শুক্রবার ৪ অক্টোবর, ২০২৪ | ১৯ আশ্বিন, ১৪৩১

কুলাউড়ায় কিশোরদের মুর্তিমান আতংক হোসেন মনসুর!

বিশেষ প্রতিনিধি,সংবাদমেইল২৪.কম | শুক্রবার, ০৬ মার্চ ২০২০ | প্রিন্ট  

কুলাউড়ায় কিশোরদের মুর্তিমান আতংক হোসেন মনসুর!

কুলাউড়ায় একের পর এক কোমলমতি কিশোরদের ফুসলিয়ে জোরপূর্বক বলাৎকারের ঘটনায় কিশোরদের কাছে এক মুর্তিমান আতংকের নাম হয়ে উঠেছেন সাবেক সেচ্ছাসেবকলীগ নেতা হোসেন মনসুর উদ্দিন। তাঁর বিতর্কিত এসব কর্মকান্ডে স্কুল পড়ুয়া ছাত্র ও কিশোর ছাড়াও তাদের অভিভাবকরা রয়েছেন নানা আতংকে। সর্বশেষ কিছুদিন পূর্বে কয়েকজন ছাত্রকে বলাৎকারের ঘটনায় ধরা পড়লে স্থানীয় শালিসি ব্যক্তিবর্গের কাছে স্টাম্পে মুচলেখা দিয়ে রক্ষা পায় সে। তাঁর এমন কর্মকান্ডে রাজনীতিমহল থেকে শুরু করে কুলাউড়ায় সাধারণ মানষের মাঝে চলছে নানা কানাঘুষা।

স্থানীয় এলাকাবাসী ও ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে জানা যায়,সাবেক সেচ্ছাসেবকলীগ নেতা হোসেন মনসুর(৪৮) এখনো বিয়ের পিড়িতে বসেননি। কিন্তু সে দীর্ঘদিন থেকে শহরের বিভিন্ন জায়গায় স্কুল পড়ুয়া ছাত্র এবং কিশোরদের নানা প্রলোভন ও ভয়ভীতি দেখিয়ে জোঁরপূর্বক একেরপর এক বলাৎকারের ঘটনা ঘটিয়ে আসছে। কিন্তু হোসেন মনসুরের এমন কর্মকান্ডে ভয়ে কেউ তাঁর বিরুদ্ধে কথা বলতে সাহস পায়নি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেক ছাত্র কিশোররা তার লালশার স্বীকার হয়েছে।


বিশেষ করে প্রতিদিন সন্ধ্যার পর বিভিন্ন চা-বাগানে গিয়ে মদ্য পান করে এসব কাজে লিপ্ত হয়। সাম্প্রতি প্রায় এক মাস পূর্বে শহরের রাবেয়া আদর্শ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের (এস) অধ্যাক্ষরের এক ছাত্রকে হোসেন মনসুর জোঁরপূর্বকভাবে মাগুরা এলাকার একটি বাসায় নিয়ে বলাৎকারের ঘটনা ঘটায়। এঘটনায় ওই ছাত্র বিষয়টি নিয়ে তাঁর সহপাঠিদের সাথে শেয়ার করলে সহপাঠিরাও বলেন তাদের সাথেও সে এমন ঘটনা ঘটিয়েছে। পরে ঘটনার স্বীকার আরও ছাত্র ও কিশোররা একত্রিত হয়ে এলাকার এক বড় ভাইয়ের কাছে তাঁর এমন কর্মকান্ডের বিষয়টি খুলে বলে। একপর্যায়ে নির্যাতিত ১০-১২ জন কিশোরসহ এলাকাবাসী মিলিত হয়ে গত ১২ ফেব্রুয়ারী সন্ধ্যায় হোসেন মনসুরকে পৌরশহরের মাগুরা এলাকায় আটক করে উত্তম-মাধ্যম দেয়। খবর পেয়ে স্থানীয় আ’লীগ নেতারা সঠিক বিচারের আশ্বাস দিয়ে তাকে উদ্ধার করে নিয়ে যায়। পরে শহরের উত্তরবাজার টিটিডিসি এরিয়াস্থ আ’লীগ নেতা আব্দুল বারীর বাসায় এক শালিসি বৈঠক অনুষ্টিত হয়। এসময় হোসেন মনসুর এসব ঘটনার জন্য কিশোর,অভিভাবক ও গন্যমান্য ব্যাক্তিদের কাছে জনসমুক্ষে প্রকাশ্যে ক্ষমা চায় এবং ভবিষ্যতে এধরনের অনৈতিক কর্মকান্ড আর কোনদিন করবেনা বলে অঙ্গিকার করে স্টাম্পে মুচলেকা দিয়ে রক্ষা পায়।
পৌর শহরের মাগুরা এলাকার বাসিন্দা (এস,এ,এইচ ও কলেজ পড়ুয়া টিএস,আর) অধ্যাক্ষরের এসব ছাত্ররা মুঠোফোনে বলেন, তাদের সাথে ছাড়াও লম্পট হোসেন মনসুর শতাধিক কিশোরদের সাথে তার বিকৃত যৌন আচরন করেছে।

