শুক্রবার ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ | ৭ আশ্বিন, ১৪৩০

‘ইতিহাস বিকৃতিকারীরা যেন ক্ষমতায় আসতে না পারে’

সংবাদমেইল ডেস্ক | শনিবার, ২৫ নভেম্বর ২০১৭ | প্রিন্ট  

‘ইতিহাস বিকৃতিকারীরা যেন ক্ষমতায় আসতে না পারে’

ইতিহাস বিকৃতিকারীদের বিরুদ্ধে দেশবাসীকে জাগ্রত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, বাংলাদেশে রাজকার, আলবদর, আলশামস, খুনি ও ইতিহাস বিকৃতিকারীরা আর যেন ক্ষমতায় আসতে না পারে। আগামীর বাংলাদেশ হবে অর্থনৈতিক মুক্তির ও সমৃদ্ধির বাংলাদেশ।

শনিবার বিকালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ মার্চের ভাষণ ইউনেস্কোর স্বীকৃতি পাওয়া উপলক্ষে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আয়োজিত সমাবেশে তিনি এ আহ্বান জানান।


প্রধানমন্ত্রী বলেন, পঁচাত্তরে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারের হত্যার পর থেকে তার ৭ মার্চের ঐতিহাসিক সেই ভাষণ এদেশের প্রচার নিষিদ্ধ ছিল। দুর্ভাগ্য, প্রজন্মের পর প্রজন্ম সঠিক ইতিহাস জানতে পারে নাই। তারা ইতিহাস মুছে ফেলতে চেয়েছিল। কিন্তু তার জানে না— ইতহাস মুছে ফেলা যায় না।’

বক্তব্যের শুরুতেই প্রধানমন্ত্রী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। এছাড়া পঁচাত্তরে নিহত জাতীয় চার নেতা, মুক্তিযুদ্ধের ৩০ লাখ শহীদ, সম্ভ্রম হারানো দুই লাখ নারীর প্রতিও শ্রদ্ধা জানান প্রধানমন্ত্রী। এছাড়া বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণকে ‘বিশ্ব প্রামাণ্য ঐতিহ্য’ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ায় ইউনেস্কো এবং এর সাবেক মহাসচিবসহ সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান প্রধানমন্ত্রী।


তিনি বলেন, এই জায়গায় দাঁড়িয়ে আমার মনে পড়ছে সেই ১৯৭১ সালের ৭ মার্চের কথা। আমরা এসেছিলাম। বক্তৃতাও শুনেছিলাম। বারবার মনে পড়ে সেই দিনের কথা। এই ময়দানে জাতির পিতা সেই ঐতিহাসিক ভাষণ দিয়েছিলেন, যে ভাষণে তিনি অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দেন। সেই ভাষণেই তিনি বাঙালিকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে গেরিলা যুদ্ধের প্রস্তুতি নিতে বলেছিলেন। তিনি আরও বলেছিলেন, ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তুলতে। এমনকি জাতির পিতা জানতেন এই ভাষণের পর তাকে গ্রেফতার করা হতে পারে। সেজন্য তিনি বলেছিলেন, ‘আমি যদি হুকুম দিবার নাও পারি তোমাদের যার যা কিছু আছে তাই নিয়ে শত্রুর মোকাবেলা করবে।’ তিনি বলেছিলেন, ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।

শেখ হাসিনা বলেন, ৭ মার্চের ভাষণ স্বাধীনতার মন্ত্রে বাঙালি জাতিকে উদ্বুদ্ধ করেন। বাংলার মানুষের সঙ্গে জাতির পিতার আত্মিক সম্পর্ক এ ভাষণে ফুটে ওঠে। তিনি অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দেন। তিনি গেরিলা যুদ্ধের নির্দেশনা দিয়েছিলেন। এত দূরদর্শিতা, এত দিক-নির্দেশনা পৃথিবীর কোনো ভাষণে পাওয়া যায় না।


তিনি বলেন, আজকে আমরা আনন্দিত। এ ভাষণ আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেয়েছে। ৪৬ বছর আগের এ ভাষণকে স্বীকৃতি দেয়ায় ইউনেস্কো, তার সাবেক পরিচালক, যারা ভোট দিয়েছেন এবং সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানাই।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জাতির পিতা এই ভাষণের মধ্যে দিয়ে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রত্যেকটি ঘরে দুর্গ গড়ে তুলতে বলেছিলেন। এত দূরদর্শিতা, দিক নির্দেশনা কোনও ভাষণে পাওয়া যায় না।’

এই ভাষণের পর থেকে আওয়ামী লীগের যে নির্দেশনা যেত তা বাঙালি অক্ষরে অক্ষরে পালনে করতো উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এরপর থেকেই ইয়াহিয়ার শাসন বাংলাদেশে অচল হয়ে যায়। পাকিস্তানি শাসনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায় মানুষ।’

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন থেকে শাসনতন্ত্র রক্ষাসহ জাতির জীবনের প্রত্যেকটি অর্জনে আওয়ামী লীগ জড়িত। বাংলাদেশকে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র গড়ার লক্ষ্যে জাতির পিতা দিয়েছিলেন ৬ দফা। তিনি এ ছয় দফা দিয়েই বসে ছিলেন না, তিনি এটা নিয়ে সারা বাংলাদেশ সফর করেছিলেন। ফলে তার বিরুদ্ধে পাকিস্তানি সরকার আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা দেয়, তাকে ফাঁসি দেওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু বাঙালিরা তার প্রতিবাদ করেছে। বাংলার ছাত্রসমাজ, বাংলার জনগণ রুখে দাঁড়িয়েছে বারবার।’

সংবাদমেইল/এএস

Facebook Comments Box

Comments

comments

advertisement

Posted ৯:৩৫ অপরাহ্ণ | শনিবার, ২৫ নভেম্বর ২০১৭

সংবাদমেইল |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

এ বিভাগের আরও খবর

সম্পাদক ও প্রকাশক : মো. মানজুরুল হক

নির্বাহী সম্পাদক: মো. নাজমুল ইসলাম

বার্তা সম্পাদক : শরিফ আহমেদ

কার্যালয়
উপজেলা রোড, কুলাউড়া, মেলভীবাজার।
মোবাইল: ০১৭১৩৮০৫৭১৯
ই-মেইল: sangbadmail2021@gmail.com

sangbadmail@2016 কপিরাইটের সকল স্বত্ব সংরক্ষিত