
বিশেষ প্রতিনিধি,সংবাদমেইল২৪.কম | মঙ্গলবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০১৯ | প্রিন্ট
কুলাউড়ার কৃতি সন্তান ভাষাসৈনিক রওশন আরা বাচ্চু আর নেই (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্ন ইলাইহি রাজিউন)।
মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) ভোর রাতে রাজধানীর অ্যাপোলো হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান বলে জানান তার মেয়ে তাহমিদা বাচ্চু।
তিনি বলেন, মা বেশ কদিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন। অ্যাপোলো হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। ভোর সাড়ে ৩টার দিকে তিনি মারা যান।
বাংলা একাডেমির জনসংযোগ কর্মকর্তা পিয়াস মজিদ জানান, সবার শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য রওশন আরা বাচ্চুর মরদেহ বিকাল সাড়ে ৩টায় বাংলা একাডেমিতে নিয়ে যাওয়া হবে।
রওশন আরা ১৯৩২ সালের ১৭ ডিসেম্বর সিলেটের মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়ার উছলাপাড়া গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন। তার বাবার নাম এ এম আরেফ আলী এবং মায়ের নাম মনিরুন্নেসা খাতুন।
রওশন আরা বাচ্চু ১৯৪৭ সালে পিরোজপুর গার্লস স্কুল থেকে এসএসসি পাস করেন। এরপর বরিশাল ব্রজমোহন কলেজ থেকে ১৯৪৮ সালে এইচএসসি পাস করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৫৩ সালে দর্শনে অনার্স করেন। এরপর ১৯৬৫ সালে বি এড এবং ১৯৭৪ সালে ইতিহাসে এম এ করেন।
তিনি সলিমুল্লাহ মুসলিম হল এবং উইম্যান স্টুডেন্টস রেসিডেন্স এর সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি গণতান্ত্রিক প্রোগ্রেসিভ ফ্রন্ট এর সাথে ছাত্র রাজনীতিতে অংশগ্রহণ করেন।
তিনি বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সাথে যুক্ত ছিলেন যেমনঃ ঢাকার আনন্দময়ী স্কুল,লিটন অ্যাঞ্জেলস,আজিমপুর গার্লস স্কুল (খন্ডকালীন),নজরুল একাডেমি,কাকলি হাই স্কুল এবং পরে আলেমা একাডেমিতে। সবশেষে ২০০০ সালে বিএড কলেজে অধ্যাপক হিসেবে অবসর গ্রহণ করেন।
উল্লেখ্য, ১৯৫২ সালের বাংলা ভাষা আন্দোলনের সময় রওশন আরা বাচ্চু ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী। ২১ ফেব্রুয়ারিতে যে সকল ছাত্র নেতারা ১৪৪ ধারা ভাঙ্গার পক্ষে ছিলেন তিনি তাদের মধ্যে অন্যতম।
তিনি জনমত সমর্থনের জন্যও ব্যাপক চেষ্টা করেন। তার অনুপ্রেরনায় ইডেন মহিলা কলেজ এবং বাংলাবাজার বালিকা বিদ্যালয় এর ছাত্রীদের সংগঠিত করে আমতলার সমাবেশ স্থলে নিয়ে আসেন।
এখান থেকেই ছাত্রনেতারা ১৪৪ ধারা ভঙ্গের ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত নেন। তারা ব্যারিকেড টপকিয়ে মিছিল নিয়ে এগুনোর চেষ্টা করেন। কিন্তু পুলিশের বাধার মুখে ব্যারিকেড টপকানো বেশ কঠিন ছিলো।
রওশন আরা বাচ্চু তার দলের সবাইকে নিয়ে পুলিশের তৈরি ব্যারিকেড ভেঙ্গে ফেলেন। এরপর পুলিশ লাঠিচার্জ শুরু করে দেয়। এতে নিহত ও আহত হন অনেকে। রওশন আরা বাচ্চুও ছিলেন এমন আহতদের একজন।
Posted ৬:০৮ অপরাহ্ণ | মঙ্গলবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০১৯
সংবাদমেইল | Nazmul Islam
.
.