স্টাফ রিপোর্টার,সংবাদমেইল২৪.কম | বৃহস্পতিবার, ০৯ জানুয়ারি ২০২০ | প্রিন্ট
কুলাউড়ায় মনু নদীর নীচ থেকে ইজারাদাররা নিয়ম ভেঙ্গে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছেন। ফলে সীমান্তবর্তী শরীফপুর ইউনিয়নের চাতলাপুর চেকপোস্ট-শমশেরনগর সড়কে মনু নদীর ওপর নির্মিত ৬০ মিটার দৈর্ঘ্য এই সেতু হুমকির মুখে পড়েছে।
অবৈধ বালু উত্তোলনকারীদের সরঞ্জাম কয়েক দফায় সহকারী কমিশনার (ভূমি) সরজমিন গিয়ে জব্দ করে এলেও ইজারাদাররা কৌশলে আবারও বালু উত্তোলন করে যাচ্ছেন।
সরেজমিন গিয়ে স্থানীয়দের সাথে আলাপকালে জানা যায়,উপজেলার শরীফপুর ইউনিয়নের সাবেক মেম্বার নসিবুর রহমান নসিম,সমশের নগর সুজা মেমোরিয়াল কলেজের অধ্যক্ষ বাবুল মুর্শেদ,কমলগঞ্জ উপজেলা যুবলীগ নেতা জুনেল তরফদার,পাশ্ববর্তী হাজিপুর ইউনিয়নের সাবেক মেম্বার নূর আহমদ চৌধুরী বুলবুল ও সমশেরনগর বণিক সমিতির সাবেক সভাপতি আব্দুল মালিক গংরা মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে শরীফপুর ইউনিয়নে অবস্থিত মনু নদীর বালু উত্তোলনের জন্য (২০১৯-২০২০) সালের ঘাট শর্ত সাপেক্ষে ইজারা নেন।
নীতিমালায় উল্লেখ ছিলো নদীর উপর নির্মিত ব্রীজের উভয় পাশে প্রায় ০১ কিলোমিটারের মধ্যে কোন বালু উত্তোলন করা যাবেনা। কিন্তু ইজারাদাররা সেই শর্ত ভঙ্গ করে একের পর এক বালু উত্তোলন করে ঘাটে মজুদ করে রাখেন। ব্রীজের অবস্থা আশংকাজনক হয়ে উঠার ভয়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান জনাব আলী ব্রিজের নীচ থেকে বালু উত্তোলন বন্ধের জন্য জেলা প্রশাসন বরাবর লিখিত আবেদন করেন। কিন্তু এর পরেও ইজারাদাররা কৌশলে গোপনে বালু উত্তোলন করে আসছেন।
স্থানীয়দের অভিযোগ পেয়ে কুলাউড়া উপজেলা সহকারী কমিশনার(ভূমি) নাজরাতুন নাঈম গত বছরের অক্টোবর মাসে কয়েকবার অভিযান চালিয়ে বালু উত্তোলনের সরঞ্জাম ধ্বংস করে আসেন এবং ব্রীজের নীচ থেকে ড্রেজার মেশিনগুলো সরিয়ে নেয়ার নির্দেশ দেন।
এদিকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের বন্ধের দাবীতে স্থানীয় শরিফপুরবাসীর ব্যানারে গতমাসে একটি বিশাল মানবন্ধন অনুষ্টিত হয়।
অভিযুক্ত বালু ইজারাদারদের সহযোগী সদস্য শরীফপুর ইউনিয়নের সাবেক মেম্বার নসিবুর রহমান নসিম মুঠোফোনে বলেন,আমরা সরকারী রুল মেনেই বালু উত্তোলন করছি। ভূমি অফিস থেকে যে সীমানা নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে সেখান থেকেই বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। প্রকৃত পক্ষে ব্রীজের নীচ থেকে ইউপি চেয়ারম্যানের লোকজন বালু তুলছে।
স্থানীয় শরিফপুর ইউপি চেয়ারম্যান জনাব আলী বলেন, ব্রীজের নীচ থেকে অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধের দাবী জানিয়ে জেলা প্রশাসক বরাবর একটি লিখিত আবেদন দিয়েছি। এমনিতে বর্ষাকালে ভারতের উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে মনু নদী হয়ে উঠে রাক্ষুষী। তখন এই ব্রীজটি অত্যন্ত ঝুকিপূর্ণ হয়ে উঠে। বর্তমানে যে হারে নদীর নীচ থেকে বালু উত্তোলন হচ্ছে তা একেবারে বন্ধ না হলে আগামী বর্ষা মৌসুমে ব্রীজ নিয়ে শরিফপুরবাসী চরম দূর্ভোগের আশংকায় রয়েছে। এই ব্রীজটি ক্ষতিগ্রস্থ হলে চাতলাপুর চেকপোস্ট হয়ে ভারতের সাথে দেশের যে আমদানী-রফতানী হচ্ছে, তা বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
এব্যাপারে কুলাউড়া উপজেলা সহকারী (ভূমি) নাজরাতুন নাঈম বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, ব্রীজের নীচ থেকে বালু উত্তোলনের খবর পেয়ে সরজমিন গিয়ে তাদের বিভিন্ন সরঞ্জাম কয়েকবার জব্দ করেছি। তাদের ড্রেজার মেশিন সেখান থেকে সরিয়ে নেয়ার নির্দেশ দিয়েছি। বর্তমানে যদি আবার বালু উত্তোলন করতে দেখা যায় তাহলে প্রশাসনিকভাবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
Posted ৫:৫৩ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ০৯ জানুয়ারি ২০২০
সংবাদমেইল | Nazmul Islam
.
.