মঙ্গলবার ১৯ মার্চ, ২০২৪ | ৫ চৈত্র, ১৪৩০

প্রকৃতির পরিবেশ কখনো ধংস করবেনা এটা আদিবাসীদের জাতের ধর্ম- কুলাউড়ায় সুলতানা কামাল

বিশেষ প্রতিনিধি,সংবাদমেইল২৪.কম | বুধবার, ১১ ডিসেম্বর ২০১৯ | প্রিন্ট  

প্রকৃতির পরিবেশ কখনো ধংস করবেনা এটা আদিবাসীদের জাতের ধর্ম- কুলাউড়ায় সুলতানা কামাল

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্ঠা ও বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) সভাপতি,মানবাধিকার কর্মী অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল বলেছেন, আদিবাসী খাসিয়ারা প্রকৃতির পূজারী,যারা গাছ পালার পূজা করে। যাকে আদিবাসিরা ভালবাসে তারা গাছ-পালা প্রকৃতির পরিবেশ কখনো ধংস করবেনা এটা আদিবাসীদের জাতের ধর্ম।

যারা বলে আদিবাসিরা প্রকৃতিকে ধংস করে তারা মিথ্যা বলে এবং অশিক্ষিতের মতো বলে ,আমাদের এই জায়গা থেকে সরে আসতে হবে যার এই কথাগুলো বলে । আদিবাসি খাসিয়ারা যদি এখানে থাকে তাহলে বন জংগল এবং গাছ-পালা প্রকৃতি রক্ষা হবে ।


আমাদের এখন চিন্তা করতে হবে কি করে আদিবাসি মানুষের অধিকার রক্ষা করার ক্ষেত্রে আমরা সবাই মিলে প্রকাশ করতে পারি এবং আমরা আদিবাসিদের সঙ্গী হতে পারি ,আদিবাসিদের অধিকার রক্ষা করা মানেই প্রকৃতিকে রক্ষা করা প্রাণকে রক্ষা করা ও আদিবাসিদের চলাচলের পথ কেউ বন্ধ করতে পারেনা।

সেই পথ যদি কারো মালিকানা না থাকে তবে সেখানে বাঁধা দেবার অধিকার রাখেনা। রাস্তায় চলাচল জনগণের মৌলিক অধিকার। এই অধিকারে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করার কোন ক্ষমতা কারো নেই।


১১ ডিসেম্বর বুধবার দুপুরে মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার ঝিমাই পুঞ্জিতে নাগরিক প্রতিনিধিদল ঝিমাই পুঞ্জির আদিবাসী খাসিদের ভূমি অধিকার ও নিরাপত্তা পরিস্থিতি, যাতায়াত সমস্যা পর্যবেক্ষণ করতে এসে এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি কথাগুলো বলেন।

তিনি আরো বলেন, খাসিয়ারা পাহাড়ের পরিবেশ রক্ষা করছে। দীর্ঘদিন থেকে খাসিয়ারা পাহাড়ে শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করে আসছে। ঝিমাই চা-বাগান কর্তৃক খাসিয়াদের যাতায়াতের রাস্তা ব্যবহারে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি ও উচ্ছেদের পায়তারা রাষ্ট্রের নাগরিক হিসেবে বসবাসে মানবাধিকার লংঘনের শামিল।


বাংলাদেশে ধর্ম,বর্ণ নানা জাতিসত্ত্বার মানুষের বসবাস। তাহলে কেন খাসিদের তাদের মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হবে। তারা শত শত বছর থেকে যেখানে বসবাস করে এটা তাদের ঐতিহ্যগত অধিকার।

বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরাম, আইপিডিএস, কুবরাজ আন্তঃপুঞ্জি উন্নয়ন সংগঠন, বাপা, বেলা, ব্লাস্ট, নিজেরা করি ও এএলআরডি-র যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন ঝিমাই পুঞ্জির মন্ত্রী রানা সুরং।

আন্তঃপুঞ্জি উন্নয়ন সংগঠন (কুবরাজ) সাধারণ সম্পাদক ফ্লোরা বাবলী তালাং এর সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি (অব.) মো. নিজামুল হক, এএলআরডি’র নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক জহুরুল হক শাকিল, সিলেট খ্রিস্ট্রিয় ধর্মপ্রদেশ বিশপ বিজয় এনডি ক্রুজ, এএলআরডি’র উপ-নির্বাহী পরিচালক রওশন জাহান মনি, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন সিলেট জেলার সাধারণ সম্পাদক আব্দুল করিম কিম, মৌলভীবাজার জেলা শাখার আহবায়ক আসম সালেহ সুহেল, হবিগঞ্জ জেলা শাখার সম্পাদক তোফায়েল সুহেল, বাপা’র কেন্দ্রীয় সদস্য ফাদার যোসেফ গোমেজ, আধিবাসী ফোরামের কেন্দ্রীয় সদস্য এন্ডু সালামত,ফুয়াদ আলম, আদিবাসী নেত্রী কুইনস বন সুরাং প্রমুখ।

এসময় জেলার বিভিন্ন উপজেলার পুঞ্জির মন্ত্রীসহ আদিবাসী সম্প্রদায়ের ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।

মতবিনিময় সভায় ঝিমাই পুঞ্জির খাসিয়ারা বিভিন্ন সমস্যার কথা উল্লেখ করে বলেন, আদিকাল থেকে বংশানুক্রমে আমরা পাহাড়ে বসবাস করে আসছি। বাগান কর্তৃপক্ষ আমাদের বলে অবৈধ দখলদার। ঝিমাই চা-বাগানের ভেতর দিয়ে ব্যবহৃত রাস্তায় চলাচল করতে বাগান কর্তৃক বাঁধা প্রদান, মহিলাদের জরুরী প্রসবকালীন সময় রোগী যাতায়াত ও মালামাল পরিবহন করতে আপত্তি প্রদান করা হয়।

আমরা চাই বাগান কর্তৃপক্ষ তাদের নিয়ম মেনে তাদের লিজকৃত জায়গা নিয়ে থাকুক, কিন্তুু আমাদের বসবাসকৃত ভূমিতে তারা কোনরুপ হস্তক্ষেপ করতে পারবে না, আমরা আমাদের মৌলিক অধিকার চাই। পান চাষ করে আমরা জীবিকা নির্বাহ করি। প্রাকৃতিক গাছ কেটে বাগান কতৃপক্ষ চারা রোপণ করছে এটা পরিবেশের জন্য বড় ধরনের হুমকি। পরিবেশ রক্ষায় আদিবাসীরা গুরত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।

Facebook Comments Box

Comments

comments

advertisement

Posted ৯:২৪ অপরাহ্ণ | বুধবার, ১১ ডিসেম্বর ২০১৯

সংবাদমেইল |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

এ বিভাগের আরও খবর

সম্পাদক ও প্রকাশক : মো. মানজুরুল হক

নির্বাহী সম্পাদক: মো. নাজমুল ইসলাম

বার্তা সম্পাদক : শরিফ আহমেদ

কার্যালয়
উপজেলা রোড, কুলাউড়া, মেলভীবাজার।
মোবাইল: ০১৭১৩৮০৫৭১৯
ই-মেইল: sangbadmail2021@gmail.com

sangbadmail@2016 কপিরাইটের সকল স্বত্ব সংরক্ষিত