
কুলাউড়া সংবাদদাতা:: | বুধবার, ০১ মার্চ ২০২৩ | প্রিন্ট
কুলাউড়া উপজেলার জয়চন্ডী ইউনিয়নের বিজয়াবাজার সংলগ্ন মাঠে ওরুসের নামে অশ্লিলতা ও যাত্রাপালা বন্ধের জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর আবেদন করেছেন স্থানীয় পঞ্চায়েত কমিটির লোকজন। জয়চন্ডী ইউনিয়নের ৭ ও ৮ নং ওয়ার্ডের কামারকান্দি, গিয়াসনগর ও রংগীরকুল এলাকায় অবস্থিত ১১টি পঞ্চায়েতের সভাপতি-সম্পাদকগন শীল-স্বাক্ষর করে এই আবেদন করেছেন। একই আবেদন কুলাউড়া থানার অফিসার ইনচার্জ ও জয়চন্ডী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বরাবরও দেওয়া হয়েছে।
পঞ্চায়েতের দেওয়া আবেদনের কপি থেকে জানা যায়, বিগত কয়েক বছর যাবত স্থানীয় কয়েকজন লোক একত্রিয় হয়ে বিজয়াবাজারের পাশে অবস্থিত বাঘের টিলাকে “বাঘা শাহ্” নামে রূপান্তরিত করে ওরুস শুরু করে। স্থানীয় সচেতন লোকজন শুরু থেকেই এর প্রতিবাদ জানিয়ে আসলেও আয়োজকরা কোন কর্ণপাৎ করেনি। বর্তমানে এখানে ওরুসের নামে প্রকাশ্যে অশ্লিলতা ও যাত্রাপালার মতো উত্তাল নৃত্য শুরু করেছে তারা। আর এই ওরুসকে কেন্দ্র করে এখানে খোলামেলা মাদক সেবন, জোয়ার আসরসহ মাঝরাতে অসামাজিক কার্যকলাপ শুরু হয়।
বিগত দিনে এই বিষয়গুলোকে কেন্দ্র করে নানা ধরনের সংঘাতেরও সৃষ্টি হয়েছে। বর্তমানে পবিত্র সাবান মাস চলছে, যা ইসলাম ধর্মালম্বীদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মাস ও শবে-বরাতের মতো একটি মহিমান্বিত রাত আগত। এরপরও আগামী ১০ ও ১১ মার্চ ওই স্থানে ওরুসের জন্য বিভিন্ন জায়গায় পোস্টার-লিফলেট দিয়ে প্রচার শুরু করেছে ৩-৪ জন লোক। বিষয়টি নিয়ে দু’টি ওয়ার্ডের ১১ টি পঞ্চায়েতের লোকজন বিব্রতকর অবস্থায় আছেন। এদিকে মঙ্গলবার বিকালে জয়চন্ডী ইউনিয়ন আল-ইসলাহ’র পক্ষ থেকে ওরুস বন্ধের দাবী জানিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে পৃথক একটি আবেদন করা হয়েছে।
স্থানীয় লোকজন জানান, এই বাঘের টিলায় কোন ওলি-আউলিয়াতো দুরের কথা, কোন কবরই নেই। আশপাশের ২-৩ জন লোক নিজেদের পকেট ভরার জন্য ওরুসের নামে এমন বেহায়াপনা কাজ শুরু করেছে। অথচ এই বাঘের টিলার পাশেই হযরত বিবি মাই (র:) মাজার এবং অত্র এলাকার সবচেয়ে বৃহৎ কবরস্থান রয়েছে। ওরুসের সময় আগত লোকজন রাতের বেলায় মাদক সেবন করে যত্রতত্র মল-মূত্র ত্যাগ করে এবং অসামাজিক কার্যকলাপে লিপ্ত হয়ে বিবি মাই (র:) মাজার ও কবরস্থানের পবিত্রতা বিনষ্ট করে। এরকম অসামাজিক আয়োজন ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের উপর প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে আঘাত হানে। সম্প্রতি এলাকায় গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে, এইবার ওরুসের আয়োজন করা হলে তাতে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হবে। যা বড় ধরণের সংঘাতে রূপ নিতে পারে। এ নিয়ে এলাকার লোকজন চরম আতঙ্কের মধ্যে আছেন।
এ বিষয়ে জয়চন্ডী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবদুর রব মাহাবুব জানান, বিজয়াবাজার সংলগ্ন মাঠে ওরুস বন্ধের জন্য ৭ ও ৮ নং ওয়ার্ডের ১১ টি পঞ্চায়েতের সভাপতি-সম্পাদকের শীল-স্বাক্ষর সম্বলিত একটি আবেদনপত্র আমার কাছেও এসেছে। এছাড়া ৯, ৪ ও ৬ নং ওয়ার্ড থেকেও অনেক লোকজন ওরুস বন্ধের জন্য আমাকে র্মৌখিকভাবে জানিয়েছেন। ওরুসকে কেন্দ্র করে এলাকায় এখন দুটি পক্ষ যে মুখোমুখি, তা স্পষ্ট বুঝা যাচ্ছে। যেহেতু আবেদনটি উপজেলা নির্বাহী অফিসার মহোদয় বরাবরে করা হয়েছে। সেক্ষেত্রে তিনি তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। তবে, আমরাও এলাকায় কোন সংঘাত চাইনা।
এব্যাপারে কুলাউড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: মাহমুদুর রহমান খোন্দকার জানান, স্থানীয় পঞ্চায়েত কমিটি এবং আল-ইসলাহ সংগঠনের অভিযোগের কপি পেয়েছি। বিষয়টি সুক্ষ্ম তদন্তের জন্য থানার অফিসার ইনচার্জকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। পুলিশ সদস্যরা খোঁজ-খবর নিচ্ছেন। আইনশৃঙ্খলা অবনতি হওয়া বা কোন সংঘাতের আভাস পাওয়া গেলে ওরুস বন্ধের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Posted ৪:২১ অপরাহ্ণ | বুধবার, ০১ মার্চ ২০২৩
সংবাদমেইল | Nazmul Islam
.
.