
বিশেষ প্রতিনিধি,সংবাদমেইল২৪.কম | বুধবার, ২৯ এপ্রিল ২০২০ | প্রিন্ট
কুলাউড়ায় সরকারের খাদ্য বান্ধব কর্মসূচীর আওতায় দশ টাকা কেজি ধরে চাল কালোবাজারে বিক্রির অভিযোগে জড়িত দু’জন কে আটক করেছে পুলিশ। আটককৃতরা হলেন,উপজেলার কাদিপুর ইউনিয়নের কৌলারশী গ্রামের বাসিন্দা সুন্দর মিয়ার ছেলে আব্দুল হাকিম নবেল (৪১) ও তাঁর সহযোগী একই এলাকার বাসিন্দা লালা মিয়ার ছেলে সুহেল মিয়া (৩৫)। এদিকে চালের ডিলার আব্দুর রকিবসহ জড়িত তিন জন পলাতক রয়েছেন।
এ ঘটনায় উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক বাদী হয়ে (২৮ এপ্রিল) মঙ্গলবার বিকেলে ডিলারসহ ৪ জনকে আসামি করে কুলাউড়া থানায় মামলা দায়ের করেন।
মামলার এজাহার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে সরকার হতদরিদ্রদের জন্য দশ টাকা কেজি ধরে চাল বিক্রি করছে। এরই প্রক্ষিতে কাদিপুর ইউনিয়নের ৩২৩ জন দরিদ্র কার্ডধারী ব্যক্তি দশ টাকা কেজি ধরে সর্বোচ্চ ত্রিশ কেজি চাল কিনতে পারবেন। দরিদ্রদের সেই চাল মঙ্গলবার গুদাম থেকে কার্ডধারীদের মধ্যে বিক্রি করার কথা। চালের ডিলার উপজেলার কাদিপুর ইউনিয়নের কৌলারশী গ্রামের বাসিন্দা মো: আব্দুর রকিব অসুস্থ থাকায় তাঁর ভাতিজা আব্দুল হাকিম নবেল গুদাম পরিচালনা করছিলেন। এই সুযোগে নবেল গোপনে ইউনিয়নের পেকুরবাজারের ব্যবসায়ী সুহেল মিয়া ও উস্তার মিয়ার কাছে কালোবাজারে ৯ বস্তা চাল ৮০০ টাকা করে বিক্রি করেন বলে জানা গেছে।
মঙ্গলবার সকালে চালগুলো বাইসাইকেল যোগে গুদাম থেকে অন্যত্র নিয়ে যাওয়ার সময় সকাল ১১টায় কৌলা কাদিপুরপর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সম্মুখে স্থানীয় ওয়ার্ড মেম্বার মো: আজাদ মিয়াসহ এলাকাবাসী তাদের দেখতে পেয়ে তাদের গতিরোধ করে ২ বস্তা চাল হাতেনাতে ধরে তাদের উত্তমমধ্যম দেন। পরে ওই এলাকার কয়েক শত লোকজন রাস্তায় বেরিয়ে এসে উপজেলা প্রশাসন ও থানা পুলিশকে বিষয়টি অবগত করেন।
পরে কুলাউড়া থানার এস আই মাসুদ আলম ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে দুই বস্তা চাল জব্দ করেন। এরপর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এটিএম ফরহাদ চৌধুরী, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (কুলাউড়া সার্কেল) সাদেক কাওসার দস্তগীর, কুলাউড়া থানার অফিসার ইনচার্জ মো: ইয়ারদৌস হাসান, উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক বিনয় দেব ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন।
এসময় আটককৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে ইউনিয়নের হোসেনপুর গ্রামের বাসিন্দা উস্তার মিয়ার বাড়ি থেকে ৪ বস্তা চাল, সুহেল মিয়ার দোকান থেকে ৩ বস্তা চাল জব্দ করেন।
এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ব্যবসায়ী উস্তার মিয়া ও তাঁর ছেলে শামীম মিয়া ও ইউনিয়নের কৌলারশী গ্রামের মছব্বির মিয়ার ছেলে ব্যবসায়ী আব্দুল আজিজ রিপন পলাতক রয়েছেন।
উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক বিনয় দেব বলেন, সরকারের খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির আওতায় চাল প্রকৃত কার্ডধারীদের কাছে বিক্রি করার কথা। কিন্তু ডিলার তা না করে তাঁর সহযোগীদের নিয়ে কালোবাজারে অধিক মুনাফার আশায় বিক্রি করেন। এ ঘটনায় আমি নিজে বাদী হয়ে ৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করি।
কুলাউড়া থানার অফিসার ইনচার্জ মো: ইয়ারদৌস হাসান আটকের বিষয়ে সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, এ ঘটনায় উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক বাদী হয়ে মামলা করেছেন। আটককৃতদের আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরন করা হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এ টি এম ফরহাদ চৌধুরী বলেন, এ ঘটনায় চালের ডিলার আব্দুর রকিবের লাইসেন্স বাতিল করা হবে। আর জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নেয়ার জন্য থানা পুলিশকে বলা হয়েছে।
Posted ৪:৩৩ অপরাহ্ণ | বুধবার, ২৯ এপ্রিল ২০২০
সংবাদমেইল | Nazmul Islam
.
.