শালিসি বৈঠকে উপস্থিত মাগুরা এলাকার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন জানান, বৈঠকে হোসেন মনসুর ঘটনার বিষয় স্বীকার করে উপস্থিত সবার কাছে ক্ষমা চায় ও স্টাম্পে মুচলেকা দেয়।


কুলাউড়া ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাবেক নেতা এম আব্দুল.. জানান, আসলে এটা তাঁর নেশা হয়ে গেছে। নিউজটি না করলে ভালো হয়।

প্রবাসী বকুল নামে একজন তাঁর ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেন, হোসেন মনসুর কুলাউড়ায় একসময় বড় বড় নেতাদের চামচাগীরি করা ছিলো তাঁর পেশা। ওই নেতাদের কাছের লোক হিসেবে থানার ছিচকে দালালি করতো, এছাড়াও অনেক নেতার মনোরঞ্জনে অনেক কিশোরদের বলাৎকারের মূল হোতা ছিলো। সে বিয়েও পর্যন্ত করেনি,কুলাউড়ার অনেকটা ওপেন সিক্রেট ছিলো তার মানসিক বিকারগ্রস্থ কান্ডকীর্তি,এবার নিজে ধরা খেলো বলাৎকার করতে গিয়ে গণধোলাই,মুচলেখা দিয়ে মুক্তি পায়। কুলাউড়া থানা প্রশাসনকে ওই প্রবাসী অনুরোধ জানান এসব অসভ্যদের বয়কট করে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার।


আ’লীগ নেতা আব্দুল বারী এঘটনায় তাঁর বাসায় বিচারের সত্যতা নিশ্চিত করে মুঠোফোনে বলেন, বৈঠকে উপজেলা আ’লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মনসুর চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন। এঘটনায় হোসেন মনসুর এসব কর্মকান্ড আর করবে না বলে উপস্থিত সকলের সম্মুখে স্টাম্পে দস্তগত দিয়েছে।

এব্যাপারে অভিযুক্ত সাবেক সেচ্ছাসেবক লীগ নেতা হোসেন মনসুরের সাথে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি এবিষয়ে কিছু জানেন না বলে দ্রুত ফোন কেটে দেন।

Facebook Comments Box

Comments

comments

advertisement

Posted ৭:২৯ অপরাহ্ণ | শুক্রবার, ০৬ মার্চ ২০২০

সংবাদমেইল |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

এ বিভাগের আরও খবর

সম্পাদক ও প্রকাশক : মো. মানজুরুল হক

নির্বাহী সম্পাদক: মো. নাজমুল ইসলাম

বার্তা সম্পাদক : শরিফ আহমেদ

কার্যালয়
উপজেলা রোড, কুলাউড়া, মেলভীবাজার।
মোবাইল: ০১৭১৩৮০৫৭১৯
ই-মেইল: sangbadmail2021@gmail.com

sangbadmail@2016 কপিরাইটের সকল স্বত্ব সংরক্ষিত