আব্দুল বাছিত বাচ্চু | রবিবার, ১৯ নভেম্বর ২০১৭ | প্রিন্ট
সিলেট বিভাগে তৃণমুলে বিএনপিকে জনপ্রিয় করে গেছেন বিশ্ববরেণ্য অর্থনীতিবিদ, দলীয় প্রতিষ্ঠাতাদের অন্যতম প্রয়াত জননেতা জনাব এম সাইফুর রহমান। সিলেটের প্রত্যন্ত এলাকায় ব্যাপক উন্নয়ন প্রকল্প বাস্থবায়ন , পরিচ্ছন্ন লোকদের রাজনীতিতে টেনে আনা, দলীয় সংকীর্ণতার বাইরে থেকে জনগনকে মুল্যায়নের মাধ্যমে তিনি জনগনের মনের মনি কোঠায় অমর হয়ে আছেন। আর এর সুফল ভোগ করছে বিএনপি। যেখানে জাতীয় নির্বাচনে সিলেটে বিএনপি কোনো ফ্যাক্টর ছিলো না, সেখানে আজ হাটবাজার, স্কুল কলেজসহ স্থানীয় সরকারের প্রতিটি স্থরে নির্বাচনে বিএনপি মুল প্রতিদ্বন্দ্বী।
১৯৯১ সালের নির্বাচনে কুলাউড়া আসনের একটি কেন্দ্রে আমি বিএনপি প্রার্থীর পোলিং এজেন্ট ছিলাম।
২৭ ফেব্রুয়ারী অনুষ্ঠিত ওই নির্বাচন ছিলো বাংলাদেশের রাজনীতিতে এক নতুন অভিজ্ঞতা।স্বৈরাচার এরশাদের পতনের পর অস্থায়ী প্রেসিডেন্ট বিচারপতি সাহাবউদ্দিন আহমদের তত্বাবধানে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে একক সংখ্যাগরিষ্ঠ দল হিসেবে বিএনপি সরকার গঠন করে।অথচ গোটা সিলেট বিভাগে দলটির চরম ভরাডুবি ঘটে। সিলেট -১ আসনে খন্দকার আব্দুল মালিক ছাড়া বিএনপির আর কোন প্রার্থী বিজয়ী হতে পারেননি।এমনকি আমাদের মহান নেতা এম সাইফুর রহমান মৌলভীবাজার সদর- রাজনগর ও কমলগঞ্জ-শ্রীমঙ্গল দুটি আসনে মনোনয়ন দিলেও বিজয়ী হতে পারেননি।ওই নির্বাচনে সিলেটের ৪ জেলায় ভোটের সংখ্যায়ও বিএনপির অবস্থান ছিলো পতিত স্বৈরশাসক এরশাদের দল জাতীয় পার্টি এবং আওয়ামীলীগের অনেক পরে।কিন্তু
দুটি আসনে পরাজয়বরণ করলেও দলীয় প্রধান বেগম খালেদাজিয়া এম সাইফুর রহমান স্যারের প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করেন । মন্ত্রীসভায় স্থান দেওয়ার পাশাপাশি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অর্থ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব ন্যস্ত করেন মহান এই নেতার হাতে। আর উনিও দেশের ভংুর অর্থনীতি সুসংগঠিত করার পাশাপাশি সিলেটে বিএনপিকে সংগঠিত করার কাজ শুরু করেন।ছুটে যান সিলেট, সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জের প্রত্যন্ত এলাকায়।এমনকি হাওর এলাকায়। উন্নয়নের পাশাপাশি থানায় থানায় বিএনপির শক্তিশালী ভিত্তি গড়ে তোলেন। বিএনপির এই জনপ্রিয়তা দেখে বিভিন্ন দল ত্যাগ করে অনেকেই বিএনপিতে যোগদান করে।আর চেয়ারম্যান থেকে এমপি মন্ত্রী হওয়ার লোভে দলে ভীড়েণ আরো অনেকে।সিলেট বিভাগে বিএনপি বিশাল এক সংগঠণে পরিণত হয় ।
১৯৯১ সালে যেখানে বিএনপি পেয়েছিলো একটি আসন এর বিপরীতে ৯৬ সালে জনাব এম সাইফুর রহমান নিজে দুটি আসনে বিজয়ী হন। এছাড়া সুনামগঞ্জ সদরে ফজলুল হক আসফিয়া বিজয়ী হওয়া ছাড়াও সিলেট সদরে জনাব এম সাইফুর রহমান, বিশ্বনাথ আসনে ইলিয়াস আলী,ফেঞ্চুগঞ্জ এ শফি চৌধুরী, সুনামগঞ্জ জেলার নজির হসেন,হবিগঞ্জে জাকারিয়া চৌধুরীসহ অনেকেই তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে তুলেন। আর ২০০১ সালে সিলেট জেলায় ৬টি আসনের ৪টিতে বিএনপি, একটিতে শরীক দল এবং অপরটিতে বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী বিজয়ী হন। অনুরুপভাবে মৌললভীবাজার জেলার ৩টি, সুনামগঞ্জ জেলায় ৩টি এবং হবিগঞ্জ জেলায় একটি আসনে বিএনপির দলীয় ও বিদ্রোহী প্রার্থী বিজয়ী হন। আর এসবই ছিলো প্রয়াত মহান নেতা এম সাইফুর রহমানের অবদান। এখন বিএনপি সিলেট বিভাগে একক দল। আমি আজ উনাকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি।
লেখকঃ- সাবেক ছাত্রনেতা ও সাংবাদিক
চেয়ারম্যান, হাজীপুর ইউনিয়ন পরিষদ, কুলাউড়া।
Posted ১২:৫১ পূর্বাহ্ণ | রবিবার, ১৯ নভেম্বর ২০১৭
সংবাদমেইল | Nazmul Islam
.
.