মোঃ নাজমুল ইসলামঃ | বুধবার, ২৬ জুন ২০১৯ | প্রিন্ট
রেলমন্ত্রী মো. নুরুল ইসলাম সুজন ২৬ জুন বুধবার কুলাউড়া উপজেলার বরমচালে সংঘটিত ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শণ করেন। পরিদর্শণ শেষে তাৎক্ষণিক এক পথসভায় বক্তব্যে বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে আমরা সরাসরি দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শণে এসেছি। ইতোমধ্যে দুর্ঘটনার কারণ ক্ষতিয়ে দেখতে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
নিহতদের এক লক্ষ টাকা ও আহতদের ১০ হাজার টাকা দেয়ার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকেও সাহায্য দেয়া হবে। এসব দিলে কি হবে? -অর্থ দিয়ে মৃত্যুর পরিপূরণ হয়না।
কোন দূর্ঘটনাই আমাদের কাম্য নয়। রেলের তো নয়ই। এমনকি কোন অস্বাভাবিক মৃত্যুও কামনা করি না। যার পরিবারের লোক মারা যায় কেবল তারাই অনুভব করে, কি হারিয়েছে।
এখানে এসে এবং আপনাদের দেখে বুঝলাম রেলের প্রতি আপনাদের কতটা আগ্রহ। প্রধানমন্ত্রী দেশের মানুষের এই আগ্রহ অনুভব করতে পেরেই দেশের উন্নয়নের পাশাপাশি রেলের উন্নয়ন করেছেন। আলাদা মন্ত্রণালয় করেছেন। ২০১৪ সালের পর রেলের এই দুর্ঘটনাটাই ভয়াবহ।
এই রেলকে নিয়ে অনেক গভীর ষড়যন্ত্র হয়েছে। এই রেলকে কোম্পানীতে পরিণত করা হয়েছে। বিগত সরকারগুলো রেলের কোন উন্নয়ন করেনি। সে সময় রাস্তার অনেক উন্নয়ন হয়েছে। ৮৬ সালের পর রেলের কোন নিয়োগ হয়নি। ৯১ সালে লোকবল ছাটাই করা হয়েছে।
রেলের উন্নয়ন প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, সিলেট আখাউড়া রেললাইন মিটার গেজের পাশাপাশি ব্রডগেজ লাইনে রূপান্তরিত করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এজন্য প্রধানমন্ত্রী ১৬ হাজার কোটি টাকা বরাদ্ধ দিয়েছেন। এই লাইনে সবক’টি রেল ব্রিজ ও ১৬টি আধুনিক রেলস্টেশন নির্মাণ করা হবে।
এছাড়াও তিনি বলেন, রেললাইনের ক্রসিং পয়েন্ট ক্রুটির কারনে এই দূর্ঘটনা হতে পারে। স্থানীয় জনতার দাবীদাওয়ার পেক্ষিতে তিনি বরমচাল স্টেশনে যে কোন দুটি আন্তঃনগর ট্রেন যাত্রা বিরতি হবে ঘোষণা দেন।
সংক্ষিপ্ত পথসভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন পরিবেশ ও বনমন্ত্রী শাহাব উদ্দিন আহমদ বলেন, বৃটিশ আমলের এই রেলপথ সংস্কারও আধুনিকায়নের দাবি জানান। রেলের দুর্ঘটনায় কারণ উদঘাটন করা হবে। এছাড়া সিলেট আখাউড়া রেল সেকশনের লাউয়াছড়ায় ট্রেনে কাটা পড়ে অনেক বন্যপ্রাণী মারা যায়। সেসব বন্য প্রাণী রক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
মৌলভীবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মিসবাউর রহমানের পরিচালনায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক মো. তোফায়েল ইসলাম,জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আজিজুর রহমান ও কুলাউড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম রেনু।
এসময় উপস্থিত ছিলেন,একাদশ সংসদ নির্বাচনে মহাজোটের প্রার্থী সাবেক এমপি এম এম শাহীন,মোঃ আব্দুল মতিন,বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক কাজী রফিকুল আলমসহ জেলা আ.লীগ,স্থানীয় আ.লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
পথসভা শেষে মন্ত্রী ট্রেন দুর্ঘটনায় নিহত কুলাউড়া পৌরসভার বাসিন্দা আব্দুল বারির স্ত্রী মনোয়ারা পারভীনের বাসায় যান। এসময় নিহত মনোয়ারা পারভীনের দুই মেয়ের কান্নায় পরিবেশ ভারি হয়ে উঠে। এসময় মন্ত্রীদ্বয় শোকাহত পরিবারকে সমবেদনা জানান।
পরে দুই মন্ত্রী ট্রেন দূর্ঘটনায় আহতদের দেখতে কুলাউড়া হাসাপাতালে ছুটে যান। সেখান থেকে স্থানীয় ডাক বাংলোয় বিরতি শেষে আন্তঃনগর পারাবত ট্রেন যোগে বিকেল সাড়ে ৪ টায় ঢাকার উদ্দেশ্যে কুলাউড়া ত্যাগ করেন।
Posted ৫:২৬ অপরাহ্ণ | বুধবার, ২৬ জুন ২০১৯
সংবাদমেইল | Nazmul Islam
.
.