
বিশেষ প্রতিনিধি,সংবাদমেইল২৪.কম | বৃহস্পতিবার, ১৬ মার্চ ২০১৭ | প্রিন্ট
ভুমিকম্পে ভবন ধ্বস আতংকে ক্ষুদে শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ে পাঠ গ্রহণে আসার আগ্রহ দিনে দিনে হারিয়ে ফেলছে। মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার উত্তর চুনঘর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও অবিভাবকরাও তাদের শিক্ষার্থীদের নিয়ে ভবন ধ্বসে হতাহতের আশংকায় ভুগছেন বছরের পর বছর ধরে। ঝড়ে পড়ার সংখ্যা বৃদ্ধিও পাশাপাশি বিদ্যালয়ের ২ শতাধিক শিক্ষার্থীর নিয়মিত পাঠ গ্রহণে ব্যঘাত সৃষ্টি হলেও বিষয়টি নজরে আসেনি উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তর ও শিক্ষা অফিসের দায়িত্বশীলদের।
সরজমিনে স্কুলে গিয়ে জানা যায়, উপজেলার কাদিপুরে অবস্থিত ৩০ শতাংশ জায়গার উপর ১৯৮০ সালে উওর চুনঘর রেজিষ্ট্রার্ড বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্টিত হয়। পরবর্তীতে ২০১৩ সালে বিদ্যালয়টি সরকারি করণ হয়।
ইতিপূর্বে ২০১৬ ও ২০১৭ সালের ভুমিকম্পে ওই বিদ্যালয়ের প্রতিটি কক্ষের দেয়াল ও ছাদে ফাটল ধরে অধিকাংশ স্থান ধ্বসে পড়েছে। ২০১৬ সালে বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ১৯৯ জন। ২০১৭ সালে বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা দেখা গেছে ১৫০ জন। বিদ্যালয়ে মঞ্জুরী কৃত শিক্ষকের সংখ্যা প্রধান শিক্ষক সহ ৪ জন। বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণীর শিক্ষার্থী শামছ ও তৃতীয় শ্রেণীর শিক্ষার্থী রাকিব মিয়া জানায়, আমাদের সহপাঠীদের অনেকেই স্কুলের ছাদ ভেঙ্গে মাথা ফাটনের ভয়ে নিয়মিত ক্লাসেই আসতে চাইনা।
চতৃর্থ শ্রেণীর তায়েফ ও পঞ্চম শ্রেণীর শিক্ষার্থী তানজিনাসহ অসংখ্য শিক্ষার্থী তাদের বিদ্যালয়ে গেলে জানায়, আমরা ভয়ে ভয়ে পাঠ গ্রহণ করি। তারা আরো বলে অন্য স্কুলে ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা প্রতি বছর বেড়ে থাকে আর আমরার স্কুলে বিল্ডিং ভাঙ্গার ভয়ে ছাত্র- ছাত্রীর সংখ্যা কমতেই থাকে। অভিভাবকরা বলেন, স্কুল ভবনের ফাটল আর শ্রেণী কক্ষ সংকটের কারনে আমরা অবিভাবকরা প্রতিদিন দু:শ্চিন্তা মাথায় নিয়ে শিশুদের স্কুলে পাঠাই।
বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও জমি দাতা বীরেন্দ্র দাস বলেন, এখন বর্তমানে কক্ষ ও গাছতলায় ক্লাস হচ্ছে । ঝুঁকি নিয়ে শিক্ষার্থীরা ক্লাস করতে চায় না। বৃষ্টি ঝড় আসলেই আমরা স্কুল ছুটি দিয়ে দেই। গত ২ বছর ধরেই বিদ্যালয়ের এ দুরবস্থার কথা লিখিত ভাবে উপজেলা চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তর, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস ও চেয়ারম্যান ৬নং কাদিপুর ইউনিয়ন পরিষদকে জানানো হয়েছে কিন্তু তারা নতুন ভবন নির্মাণ কিংবা এ ভবনটি সংস্কারে জন্য কোন রকম উদ্যোগ নিতে আগ্রহী না।
এলাকাবাসীর গণ্যমান্য ব্যক্তিরা বলেন, শিক্ষক শিক্ষার্থী, অভিভাবক সবাই ভবন ধ্বসে হতাহতের আতংকে ভুগছেন, বিষয়টি লিখিত ভাবে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের কার্যালয়ে অবহিত করেছেন, কিন্তু কোন ব্যবস্থাই নেয়ার লক্ষণ দেখছি না।
উপজেলা ভারপ্রাপ্ত শিক্ষা অফিসার মাসুদুর রহমান বলেন, আমি নতুন আসছি কুলাউড়া উপজেলায়। বিদ্যালয়ে এখনও যাইনি। সরেজমিনে আমি স্কুলটি পরিদর্শন করে পদক্ষেপ নিব।
সংবাদমেইল২৪.কম/এসএ/এনএস
Posted ৪:১৯ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ১৬ মার্চ ২০১৭
সংবাদমেইল | Nazmul Islam
.
.