মঙ্গলবার ১৯ মার্চ, ২০২৪ | ৫ চৈত্র, ১৪৩০

৬ ডিসেম্বর শ্রীমঙ্গল মুক্ত দিবস

শ্রীমঙ্গল প্রতিনিধি,সংবাদমেইল২৪.কম | শুক্রবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০১৯ | প্রিন্ট  

৬ ডিসেম্বর শ্রীমঙ্গল মুক্ত দিবস

শ্রীমঙ্গল উপজেলা মুক্তদিবস উপলক্ষে শোভাযাত্রা ও আলোচনা সভা অনুষ্টিত হয়েছে। এই উপজেলা।

দিবসটি উপলক্ষে বৃহস্পতিবার (৬ ডিসেম্বর) শ্রীমঙ্গল উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, উপজেলা প্রশাসন, শ্রীমঙ্গল উপজেলা প্রেসক্লাব, শ্রীমঙ্গল উপজেলা আওয়ামীলীগ,শ্রীমঙ্গল থানা প্রশাসন, কালীঘাট ইউনিয়ন পরিষদ ও সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম মুক্তিযুদ্ধ-৭১ এর উদ্যোগে সকাল সাড়ে ১০টায় শ্রীমঙ্গল শহরে বের হয় শোভাযাত্রা। শোভাযাত্রা শেষে ভাড়াউড়া বধ্যভুমিতে শহীদ স্মরণে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করা হয়।


এ সময় শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী অফিসার নজরুল ইসলামের সভাপতিত্বে সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন শ্রীমঙ্গল উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রনধীর কুমার দেব।

পরে বিজিবি ক্যাম্প সংলগ্ন সাধুবাবারস্থলি বধ্যভূমি ৭১ শহীদদের স্মরণে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করেন মুক্তিযোদ্ধারা। সন্ধ্যায় বিভিন্ন সংগঠনের উদ্যোগে আলোক প্রজ্জ্বলন ও জাগরণী গানের আয়োজন করা হয়েছে।


১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর দিনে মুক্ত হয় চা-বাগান ও পাহাড়ঘেরা শ্রীমঙ্গল উপজেলা যেভাবে পাকহানাদর মুক্ত হয়-

৬ ডিসেম্বর মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল উপজেলাটি পাক হানাদার বাহিনীর হাত থেকে মুক্ত হয়েছিল। তবে এর আগে হানাদার বাহিনীর সাথে লড়াই করে শহীদ হয়েছিলেন বেশ কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা।


স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, ১৯৭১ সালের ৩০ এপ্রিলের পর থেকে পাকিস্তান হানাদার বাহিনী ৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত শ্রীমঙ্গলে হত্যা করেছিল অর্ধশতাধিক মুক্তিযোদ্ধাসহ অসংখ্য নারী-পুরুষদের।

১৯৭১ সালের ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণে সূচিত অসহযোগ আন্দোলন শ্রীমঙ্গলে তীব্র রূপ নেয়। অফিস-আদালতসহ শ্রীমঙ্গলের চা শিল্পে সৃষ্টি হয় অচলাবস্থা।

দীর্ঘ ৯ মাস পাক হানাদার বাহিনী দেশব্যাপী গণহত্যা চালিয়েছিল। শ্রীমঙ্গলে ফিনলে টি কোম্পানির ভাড়াউড়া চা বাগান এলাকায় বধ্যভূমিতে ৪৭ জন চা শ্রমিককে একসঙ্গে দাঁড় করিয়ে গুলি ছুঁড়ে হত্যা করেছিল পাক-হানাদার বাহিনী।

ভাড়াউড়া চা বাগানে কলেজ সড়কে নির্মিত শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের স্মৃতিসৌধ আজও তার সাক্ষী বহন করে সগৌরবে দাঁড়িয়ে আছে। এ ছাড়া শ্রীমঙ্গল পৌর শহরের হবিগঞ্জ রোডের ওয়াপদার অফিসের পিছনে একটি ছড়ায় ও বর্তমান বিজিবি সেক্টরের সাধু বাবার বটতলা খ্যাত (বর্তমান নামকরণ বধ্যভূমি-৭১) বেশ কয়েকটি স্থানে পাক বাহিনী গণহত্যা চালিয়েছিল। আর সেখানে নির্মমভাবে হত্যা করা হয় বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ নিকুঞ্জ সেন, সমীর সোম ও অর্জুন দাসসহ বহু বীর সেনানীকে। পাক হানাদার বাহিনীর হাতে শ্রীমঙ্গলে প্রথম শহীদ হয়েছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ মুকিত লস্কর।

এরপর একে একে শহীদ আনিস মিয়া (রিকশাচালক), ছাত্রলীগ নেতা শহীদ মইনউদ্দিন, শহীদ শম্ভু ভূমিজ, শহীদ সমীর সোম, শহীদ আব্দুস শহীদ, শহীদ সুখময় পাল, শহীদ সুদর্শন, শহীদ আলতাফুর রহমান আরও অনেকেই।

এছাড়া পাকবাহিনী পালিয়ে যাওয়ার আগ মুহূর্তে তাদের শেষ নির্যাতনের শিকার হন চা শ্রমিক নেতা ও চা শ্রমিকদের মধ্যে প্রথম গ্র্যাজুয়েট পবন কুমার তাঁতী। পাক-হানাদার বাহিনী পবনকে হত্যা করে ওয়াপদার পাশে ভুরভুরিয়া ছড়ায় তার লাশ ফেলে যায়।

মুক্তিযুদ্ধের এক পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধাদের মরণপণ লড়াই ও ভারতের সীমান্ত থেকে মুক্তি বাহিনী ক্রমশ ক্যাম্প অভিমুখে এগিয়ে আসার খবরে পাক বাহিনী ভীত হয়ে পড়ে। অবস্থার বেগতিক দেখে ৬ ডিসেম্বর ভোরে তারা পালিয়ে মৌলভীবাজারে আশ্রয় নেয়। এবং মুক্ত হয় শ্রীমঙ্গল শহর। উড়ানো হয় স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা।

Facebook Comments Box

Comments

comments

advertisement

Posted ৭:৫৬ অপরাহ্ণ | শুক্রবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০১৯

সংবাদমেইল |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

এ বিভাগের আরও খবর

সম্পাদক ও প্রকাশক : মো. মানজুরুল হক

নির্বাহী সম্পাদক: মো. নাজমুল ইসলাম

বার্তা সম্পাদক : শরিফ আহমেদ

কার্যালয়
উপজেলা রোড, কুলাউড়া, মেলভীবাজার।
মোবাইল: ০১৭১৩৮০৫৭১৯
ই-মেইল: sangbadmail2021@gmail.com

sangbadmail@2016 কপিরাইটের সকল স্বত্ব সংরক্ষিত