শনিবার ২ ডিসেম্বর, ২০২৩ | ১৭ অগ্রহায়ণ, ১৪৩০

এপ্রিলে মহাকাশে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ এর যাত্রা শুরু

সংবাদমেইল২৪ | সোমবার, ০৫ মার্চ ২০১৮ | প্রিন্ট  

এপ্রিলে মহাকাশে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ এর যাত্রা শুরু

অনলাইন ডেস্ক :

এপ্রিলের প্রথম অথবা দ্বিতীয় সপ্তাহে স্বপ্নের মহাকাশে যাত্রা শুরু করবে বাংলাদেশের প্রথম স্যাটেলাইট বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১। ফ্লোরিডার ক্যাপ ক্যানাভেরালের স্পেস এক্স থেকে উৎক্ষেপণ করা হবে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১। স্যাটেলাইটটি মহাকাশে বাংলাদেশের কেনা স্লটে গিয়ে পৌচ্ছতে সময় নেবে ৮ দিন। এর মাত্র ১ মাসের মধ্যেই বানিজ্যিকভাবে এর ব্যবহার শুরু করা সম্ভব হবে বলে জানালেন বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ রেগুলেটরি কমিশনের চেয়ারম্যান ড. শাহজাহান মাহমুদ। গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় নিউইয়র্কে বাংলাদেশ কনস্যুলেট অফিসে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান বিটিআরসি চেয়ারম্যান।


মূলত স্যাটেলাইট উৎক্ষেপন নিয়ে দেশে বিদেশে ব্যাপক আয়োজন ও প্রস্তুতি সম্পর্কে সাংবাদিকদের অবহিত করার জন্য এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। কনসাল জেনারেল শামীম আহসানের সঞ্চালনায় শাহজাহান মাহমুদ বলেন, তথ্য, প্রযুক্তি আর বিজ্ঞানে বাংলাদেশ হবে আধুনিক এক রাষ্ট্র ব্যবস্থার মডেল এই স্বপ্ন দেখেছিলেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। এর আলোকে বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার যে ঘোষনা দিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের মাধ্যমে তা বহুগুণ এগিয়ে যাবে। শাহজাহান মাহমুদ জানান, এর মাধ্যমে বাংলাদেশের টিভি চ্যানেলে, ইন্টারনেট সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান, ভি স্যাট ও এ জাতীয় প্রতিষ্ঠান বিদেশী স্যাটেলাইট ব্যবহার করছে। এখন থেকে তারা বাংলাদেশের স্যাটেলাইট ব্যবহার করেই এ সেবা দিতে পারবেন। ফলে টিভি চ্যানেলগুলো স্যাটেলাইট ভাড়া বাবদ বছরে ১২৫ কোটি টাকা ব্যয় করেন। সে টাকা এখন থেকে দেশেই থেকে যাবে। ইন্টারনেট বা ভিস্যাট সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানকেও বিদেশে টাকা খরচ করতে হবেনা।

সংবাদ সম্মেলনে বিটিআরসির চেয়ারম্যান ছাড়াও যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন, জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি মাসুদ বিন মোমেন, বাংলাদেশ দূতাবাসের প্রেস মিনিষ্টার শামীম আহমেদ, বিটিআরসির সচিব মোঃ সারোয়ার আলম, নিউইয়র্কে বাংলাদেশের কনসাল জেনারেল শামীম আহসান এনডিসি, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট প্রকল্পের পরামর্শক শফিক আহমেদ চৌধুরী ছাড়াও দূতাবাস, জাতিসংঘ মিশন ও কনস্যুলেট এর কর্মকতারা উপস্থিত ছিলেন।অনুষ্ঠানের শুরুতেই বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট নিয়ে নির্মিত একটি ডকুমেন্টারি প্রদর্শন করা হয়। এরপর এটির তথ্য উপাত্ত প্রজেক্টশনের মাধ্যমে তুলে ধরেন বিটিআরসির চেয়ারম্যান।


