
বিশেষ প্রতিনিধি: | শনিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২০ | প্রিন্ট
কুলাউড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) কার্যালয়ের অফিস সহায়ক রুনা বেগমের বিরুদ্ধে প্রতারণার মাধ্যমে টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। সরকারী ঘরের তালিকায় নাম সংযুক্ত করে দেয়ার জন্য বেশ কয়েকজন হতদরিদ্র মহিলার কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন তিনি।
(২৬ নভেম্বর) বৃহস্পতিবার বিকালে ১০-১২ জন মহিলা এসে ইউএনও এটিএম ফরহাদ চৌধুরীকে বিষয়টি জানালে তাৎক্ষনিক কয়েকজনের টাকা ফেরৎ দেন রুনা।
উপজেলার ভূকশিমইল ইউনিয়নের সাদিপুর এলাকার বাসিন্দা হোছনারা বেগম বলেন, তিনি বিভিন্ন কাজে উপজেলা পরিষদে আসা-যাওয়া করেন। এই সুবাদে পরিচয় হয় ইউএনও কার্যালয়ের অফিস সহায়ক রুনা বেগমের সাথে। এই সুবাদে রুনা বেগম তাকে বলেন, এলাকায় হতদরিদ্র মহিলা থাকলে তাদের নাম তিনি সরকারী পাকা ঘরের তালিকায় তুলে দিতে পারবেন। বিনিময়ে তাকে জনপ্রতি ১ হাজার টাকা করে দিতে হবে। এই কথা শুনে হোছনারা বেগম সাদিপুর ও মীরশংকর এলাকার ২০ জন হতদরিদ্র মহিলার ভোটার আইডি কার্ডের ফটোকপি এবং জনপ্রতি ১ হাজার করে ২০ হাজার টাকা রুনা বেগমের হাতে তুলে দেন। সেখান থেকে রুনা বেগম যাতায়াত খরচের জন্য হোছনারাকে কিছু টাকা দিয়েছেন। কিন্তু টাকা নেয়ার ৩ মাস পর থেকে রুনা বেগম তাকে কোন পাত্তাই দিচ্ছেননা। অফিসে আসলেই এই সপ্তাহে হবে, আগামী সপ্তাহে হবে বলে ফিরিয়ে দেন। এলাকার মহিলাদের বকাঝকা সইতে না পেরে নিরুপায় হয়ে ইউএনও মহোদয়ের শরনাপন্ন হয়েছেন।
একই ইউনিয়নের মীরশংকর এলাকার বাসিন্দা রুবেনা বেগম, আছলিমা বেগম, আমেনা বেগম, রেনু বেগমসহ উপস্থিত ৮-১০ জন মহিলা জানান, তারা সকলেই পৃথকভাবে ১ হাজার থেকে ৩ হাজার টাকা করে রুনা বেগমের কাছে দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, সরকারী ঘরের তালিকায় তাদের নাম তুলে দিবেন। তারা সকলেই পাকা ঘর পাবেন। কিন্তু এখন রুনা বেগম টালবাহানা শুরু করায় তারা ইউএনও মহোদয়ের কাছে বিষয়টি জানাতে এসেছেন। বিষয়টি নিয়ে তারা লিখিত অভিযোগের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
এদিকে এই রুনা বেগমের আরও নানা অপকর্মের গোঞ্জন রয়েছে মানুষের মাঝে। পার্শ্ববর্তী উপজেলা শ্রীমঙ্গলের বাসিন্দা রুনা বেগম ২০১৩ সালে কুলাউড়ায় যোগদানের পরপরই নানা অপকর্মে জড়িয়ে পড়েন। নিজের উর্ধ্বতন কর্মচারিদের অনেক সময় কোন পাত্তাই দেননা। সরকারের উপর মহলে তার নিজস্ব লোক আছে, এমনটি প্রচার করে অফিসে নিজের মনমর্জি আসা-যাওয়া এবং চলাফেরা করেন। তার দম্ভোক্তিমুলক কথার স্রোতে অনেকেই তার সাথে তর্কে জড়ানোর সাহস করেননা।
এব্যাপারে ইউএনও কার্যালয়ের অফিস সহায়ক রুনা বেগম ২০ হাজার টাকার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, আমি তাদের কাছ থেকে ১হাজার ৯শ টাকা নিয়েছিলাম। কিন্তু স্যারের কাছে বিচার দেয়ায় সেই টাকাগুলো আবার ফেরৎ দিয়ে দিছি।
কুলাউড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার এটিএম ফরহাদ চৌধুরী জানান, কয়েকজন মহিলা এসে বিষয়টি বলার পর রুনা বেগমকে (টাকা নিয়ে থাকলে) তাৎক্ষনিক তাদের টাকা ফেরৎ দেয়ার নির্দেশ দিয়েছি। ভুক্তভোগীরা লিখিত অভিযোগ দিলে তদন্ত স্বাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
Posted ১:১৩ অপরাহ্ণ | শনিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২০
সংবাদমেইল | Nazmul Islam
.
.