
বিশেষ প্রতিনিধি,সংবাদমেইল২৪.কম | শনিবার, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২০ | প্রিন্ট
কুলাউড়া উপজেলার টিলাগাও উচ্চ বিদ্যালয়ে বড় অংকের কমিশন পেয়ে শিক্ষার্থীদের নিষিদ্ধ সহায়ক গাইড বই কিনতে বাধ্য করছেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক। কমিশন প্রাপ্ত প্রকাশনীর গাইড ছাড়া অন্য প্রকাশনীর গাইড কিনতে দিচ্ছেন না শিক্ষার্থীদের। আবার কেউ কেউ অন্য প্রকাশনীর বই কিনলেও এটা মেনে নিচ্ছেন না কমিশন প্রাপ্ত শিক্ষক। বাধ্য হয়ে শিক্ষার্থীরা শিক্ষককের দেয়া নির্ধারিত প্রকাশনীর গাইড কিনছেন। এমন অভিযোগ উটেছে ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষককের বিরুদ্বে। এনিয়ে অনেক শিক্ষার্থী ও অভিবাবকদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। ভয়ে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ করতে ও পারছেন না।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, টিলাগাও উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক উমর আলী এবার লেকচার পাবলিকেশন্স প্রকাশনীর কাছ থেকে মোটা অংকের কমিশন পেয়ে তাদের গাইড ও গ্রামার বই ক্রয় করতে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কাছে তালিকা দিয়েছেন। এমন কি তাদের দেওয়া তালিকা বাদ অন্য কোনো প্রকাশনীর গাইড ও গ্রামার বই কিনলে পরিক্ষায় কমন প্রশ্ন আসবে না এমনকি ভালো রিজাল্ট ও করতে পারবেনা বলে তাদের জানিয়ে দেন। শিক্ষককের এমন নির্দেশে অনেকটা বাধ্য হয়েই শিক্ষার্থীরা লেকচার প্রকাশনীর গাইড ক্রয় করতে হচ্ছে।
এদিকে গাইড বিক্রি নিষিদ্ধ হলেও সচেতন অভিভাবকরা মনে করেন, প্রশাসন কঠোর হলে এভাবে প্রকাশ্যে কেউ শিক্ষার্থীদের গাইড ক্রয় করার কথা বলতো না এমনকি শিক্ষকরাও শিক্ষার্থীদের হাতে তালিকাও সরবরাহ করতে পারতেন না। অভিভাবকরা বলছেন, অধিকাংশ শিক্ষার্থী ইতিমধ্যে গাইড বইয়ের উপর নির্ভর হয়ে পড়েছে। যার ফলে সরকারের সৃজনশীল পদ্ধতির মহতি উদ্যোগ ভেস্তে যাচ্ছে।
নাম গোপন রাখার শর্তে বিদ্যালয়ের একজন অভিভাবক বলেন, প্রধান শিক্ষক লেকচার প্রকাশনীর গাইড বই কিনতে শিক্ষার্থীদের বাধ্য করছেন। এ বিদ্যালয়ে অন্য কোনো প্রকাশনীর গাইড বই চলে না। শিক্ষকরা লাইব্রেরীর নাম সহ নির্দিষ্ট প্রকাশনীর তালিকা শিক্ষার্থীদের হাতে সরবরাহ করছেন। নির্ধারিত প্রকাশনীর গাইড ছাড়া অন্য কোনো প্রকাশনীর গাইড বই ওই বিদ্যালয়ে গ্রহণ যোগ্য নয়।
নাম গোপন রাখার শর্তে স্কুলের এক শিক্ষক বলেন, বছরের শুরুতেই গাইড প্রকাশনীর প্রতিনিধিরা শিক্ষকদের বড় অংকের ডোনেশন দেন। পরবর্তীতে শিক্ষকরা ওই প্রকাশনী গাইড কিনতে বাধ্য করেন শিক্ষার্থীদের। এই বাণিজ্যের সাথে প্রধান শিক্ষক সহ অনেকেই জড়িত।
টিলাগাও উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক উমর আলীর সাথে মুটোফনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, সরকার এমনিতেই এসব গাইড বই নিষিদ্ধ করেছে তাহলে আমরা কিভাবে লেকচার প্রকাশনী থেকে কমিশন নিয়ে তাদের বই চালাবো। যারা এসব বিষয়ে অভিযোগ করেছেন তা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট।
এ ব্যাপারে কুলাউড়া মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোহাম্মদ আনোয়ার বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই, কেউ অভিযোগ ও দেয়নি। আমি খোজ নিয়ে দেখবো বিষয়টি সত্য হলে প্রধান শিক্ষককের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
Posted ৮:১৪ অপরাহ্ণ | শনিবার, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২০
সংবাদমেইল | Nazmul Islam
.
.