রাজন রশীদ,সংবাদমেইল২৪.কম | সোমবার, ২২ জুলাই ২০১৯ | প্রিন্ট
গত এক মাসে সিলেট-আখাউড়া রেলরুটের কুলাউড়া উপজেলায় তিন বার ট্রেন দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে। এতে হতাহতের ঘটনা দিনদিন বেড়েই চলছে। কর্তৃপক্ষ উদাসীন। ক্ষুব্ধ স্থানীয়রা অনতিবলম্বে এই রেলরুটের সংস্কার দাবি করে কুলাউড়ায় মানববন্ধন করেছেন।
সোমবার (২২ জুলাই) কুলাউড়া ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির আয়োজনে এই মানববন্ধনে বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনসহ সর্বস্তরের মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
সিলেট আখাউড়া রুটের তিন দুর্ঘটনার ধরণ প্রায় একই। এসব দুর্ঘটনার বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ট্রেন লাইনচ্যুত হয়েছে। কারণ হিসেবে রেললাইনের স্লিপার পঁচে যাওয়া, লাইনে পর্যাপ্ত ক্লিপ, নাট-বল্টুর অভাব এবং লাইনম্যানদের নিয়মিত তদারকি, কর্তৃপক্ষের গাফিলতিকে দায়ি করছেন ভুক্তভোগি যাত্রী, মানববন্ধনে উপস্থিত স্থানীয়রা।
গত একমাসে দুর্ঘটনাগুলোর মধ্যে গত ২৩ জুন বরমচালের বড়ছড়া ব্রিজে সিলেট থেকে ছেড়ে আসা উপবন ট্রেনের ভয়াবহ দুর্ঘটনার ক্ষত এখনো মানুষকে কাঁদায়। ওই ঘটনায় ৪ জন যাত্রীর মৃত্যু ও শতাধিক যাত্রী আহত হন। গত ১৯ জুলাই সিলেট থেকে ছেড়ে আসা জয়ন্তিকা এক্সপ্রেসের একটি বগি কুলাউড়া স্টেশনের ৩শ’ ফুট দূরে আউটার সিগন্যালে লাইনচ্যুত হয়। এসময় ড্রাইভার ট্রেনটির ওই বগি টেনে হিঁচড়ে স্টেশন প্লাটফর্মে নিয়ে আসেন। এতে ওই ৩শ’ ফুট লাইনের স্লিপার ও লাইন ত্রুটিপূর্ণ হয়ে পড়ে। পরে ক্ষতিগ্রস্ত ওই বগি রেখে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। পরেরদিন সকালে সিলেট থেকে ছেড়ে আসা কালনী এক্সপ্রেসের বগি একই স্থানে একই কায়দায় লাইনচ্যুত হয়ে পড়লে ড্রাইভার ট্রেন না থামিয়ে স্টেশন প্লাটফর্মে নিয়ে আসেন। পরে ক্ষতিগ্রস্ত বগি কুলাউড়ায় রেখে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায় ট্রেনটি।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ঘন ঘন ওই দুর্ঘটনার কারনে ট্রেনের যাত্রীরা আতংকে ট্রেনে যাত্রা করছেন। অনেকে রেল রুট পরিহার করে সড়ক পথে যাত্রা শুরু করেছেন। অনেকে বলছেন, ভয়ানক কোন দুর্ঘটনার আভাস এই ছোট ছোট দুর্ঘটনা। দ্রুত সংস্কার না করলে বড় ধরণের দুর্ঘটনার শিকার হবে এই রুটের যাত্রীরা। রেলকর্তৃপক্ষ ও সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বক্তারা বলেন, অনতিবিলম্বে রেল রুট সংস্কার করে ট্রেনে যাত্রায় মানুষের পূর্বের আস্থা ফিরিয়ে আনুন।
কুলাউড়া ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আতিকুর রহমান আখইয়ের সঞ্চালণায় ও সমিতির সভাপতি বদরুজ্জামান সজলের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন জাসদ কেন্দ্রিয় নেতা গিয়াস উদ্দিন আহমদ,কুলাউড়া সদর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন আহমদ,ঢাকাস্থ জালালাবাদ এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট জসীম উদ্দিন,কুলাউড়া ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সহ সভাপতি মাও. আব্দুল ওয়াহিদ, সিনিয়র সহ সভাপতি হাজী রফিক মিয়া ফাতু, সাধারণ সম্পাদক মইনুল ইসলাম শামীম, অধ্যক্ষ সিপার উদ্দিন আহমদ, ব্যবসায়ী শেলুর রহমান শেলু,সাংবাদিক এম মছব্বির আলী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মুহিত বাবলু,ব্যবসায়ী সমিতির ক্রীড়া ও সাংস্কুতিক সম্পাদক নাজমুল বারী সোহেল,ব্যবসায়ী এইচ ডি রুবেল,সংগঠক সোহেল আহমদ,শামীম আহমদ,উপজেলা তালমীযের সাধারণ সম্পাদক আফজাল হোসেন সাজু, সংগঠক আশিকুল ইসলাম বাবু, শফিকুল ইসলাম শামীম, সাংবাদিক ইউসুফ আহমদ ইমন,আবু সুফিয়ান আফিয়ান প্রমুখ।
এছাড়াও গত ২৮ জুন ভারিবর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে বড়ছড়া ব্রিজটি ঝুঁকিপূর্ণ থাকায় চট্টগ্রামগামী পাহাড়িকা এক্সপ্রেস ২ ঘণ্টা যাত্রাবিরতি করে। গত ৭ জুলাই ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা জয়ন্তিকা এক্সপ্রেস কুলাউড়ার পালকি ও মনু ব্রিজের মধ্যখানে একটি গরুকে ধাক্কা দিলে ইঞ্জিনের সামনের হুইস পাইপ ভেঙে যায়। পাইপ মেরামতের পর ১ ঘণ্টা পর ট্রেনটি সিলেটের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়।
Posted ৪:১৬ অপরাহ্ণ | সোমবার, ২২ জুলাই ২০১৯
সংবাদমেইল | Nazmul Islam
.
.