পরে তিনি ও প্রকল্পের পরামর্শ দাতা প্রতিষ্ঠানের প্রধান সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন।
শাহজাহান মাহমুদ জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশ থেকে টেলিকনফারেন্সের মাধ্যমে উৎক্ষেপন পর্যবেক্ষণ করবেন। রাজধানী ঢাকা ছাড়াও প্রতিটি জেলা উপজেলায় জমকালো আয়োজন করা হবে। উৎক্ষেপণস্থল থেকে পৃথিবীর সর্বত্র তা সরাসরি সম্প্রচার করা হবে।তিনি বলেন, প্রকল্পটি বাস্তবায়নে মোট খরচ হচ্ছে ২ হাজার ৯৬৭ কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকারি তহবিল থেকে দেওয়া হচ্ছে ১ হাজার ৩১৫ কোটি টাকা। আর ঋণ হিসেবে বহুজাতিক ব্যাংক এইচএসবিসি দিচ্ছে বাকি ১ হাজার ৬৫২ কোটি টাকা। তিনি বলেন, বাংলাদেশে কোন প্রকল্পে কাজ শেষে কোন টাকা বেচে গেছে কিনা আমরা জানিনা। কিন্তু আমরা এ প্রকল্প থেকে ২০০ কোটি টাকা বাচিয়ে সরকারকে ফেরৎ দিয়েছি। তিনি বলেন, আমরা ধারনা করছি আমরা এ প্রকল্পে যে টাকা খরচ করছি দেশী বিদেশী প্রতিষ্ঠান থেকে ৭ বছরে সে টাকা আমরা তুলে ফেলতে পারবো। শাহজাহান মাহমুদ জানান, পুরো বিষয়টা পরিচালনার জন্য স্যাটেলাইট নীতিমালা হচ্ছে। ৩০ দিনের মধ্যে সেটা সরকারের কাছে জমা দেয়া হবে।

সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, দেশের প্রথম স্যাটেলাইট বঙ্গবন্ধু-১-এর মূল অবকাঠামো তৈরির কাজ শেষ হয়েছে। ফ্রান্সের থ্যালেস অ্যালেনিয়া স্পেস নামের একটি মহাকাশ সংস্থা অবকাঠামো তৈরির এই কাজটি করেছে। সেটি এখনো ফ্রান্সে রাখা আছে তারিখ নির্ধারিত হলেই আমরা প্লেনে করে তা যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা নিয়ে যাবো। যে রকেটে এটি উৎক্ষেপন করা হবে তাও নির্মাণ শেষ।


বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট তৈরির পুরো কর্মযজ্ঞটি চলে বিটিআরসির তত্ত্বাবধানে। তিনটি ধাপে নির্মাণকাজ শেষ করা হয়। এগুলো হলো স্যাটেলাইটের মূল কাঠামো তৈরি, স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ ও ভূমি থেকে নিয়ন্ত্রণের জন্য গ্রাউন্ড স্টেশন তৈরি। এর মধ্যেই স্যাটেলাইট তৈরির কাজটি শেষ হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের আরেক মহাকাশ গবেষণা সংস্থা স্পেসএক্সের ‘ফ্যালকন-৯’ রকেটে করে স্যাটেলাইটটি মহাকাশে পাঠানো হবে।

স্যাটেলাইট ওড়ানোর কাজটি বিদেশে হলেও এটি নিয়ন্ত্রণ করা হবে বাংলাদেশ থেকেই। এ জন্য গাজীপুরের জয়দেবপুর ও রাঙামাটির বেতবুনিয়ায় গ্রাউন্ড কন্ট্রোল স্টেশন (ভূমি থেকে নিয়ন্ত্রণব্যবস্থা) তৈরির কাজ চলছে।
বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের মোট ৪০টি ট্রান্সপন্ডার থাকবে। এর মধ্যে ২০টি ট্রান্সপন্ডার বাংলাদেশের ব্যবহারের জন্য রাখা হবে। বাকি ২০টি ট্রান্সপন্ডার বিদেশি কোনো প্রতিষ্ঠানের কাছে বিক্রির জন্য রাখা হবে।

তিনি বলেন, বর্তমান মহাকাশে যে স্যাটেলাইট বিদ্যমান তা ওল্ড। আমরা নতুন প্রযুক্তির স্যাটেলাইট নির্মাণ করেছি। পুরনো স্যাটেলাইটের একটি ট্রান্সপন্ডার ৫টি টিভির জন্য ব্যান্ড উইথ দিতে সংক্ষম। সেখানে আমাদের একটি ট্রান্সপন্ডারে ২২টি টেলিভিশন এই সুবিধা পাবে।

সংবাদমেইল/জেএইচজে

Facebook Comments Box

Comments

comments

advertisement

Posted ১২:৩৩ অপরাহ্ণ | সোমবার, ০৫ মার্চ ২০১৮

সংবাদমেইল |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

এ বিভাগের আরও খবর

সম্পাদক ও প্রকাশক : মো. মানজুরুল হক

নির্বাহী সম্পাদক: মো. নাজমুল ইসলাম

বার্তা সম্পাদক : শরিফ আহমেদ

কার্যালয়
উপজেলা রোড, কুলাউড়া, মেলভীবাজার।
মোবাইল: ০১৭১৩৮০৫৭১৯
ই-মেইল: sangbadmail2021@gmail.com

sangbadmail@2016 কপিরাইটের সকল স্বত্ব সংরক্ষিত