উঠেছে তাই তাদেরকে আপাতত এগুলো বেধে রাখার জন্য বলা হয়েছে। এছাড়াও আজ রবিবার হরিজন সম্প্রদায়ের সাথে বৈঠক করে এর স্থায়ী সমাধানের জন্য বিহীত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

কুলাউড়া থানার এসআই মাসুদ জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করি। বিষয়টি স্থায়ীভাবে সমাধানের জন্য পৌর কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। প্রয়োজনে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণে পদক্ষেপ নেয়া হবে।

Facebook Comments Box

Comments

comments

advertisement

Posted ৪:১৫ অপরাহ্ণ | রবিবার, ০৩ মে ২০২০

সংবাদমেইল |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

এ বিভাগের আরও খবর

সম্পাদক ও প্রকাশক : মো. মানজুরুল হক

নির্বাহী সম্পাদক: মো. নাজমুল ইসলাম

বার্তা সম্পাদক : শরিফ আহমেদ

কার্যালয়
উপজেলা রোড, কুলাউড়া, মেলভীবাজার।
মোবাইল: ০১৭১৩৮০৫৭১৯
ই-মেইল: sangbadmail2021@gmail.com

sangbadmail@2016 কপিরাইটের সকল স্বত্ব সংরক্ষিত