
অনলাইন ডেস্ক : | রবিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২১ | প্রিন্ট
বিশ্ব জুড়ে করোনাভাইরাসের নতুন ধরন বি.১.১.৫২৯ নিয়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। শুক্রবার (২৬ নভেম্বর) বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইও) তরফে এই নতুন ভ্যারিয়েন্টের নাম দেওয়া হয়েছে ওমিক্রন। একইসঙ্গে এটিকে উদ্বেগের কারণ হিসাবেও চিহ্নিত করা হয়েছে।
গবেষক ও বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, এই নতুন ধরনের স্পাইক প্রোটিন কমপক্ষে ৩০ থেকে ৫০ বার অভিযোজন বা মিউটেশন হওয়ায়, এটি অতি সংক্রামক ভ্যারিয়েন্ট হতে পারে। নতুন ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত হলে সংক্রমণও ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে। ডব্লিউএইও জানায়, কয়েক সপ্তাহ সময় লাগবে নতুন শনাক্ত হওয়া ধরনটি নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালাতে। এর সংক্রমণের ক্ষমতা এবং আক্রান্ত ব্যক্তির শারীরিক জটিলতা সৃষ্টির ক্ষেত্রে কোনো পরিবর্তন এনেছে কি-না তা এই সময়ের মধ্যে খতিয়ে দেখা হবে। পাশাপাশি করোনার প্রচলিত চিকিৎসা ও টিকার ওপর কোনো প্রভাব আসবে কি-না সেটাও জানার চেষ্টা করা হবে।
এদিকে, ওমিক্রন শনাক্তের পর বিশ্বের বিভিন্ন দেশ নতুন করে ভ্রমণে কড়াকড়ি আরোপ করেছে সরকারগুলো। ইতোমধ্যে আফ্রিকার দক্ষিণাঞ্চলের কয়েকটি দেশের ওপর ফ্লাইট চলাচলে জরুরিভিত্তিতে নিষেধাজ্ঞা এনেছে যুক্তরাজ্যসহ ইউরোপিয় ইউনিয়নের দেশগুলো। একই ধরনের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা।
চলতি সপ্তাহেই দক্ষিণ আফ্রিকায় বি.১.১৫২৯ বা ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের খোঁজ মেলে। এরপরে তা হংকং, ইজরায়েল ও বেলজিয়ামেও করোনা আক্রান্তদের শরীরে পাওয়া যায়। নতুন ভ্যারিয়েন্টটির স্পাইক প্রোটিনে এতবার অভিযোজন হওয়ায়, তা বাকি ভ্যারিয়েন্টের তুলনায় আরও সংক্রামক ও প্রাণঘাতী হয়ে উঠেছে কিনা, তা পরীক্ষা করে দেখছেন গবেষকরা।
নিউইয়র্কে জরুরি অবস্থা
করোনাভাইরাস সংক্রমণ বেড়ে যাওয়া এবং নতুন ধরন ওমিক্রন নিয়ে উদ্বেগের জেরে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন নিউইয়র্কের গভর্নর। স্থানীয় সময় ২৬ নভেম্বর শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়।
নিউইয়র্কের গভর্নর ক্যাথি হোছুল বলেছেন, এখনো করোনার উদ্বেগজনক ধরন ওমিক্রন নিউইয়র্কে শনাক্ত হয়নি। তবে তিনি স্বাস্থ্য বিভাগকে হাসপাতালের জরুরি প্রয়োজন নয় এমন এবং কম জরুরি পদ্ধতিগুলো সীমিত করতে একটি নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। স্বল্প সময়ের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ জিনিসগুলো সরবরাহ করার বিষয়ও থাকছে তাতে।
জানা গেছে, গভর্নরের আদেশ কার্যকর হবে ৩ ডিসেম্বর থেকে এবং তা ১৫ জানুয়ারি ২০২২ পর্যন্ত কার্যকর থাকবে।
যুক্তরাজ্যে ঢুকলেই পিসিআর টেস্ট
যুক্তরাজ্যে দুই ব্যক্তির শরীরে ওমিক্রম ধরন সনাক্ত হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী শনিবার (২৭ নভেম্বর) ঘোষণা করেছেন, সেদেশে প্রবেশকারী সব ভ্রমণকারীকে তাদের আগমনের পরে দ্বিতীয় দিনের শেষে পিসিআর পরীক্ষা করতে হবে। নেতিবাচক পরীক্ষার ফলাফল না পাওয়া পর্যন্ত তাদের স্বেচ্ছায় বিচ্ছিন্ন থাকতে হবে।
শনিবার স্থানীয় সময় বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে বরিস জনসন জানান, দোকানপাট ও গণপরিবহনে মাস্ক পড়ার বিধি কঠোর করা হবে। এছাড়া তিনি বলেন, ‘নতুন ধরনের বিরুদ্ধে প্রচলিত টিকা কতটা কার্যকর হবে তা আমরা জানি না। তবে তা যে অন্তত কিছু সুরক্ষা দেবে তা বিশ্বাস করার যথেষ্ট কারণ আছে।’
ব্রিটিশ সরকারের জরুরি পরিস্থিতি বিষয়ক উপদেষ্টা গ্রুপ (এসএজিই) এর সদস্য ক্যালাম সেম্পলও বলেছেন, ‘এটা কোন বিপর্যয় নয়। প্রদত্ত টিকা গুরুতর অসুস্থতা থেকে কিছু সুরক্ষা দেওয়ার কথা।’
এর আগে যুক্তরাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী সাজিদ জাভিদ জানান, দেশটিতে দুজনের শরীরে করোনার নতুন ধরন ওমিক্রন পাওয়া গিয়েছে। উভয়েই আফ্রিকা মহাদেশের দক্ষিণাঞ্চলে গিয়েছিলেন।
এদিকে শনিবার দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে দুটি ফ্লাইটে নেদারল্যান্ডের আমস্টারডামে এসে পৌঁছানো ৬১ জনের শরীরে করোনা ভাইরাস পাওয়া গেছে। এদের মধ্যে ওমনিক্রনে সংক্রমিত কিনা ডাচ কর্তৃপক্ষ তা খতিয়ে দেখার উদ্যোগ নেয়।
Posted ৪:৩৭ পূর্বাহ্ণ | রবিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২১
সংবাদমেইল | Nazmul Islam
.
.